রাজকুমার, আলিপুরদুয়ার: ফের গণপিটুনিতে রাজ্যে মৃত্যু হল এক যুবকের৷ আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটার ছেলেধরা সন্দেহে এক যুবককে ধরে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে জনা কয়েক ব্যক্তির বিরুদ্ধে৷ এরপর তাকে উদ্ধার করে বীরপাড়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়৷
[আরও পড়ুন : উলটপুরাণ! গণপিটুনির হাত থেকে যুবককে বাঁচলেন স্থানীয়রাই]
রবিবার প্রায় মধ্যরাতে আলিপুরদুয়ার শহরের তাসাটি চা বাগানে এক যুবককে ঘোরাফেরা করতে দেখে ছেলেধরা বলে সন্দেহ হয়৷ তারা যুবকটিকে ধরে বেধড়ক মারধর করে, এমনকী ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়৷ খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উন্মত্ত জনতাকে শান্ত করার চেষ্টা করে৷ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ শূন্যে গুলি চালায় বলে অভিযোগ৷ এরপর তাঁদের হাত থেকে ওই যুবককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়৷ বীরপাড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন৷ জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠি জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে, দোষ প্রমাণিত হলে কড়া শাস্তি হবে তাঁদের৷ ইতিমধ্যেই ১৭ জন অভিযুক্তদের আটক করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর৷
তবে একই দিন উলটো ছবিও দেখেছে আলিপুরদুয়ার৷ রবিবার সকালে কালচিনির কালকূট বসতিতে এক অচেনা ব্যক্তিকে ঘুরতে দেখে সন্দেহ হয় স্থানীয় বাসিন্দারা। ওই ব্যক্তি আবার বিশেষভাবে সক্ষম, কথা বলতে পারেন না। তাতে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে। পুলিশ জানিয়েছে, কালকূট বসতিতে ওই ব্যক্তিকে আটক করে রাখা হয়। তবে গণপিটুনি না দিয়ে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিশকে গিয়ে ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে। কালচিনি থানার ও সি অভিষেক ভট্টাচার্য্য বলেন, “ উদ্ধার হওয়া ব্যাক্তি কথা বলতে পারেন না। তাই নাম-পরিচয় এখনও জানা যায়নি। তবে এলাকার মানুষেরা সচেতন হয়েছেন।’
[আরও পড়ুন :দু’মাস পর ধরা পড়ল গব্বর, স্বস্তিতে জোরজোনাকি গ্রামের মানুষ]
তার আগের দিনও এক ব্যক্তিকে গণপিটুনির হাত থেকে রক্ষা করেন দমনপাড়া এলাকার কয়েকজন যুবক। জানা গিয়েছে, রাতে ছেলেধরা সন্দেহে যখন ওই যুবককে ধরে মারধর করতে শুরু করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা, তখন এলাকার কয়েকজন যুবক রুখে দাঁড়ান। আক্রান্তকে ক্লাব উদ্ধার করে স্থানীয় একটি স্কুলে নিয়ে গিয়ে খবর দেওয়া হয় থানায়। ওই যুবককে উদ্ধার করে থানা নিয়ে চলে যায়। জানা গিয়েছে, ওই যুবকের বাড়ি কালচিনিতে। পথ ভুলে তিনি আলিপুরদুয়ারের দমনপুরে চলে এসেছিলেন। আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠি বলেন, ‘ মানুষ সচেতন হয়েছেন, এটা দেখে ভাল লাগছে। খুব তাড়াতাড়ি গণপিটুনির সমস্যা মিটে যাবে বলে আশা করছি। আমরা লাগাতার প্রচার চালাচ্ছি।’ কিন্তু ওই একই দিন রাতে তাসাটি চা বাগানের ঘটনা ফের জনসচেতনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল৷