এই এলাকাই ফাঁকা করে দিয়েছে রেল। নিজস্ব চিত্র
সুমন করাতি, হুগলি: হাতে আর কয়েক দিন বাকি। সামনেই জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা। এখন অনেকটা সময় পড়াশোনা করার প্রয়োজন। কিন্তু পড়ার তেমন কোনও সুযোগই পাচ্ছে না মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী বছর ষোলোর ওই কিশোরী। কারণ, মাথার উপর তাঁদের এখন কোনও ছাদ নেই। তাঁদের থাকার জায়গা ভেঙে দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। মেয়ে কীভাবে পরীক্ষা দেবে? সেই দুশ্চিন্তাই এখন চেপে বসেছে বাবা-মায়ের মধ্যেও।
ঘটনাটি ঘটেছে, হগলির পাণ্ডুয়া বিধানসভার খন্ন্যান রেলপাড় এলাকার। অভিযোগ, রেলের জমিতেই বহু পরিবার দখল করেছিল। রেলের তরফে ওই জমি খালি করার জন্য নোটিস দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ, ওই নোটিসের কয়েক দিনের মধ্যেই ওই এলাকায় বাসিন্দাদের বাড়িঘর ভেঙে গুঁড়িয়ে দিল রেল। আর সেই ঘটনাতেই এখন অনিশ্চয়তায় ওই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী।
বাড়িঘর ভেঙে দেওয়ার পরেও অনেক পরিবার সেখান থেকে যাননি। ওই ছাত্রীর পরিবারও এই খোলা আকাশের নীচে বসবাস করছেন। দিনের আলোতেই পড়াশোনা করছে ওই ছাত্রী। তার কথায়, “জন্ম থেকেই সে রেলপাড়ের ওই এলাকায় বসবাস করছে। ইচ্ছে ছিল সেখান থেকেই মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার। কিন্তু হঠাৎ করেই রেল কর্তৃপক্ষ এসে একমাত্র থাকার ঘরটুকুও ভেঙে দিয়েছে।” এই মুহূর্তে সে দৈনিক জীবনযুদ্ধে লড়াই করছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ওই ছাত্রী সারদেশ্বরী কন্যা বিদ্যাপীঠে পড়াশোনা করে।
তার বাবার বক্তব্য, “দীর্ঘ সময় ধরে তাঁরা সেখানে থাকছিলেন। দিন কয়েক আগে নোটিস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অন্য কোথাও সরে যাওয়ার সামান্য সময়ও দেওয়া হল না।” গত ১১ তারিখ বুলডোজার দিয়ে ১০০টি ঘর ভেঙে দেওয়া হয়েছে। রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বহুবার তারা নোটিশ দিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে দখল করা জায়গা খালি করার জন্য এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। হুগলি জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায় জানান, রেল অমানবিক কাজ করেছে। পঞ্চায়েত প্রশাসনের কাছে ওই পরিবার যোগাযোগ করলে তাঁদের প্রাথমিকভাবে থাকার ব্যবস্থা করা হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.