বাবুল হক, মালদহ: এ যেন রাজ্যের ইতিহাস, ভূগোল! প্যান্ডেলে ঢুকলে মনে হতেই পারে কোনও কুইজের আসরে ঢুকে পড়েছেন। হুগলির প্রধান নদীগুলির নাম কি? শৈল শহর বলতে আমরা কাকে জানি? পুজোর মণ্ডপে সাধারণ জ্ঞান বাড়ানোর সুযোগ মালদহের তিতাস সংস্থার পুজোয়।
[মঙ্গলদীপ নিবেদিত ‘সংবাদ প্রতিদিন পুজো পারফেক্ট ২০১৭’: সেরা ১২ পুজোর তালিকা]
কী নেই মণ্ডপে। দার্জিলিংয়ের জগৎ বিখ্যাত চা বাগান। মালদহের আম। প্রথম বই ছাপা হয়েছিল হুগলির শ্রীরামপুরে। সেই তথ্যও রয়েছে। রয়েছে পাহাড়ের কোলে তিস্তা, তোর্সা, জলঢাকার আঁকাবাঁকা পথ। সৌন্দর্য বাড়িয়েছে পাইন, ওক, বার্চ, জারুলও। ওদিকে হুগলি জেলা আবার পাটশিল্পের জন্য বিখ্যাত। কালিম্পং থেকে ঝাড়গ্রাম, হাওড়া, কলকাতা বা নবগঠিত আলিপুরদুয়ার। রাজ্যের ২৩টি জেলার যাবতীয় তথ্যের সমাহার পুজো মণ্ডপেই। বাংলার কবি-সাহিত্যিকদের ছবি, তাদের জন্ম-মৃত্যু তারিখ। কীভাবে তাঁরা বাংলার খ্যাতি ছড়িয়েছেন বিশ্বের দরবারে, সব বর্ণনাই ছড়িয়ে রয়েছে মণ্ডপের কোনায় কোনায়। দেশের প্রবাদপ্রতিম চিত্রশিল্পী ও ক্রীড়াবিদদের তথ্য সম্বলিত ছবিও রয়েছে সেখানে। বাদ যাননি বাংলার মুখ্যমন্ত্রীরাও। স্বাধীনতার পর থেকে যাঁরা মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন, তাদের নাম ও তথ্যও ঠাঁই পেয়েছে পুজো প্যান্ডেলে। হাতের নাগালে রয়েছে তথ্যভাণ্ডার। ইতিহাস কিংবা ভূগোলের পাতা ঘেঁটে যা কিছু জানা যায়, সেগুলি সহজেই মিলছে মালদহের এই পুজো মণ্ডপে। স্বাভাবিকভাবে দর্শনার্থীদের কাছে আলাদা ভাবে নজর কেড়েছে এই পুজো।
[সাবধান! সেলফি তুললে এই মণ্ডপে বাজেয়াপ্ত হবে আপনার মোবাইল]
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে গিয়ে এমন তথ্য ভাণ্ডার দেখে অবাক হয়েছেন খোদ ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষও। জেলাওয়াড়ি তথ্যের পাশাপাশি তুলে ধরা হয়েছে রাজ্য সরকারের ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্পটিকেও। কোন জেলার আয়তন কত? তাও মণ্ডপে ঢোকার আগেই জানতে পারবেন কৌতুহলীরা। মূল গেটে রয়েছে বিশ্ব বাংলার লোগো। প্রত্যেক জেলাই সদর্পে বলছে, ‘আমার ভাষা বাংলা’। ৪৪তম বর্ষে উদ্যোক্তারা ইতিহাস-ভূগোলের কাঁধে ভর করেই জেলা জুড়ে সাড়া ফেলে দিয়েছে। সংস্থার অন্যতম কর্তা সৌম্যকান্তি মজুমদারের কথায়, “বাংলাকে আমরা বিশ্ব-দরবারে তুলে ধরতে চেয়েছি। দর্শনার্থীদের তা মনে ধরেছে।” তিতাসের পুজোয় এসে কচিকাঁচারাও সমৃদ্ধ হয়েছে। বাবা-মায়ের হাত ধরে ঠাকুর দেখতে এসে তারাও সাধারণ জ্ঞানের ভাণ্ডারটা বাড়িয়ে নিয়েছে।
ছবি: হরেন চৌধুরি
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.