নন্দন দত্ত, সিউড়ি: শিবরাত্রি উপলক্ষে দেশজুড়েই চলে নানা অনুষ্ঠান। কোথাও মেলা, তো কোথাও বা নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই দিনটি পালন করা হয়। তবে বীরভূমে সিউড়িতে যা হল, তাকে ব্যতিক্রমীই বলা চলে। লোহারপুলে শিব চতুর্দশীতে শিবের বিয়ের তোড়জোড়। শিবকে বর রূপে পেতে আকুল মর্ত্যবাসী। শিবভক্তরাও মহাদেবকে ছাড়তে নারাজ। তাই মন্দির চত্বরেই আয়োজন করা হল বিয়ের। গান্ধর্ব মতে বিয়ে হবে দেবাদিদেব মহাদেবের। বরযাত্রীরাও সেজেগুজে তৈরি।
কেউ সেজেছে শিবের বেশে। কেউ বা নন্দী-ভৃঙ্গী। বিয়ের আগে শিবের সেনারা চলেছেন লোহাপুর বাজার ধরে। বিয়েকে স্মরণীয় করে রাখতে বরযাত্রীর দলে জেলার লোকসংস্কৃতির নানা ছোঁয়া। রাইবেশ, ঘোড়া নাচ, মুখোশ নৃত্য,রণপা – এরকম নানা রূপে দেখা যায় তাদের। তবে এই বরযাত্রীর সংখ্যা নেহাত কম নয়। হাজার চারেক সদস্য তো ছিল শিবের বিয়ের বরযাত্রীর দলে। শিবের বরযাত্রী বরণে ছিলেন লোহাপুরের জগবন্ধু রায়। তিনি জানান, “২০১৫ সাল থেকে এই বরযাত্রীর ঢল বাড়ছে। এদিন শিবের বহু মহিলারা সারাদিন উপোস করে থাকেন। শোভাযাত্রা শেষে নাগেশ্বর মন্দির চত্বরে একত্রিত হয় সকলে। সেখানেই বিয়ে শেষে চলে বরযাত্রীর ভোজ।”
নলহাটির লোহাপুর গ্রামে চার হাজার নিমন্ত্রিত বরযাত্রীর জন্য মেনুও ছিল অভিনব। তাঁদের আপ্যায়ণে ভোজে ছিল খিচুড়ি, আলুর দম, চাটনি, পায়েস ও মিষ্টি। শিবরাত্রির উৎসব ঘিরে চলে কীর্তন, নামগান, ভজন। উল্লেখ্য, মহম্মদবাজার থানার রাইপুর গ্রামে এমন শিবের বিয়ে বর্তমানে প্রায় মিথের পর্যায়ে চলে গিয়েছে। তবে প্রতি বছর গান্ধর্ব মতে বিয়ে চলাকালীন অমাবস্যা পড়ে যায়, তাই রাইপুরে সম্পূর্ণ হয়না শিবের বিয়ে। কিন্তু তিথি মেনে এবছর চতুর্দশী থাকছে দু’দিন। তবে দু’দিন ধরে এই বিয়ের অনুষ্ঠান চলবে কিনা, তা জানা যায়নি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.