ধীমান রায়, কাটোয়া: গাঁয়েগঞ্জে সাপের উপদ্রবে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু, একই মাঠে চাষের কাজ করতে গিয়ে যে সাপের ছোবল খেয়েছেন বেশ কয়েকজন! আতঙ্ক গ্রাস করেছে পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের বড়বেলুন গ্রামের বাসিন্দাদের। তাঁদের দাবি, এক সময়ে ওই মাঠে মনসা পুজো হত। হঠাৎ করে পুজো বন্ধ হয়ে যায়। দেবী মনসার কোপেই এমন অঘটন ঘটছে। সাপের উপদ্রব থেকে বাঁচতে শুক্রবার ঘটা করে অকাল মনসা পুজো করলেন ভাতারের বড়বেলুন গ্রামের বাসিন্দারা।
পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের বড়বেলুন গ্রামের বেশিরভাগ বাসিন্দাই কৃষক। গ্রামের উত্তরমাঠ এলাকায় বিঘের পর বিঘে ধান জমি। সেই জমিতেই চাষ আবাদ করেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের দাবি, গত মাসে উত্তরমাঠের ধান জমিতে চাষের কাজ করতে গিয়েছিলেন গ্রামের এক যুবক। সাপের কামড়ে মারা যান তিনি। পরে ওই একই মাঠে আরও দু’জনকে বিষধর সাপ ছোবল মেরেছে। চিকিৎসা চলছে দু’জনেরই। বস্তুত, গত কয়েক বছরে যাঁরা উত্তর মাঠে জমিতে কাজ করতে গিয়েছেন, তাঁদের বেশ কয়েকজনকে সাপে কামড়েছে। দু’জন আবার মারাও গিয়েছেন। আতঙ্কে এখন উত্তরমাঠে যেতেই চাইছেন না বড়বেলুন গ্রামের বাসিন্দারা।
বড়বেলুন গ্রামের বাসিন্দার জানিয়েছেন, উত্তরমাঠের সুরিপুকুরের পাড়ে একসময়ে মনসা পুজো হত। হঠাৎ করে পুজো বন্ধ হয়ে যায়। তাও প্রায় আঠাশ বছর হতে চলল। স্থানীয় বাসিন্দাদের বিশ্বাস, পুজো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেবী মনসা রুষ্ট হয়েছেন। তাই যাঁরা উত্তরমাঠে যাচ্ছেন, তাঁদেরই সাপে কামড়াচ্ছে। শুক্রবার রীতিমতো চাঁদে তুলে উত্তরমাঠ এলাকার সুরিপুকুরের পাড়ে ফের মনসা পুজো করলেন বড়বেলুন গ্রামের বাসিন্দারা। ঘটনাচক্রে, মনসা পুজোর দিন পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু সাপের আতঙ্ক থেকে মুক্তি পেতে অকালে পুজো হল বড়বেলুন গ্রামে।
বড়বেলুন গ্রামে অকাল মনসা পুজোর উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, এবার থেকে নিয়মিত উত্তরমাঠ এলাকায় মনসা পুজো করা হবে। এদিকে এমন ঘটনা জানেন না বলে জানিয়েছেন ভাতারের বিডিও শুভ্র চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, বড়বেলুন গ্রামে যদি সাপের উপদ্রব বেশি হয়, তাহলে বনদপ্তরের সঙ্গে কথা বলবেন। প্রয়োজনে গ্রামে সচেতনতা শিবিরও করা হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.