বাবুল হক, মালদহ: কে বলে তিনি কালী? গায়ের কালো গড়ন বদলে তিনিই এবার আলোর দিশারি! মা কালীর দেহ থেকেই ঠিকরে আসবে আলোর রোশনাই। কালী প্রতিমায় এমনই চমক আনছে মালদহের চাঁচোলের বিশ্বভারতী সংসদ।
[কালীপুজোয় দুঃস্বপ্নের স্মৃতি ফিরে আসে সাগিরা গ্রামে]
কয়েক লক্ষ কাচের টুকরো দিয়ে সাজানো হচ্ছে শক্তির দেবতাকে। তবে এই কারুকাজের জন্য প্রতিমায় কোনও ডিজিটাল লাইট ব্যবহার করা হচ্ছে না। তারপরও মা কালী আলোর উৎস। কারণ, আলোর প্রতিফলন ঘটিয়েই আলোর কারসাজি দেখাবেন স্বয়ং কালিকা। টুকরো টুকরো কাচ দিয়ে আট ফুট উচ্চতার কালী প্রতিমা তৈরি করছেন শিল্পী বিপ্লব পাল। প্যান্ডেলের মূল গেটটি বিশালাকার রাক্ষসের আদলে করা হচ্ছে। তার মুখ পেরিয়ে পুজো মণ্ডপে ঢুকতে হবে। ভিতরটি গুহার মতো। আলো-ছায়ায় দাঁড়িয়ে শক্তির দেবীকে দর্শন এবং গোটা পরিবেশ উৎসাহীদের প্রশংসা বলে মনে করেছেন পুজোর উদ্যোক্তাদের। দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের শিল্পী বিপ্লববাবু দেড় মাস ধরে চাঁচোলেই পড়ে রয়েছেন। শুধু চমকের টানে নিজের জেলার কাজ ছেড়ে পাশের জেলায় এসেছেন তা কিন্তু নয়। বিপ্লববাবুর কথায়, “এই কাজটি আমার সেরা কাজ। নিখুঁত কাজ করার টানেই চাঁচোলে এসেছি। আমার শিল্পকর্ম এই কালী প্রতিমায় ফুটিয়ে তুলে দর্শণার্থীদের মুগ্ধ করতে পারব বলে আশা রাখছি।”
[ডাকাতের দৃষ্টি ফেরানো ‘মাইতো মা’ কালীকে নিয়ে নানা মিথ সোনামুখিতে]
উত্তর মালদহের চাঁচোলের বাজারপাড়ার বিশ্বভারতী সংসদের কালী পুজোয় ফি বছরই কোনও না কোনও অভিনবত্ব থাকে। এবার ৩৪তম বছরেও কাচের প্রতিমা গড়ে তারা জেলাবাসীর নজর কাড়তে চায় তারা। পুজো কমিটির সম্পাদক রাজেশপ্রসাদ রাম বলেন, “আমাদের ইচ্ছে ছিল গোটা মণ্ডপটাই কাচের মোড়কে তৈরি করব। কিন্তু সাম্প্রতিক বন্যার কারণে বাজেট কাটছাঁট করে আয়োজন কমিয়ে আনতে হয়েছে। চাঁচোলে কখনও কাচের কাজ হয়নি। আমরা সেটাই এবার তুলে ধরছি।” কাচের কালী প্রতিমা তৈরির কথা এলাকায় চাউর হতেই উৎসাহীরা এখন থেকেই বিশ্বভারতী সংসদের পুজো প্যাণ্ডেলের সামনে এসে ভিড় জমাচ্ছেন।