সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘বিশ্ব বাংলা’ লোগো নিয়ে বিতর্কের মধ্যে এই প্রথম মুখ খুলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার বিধানসভায় এই নিয়ে প্রথম বক্তব্য পেশ করেন তিনি। বলেন, ‘কেউ কেউ কুৎসা ছড়াচ্ছে। রাজনৈতিক স্বার্থে কুৎসা। বিশ্ব বাংলা লোগো আমার তৈরি, আমি সরকারকে বিনামূল্যে দিয়েছি। এর জন্য পয়সা নেব, কখনওই ভাবিনি।’
মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দেন, রাজ্য সরকারের নামেই লোগোর রেজিস্ট্রেশন রয়েছে। এই নিয়ে কেন বিতর্ক, প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছেন, এদিন নাম না করে মুকুলকেই বার্তা দিলেন মমতা। গত ১০ নভেম্বর রানি রাসমনি রোডের এক জনসভা থেকে অভিষেককে আক্রমণ করেন মুকুল রায়। জানান, বিশ্ব বাংলা ও জাগো বাংলার মালিকানা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে। তারপরই বিশ্ব বাংলা লোগো নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে ওঠে। যদিও পালটা বিবৃতি দিয়ে তৃণমূলের তরফে তা ভুয়ো বলেই জানানো হয়েছিল।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, ‘এই লোগো আমার স্বপ্ন, স্বপ্নের মূল্য হয় না। এটা কি অপরাধ?’ তাঁর বক্তব্য, ‘এই লোগো সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সরকারকে দেওয়া হয়েছে। সরকার যতদিন চাইবে এই লোগো ব্যবহার করবে। সরকার যদি কখনও এই লোগো ব্যবহার না করতে চায়, তাহলে যেন এই লোগো আমার কাছে দিরে আসে’। মুখ্যমন্ত্রী জানান, ২০১৩ সালে এই লোগো তিনি তৈরি করেন। ২০১৪ সালে এই লোগো সরকারের নামে রেজিস্ট্রি করা হয়।
সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া মুকুল রায় আক্রমণ শানান তাঁর প্রাক্তন দলের বিরুদ্ধে। নতুন দলে যোগ দেওয়ার পর থেকেই একটি ফাইল দেখাচ্ছিলেন মুকুল। ধর্মতলায় সেই ফাইল খুলেই মমতা সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। তাঁর অভিযোগ, অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের স্পনসর হিসেবে দেখা গিয়েছে বিশ্ব বাংলার নাম। কিন্তু এই বিশ্ব বাংলার মালিক পশ্চিমবঙ্গ সরকার নয়, তা তৃণমূল সাংসদ তথা মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংস্থা। শাসকদলের কর্মীরা তো দূরের কথা, অনেক নেতারাও এ কথা জানেন না বলে দাবি করেন তিনি। তৃণমূলের অভ্যন্তরে পরিবারতন্ত্র নিয়ে যে অভিযোগ তিনি তুলছিলেন, তাঁরই স্বপক্ষে যুক্তি দেখাতে এই অভিযোগ মুকুলের।
তবে ব্র্যান্ড ‘বিশ্ব বাংলা’ যে বাংলারই, কারও ব্যক্তি মালিকানাধীন নয়, সে কথা আগেই স্পষ্ট করেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব অত্রি ভট্টাচার্য। সম্মানহানির অভিযোগে মুকুলের বিরুদ্ধে আইনি পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নেন অভিষেকও। মুকুলকে আইনি নোটিস ধরানো হয়। নোটিসে উল্লেখ করা হয়, ‘তৃণমূল এবং অভিষেকের সম্মানহানির জন্যই এই সমস্ত অভিযোগ আনা হয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলন করে ক্ষমা চাওয়ার শর্ত দেওয়া হয় মুকুলকে। নাহলে তাঁর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করার কথাও উল্লেখ করা হয়েছিল নোটিসে। এরপরই প্রকাশ্যে এ নিয়ে মুকুলকে কোনও মন্তব্য না করার নির্দেশ দিয়েছিল আলিপুরদুয়ার আদালত। কিন্তু তা কানে তোলেননি তিনি। সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই নেই। এমনকী দ্বিতীয়বারও সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি অভিষেককে আক্রমণ করেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.