শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: বিজয়া দশমীর পরের দিন হাটের মাঠে ছিল মেলা। দশমীর পিঠোপিঠি মহরম। এই পরবে ওই মাঠেই লাঠিখেলা হওয়ার কথা। জোড়া উৎসবের মাঝে পড়ে মেলার ভবিষ্যৎ হয়ে পড়েছিল অনিশ্চিত। মেলা ও মহরমের লাঠিখেলা কীভাবে হবে। এই প্রশ্ন যখন ঘুরছে, তখন সমাধানসূত্র বার করলেন দুর্গাপুজো ও মহরমের উদ্যোক্তারা। মহরম কমিটির সদস্যরা জানালেন রবিবারের বদলে সোমবার হবে লাঠিখেলা। মেলার জন্য এক দিনের জন্য পিছিয়ে গেল মহরমের অনুষ্ঠান। সম্প্রীতির ছবি তুলে ধরে গর্বিত জলপাইগুড়ির বেরুবাড়ি এলাকার বাসিন্দারা।
[অভিজাত বাসিন্দাদের সঙ্গে বসে ভোগ খেতে দেওয়া হল না পরিচারিকাকে]
তাদের সিদ্ধান্ত বুঝিয়ে দিল এই বাংলা সবাইকে নিয়ে চলতে জানে। উৎসবের মানে শুধু মেলা বা পার্বণ নয়, মানিয়ে নেওয়া। যা দেখে স্থানীয় মানিকগঞ্জ থানার ওসি তমাল দাস, বলছেন, খুবই ভাল লাগছে দুই উদ্যোক্তারা নিজেরা বসে এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তারা জানিয়েছেন মেলাও হবে, মহরমের লাঠিখেলাও চলবে। প্রশাসনের তরফ থেকে সবরকম সহযোগিতার কথা বলেছেন ওসি। সেই সহযোগিতার কথা উদ্যোক্তাদের মুখে। তারা বলছেন প্রায় ৬০ বছর ধরে পুজো হয়ে আসছে। এর আগেও এমন ঘটনা হয়েছিল। একবার গায়ে-গায়ে পড়ে গিয়েছিল দুই উৎসব। তখনও পুজোর জন্য মহরমের লাঠিখেলা পিছিয়ে এসেছিল। মোদ্দা কথা, একে অপরের পাশে দাঁড়ানো এই জনপদের পরম্পরা। মহরম বা দশমী বড় কথা নয়, কারও যাতে সমস্যা না হয় সেটাই মাথায় রাখা হয়। পুরনো ফর্মুলায় এবারও মেলে সমাধান। ঠিক হয়, রবিবার দশমীর মেলা ও প্রতিমা নিরঞ্জন হবে৷ হাটের মাঠে দ্বাদশীর দিন হবে মহরমের লাঠিখেলা।
[ছিঃ! এলফিনস্টোন স্টেশনে শ্লীলতাহানির হাত থেকে রেহাই পাননি মৃত্যুমুখীও]
জলপাইগুড়ি-বাংলাদেশ সীমান্তের কাছেই নগর বেরুবাড়ি গ্রামের অবস্থান। হিন্দু ও মুসলমানের একসঙ্গে বসবাস করেন। একে অন্যের সমস্যায় ঝাঁপিয়ে পড়েন। বেরুবাড়ির মতো সম্প্রীতির ছবি জলপাইগুড়ি শহর সংলগ্ন পিলখানা মাঠে। এখানে এবার লাঠিখেলার পুরস্কারের জন্য ১০ হাজার টাকা দেবে দুর্গাপুজো কমিটি। পুজোর খরচ বাঁচিয়ে এই পুরস্কার দেওয়া হবে।