Advertisement
Advertisement

১৬৫ কিসিমের ধানের বীজ সংগ্রহে আছে এই প্রৌঢ়ের

পুরনো চাল ভাতে বাড়ে।

Manipur man finds 185 types of wild rice
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:June 12, 2017 3:54 pm
  • Updated:June 12, 2017 3:54 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক:  সার, কীটনাশকের দাপটে বাপ, ঠাকুরদাদের আমলের ধান অনেক দিন আগেই মুখ লুকিয়েছে। তার বদলে এসেছে অধিক উৎপাদনশীল ধান। ফলন যথেষ্ট হলেও, এই ধরনের চালের ভাত খেয়ে নিত্য নতুন সমস্যায় মানুষ জেরবার। অবস্থা বেগতিক বুঝে পিছনের দিকে হাঁটা শুরু হয়েছে। ৫০, ১০০ বছর বা তারও পুরনো ধান নিয়ে দেশ জুড়ে চলছে গবেষণা। দেশের উত্তর পূর্বে এক উদ্যমী কার্যত নিঃশব্দে শুরু করেছেন গবেষণা। মণিপুরের কৃষক দেবকান্তর হাতযশে অন্তত ১৬৫ রকমের ধান পুরনো মেজাজে ফিরেছে। জৈব পদ্ধতিতে করা এইসমস্ত ধানের উৎপাদন কৃষকদের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়েছে।

[গঙ্গা নিয়ে ছেলেখেলা? হতে পারে ৭ বছরের জেল, ১০০ কোটি টাকা জরিমানা]

বছর চারেক আগেও ইম্ফলের বাড়িতে চাষবাস নিয়ে মেতে থাকতেন পি দেবকান্ত। একটি সেমিনারে গিয়ে তাঁর মাথায় অন্যরকম ভূত চেপে বসে। ঠিক করেন আর গতে বাঁধা পদ্ধতিতে ধান চাষ নয়, নতুন ধানের বীজের খোঁজ করতে হবে। সেই ঝোঁকে মণিপুরের প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে কার্যত পড়ে থাকতেন দেবকান্ত। সনাতন পদ্ধতিতে তৈরি ধানবীজের সন্ধানে বেরিয়ে শুরুর দিকে তিনি তেমন সাড়া পাননি। এরপর নিজস্ব ঢংয়ে দেবকান্ত গবেষণা শুরু করেন। কথা বলেন আরও অনেক কৃষকের সঙ্গে। বুঝতে পারেন পুরনো দিনের ধান চাষ করলে সবার লাভ। শুরু হয় ধানবীজ সংগ্রহের কাজ। এভাবে ঘুরতে ঘুরতে মাত্র চার বছরে তাঁর ভাণ্ডারে এখন ১৬৫ রকমের ধানের বীজ। জাতীয় বীজ বৈচিত্র উৎসবে এসে দেবকান্ত বলছেন, প্রথমের দিকে কাজটা খুব শক্ত ছিল। মণিপুরের নানা প্রান্তে চষে বেড়ানোর ফল অবশেষে মিলেছে।

Advertisement

[বাবা শিঙাড়া বিক্রেতা, জয়েন্টে তাক লাগানো ফল ছেলের]

ভাল মানের ধানবীজ মুদ্রার যেন এক পিঠ, তবে এর উল্টোদিকে আছে অনেক পরিশ্রমের কথা। পুরনো ধরনের এই বীজ কীভাবে চাষ করাতে হবে তা নতুন প্রজন্মের কাছে বোঝা সহজ নয়। চাষিদের কাছে সহজে পৌঁছে যেতে দেবকান্ত একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তৈরি করেন। যার ফলে ওয়ানু চারা মানবি, লাইফৌ, মুরশির মতো মণিপুরের একদা উৎকৃষ্ট মানের ধানবীজ দেবকান্তের হাত ধরে নতুন করে পাদপ্রদীপে এসেছে। ইম্ফলের পোস্তাংবামের ২ হেক্টর জমি এখন দেবকান্তের গবেষণাগার। যে জমি থেকে দেবকান্ত ক্যান্সার মোকাবিলার চাল ফলিয়েছেন।

Advertisement

কালো চালের জন্য গোটা দেশে মণিপুরের সুনাম রয়েছে। উত্তর পূর্বের এই পাহাড়ি রাজ্যের চালের ঔষুধি গুণও যথেষ্ট। দেবকান্তের উদ্যোগে ২০ ধরনের কালো চালের খোঁজ মিলেছে। সেভেন সিস্টার্সের অন্য রাজ্যগুলিতে তাঁর নিয়মিত ডাক পড়ে। নানা রাজ্যে গিয়ে দেবকান্ত কৃষকদের বোঝান ওষুধ এবং রাসায়নিকের বেলাগাম ব্যবহারে আপাতত ফল পেলেও, ভবিষ্যতের পক্ষে সর্বনাশ। অতএব সনাতনী প্রথায় হাঁট। পুরনো চালকে এভাবেই ভাতে বাড়াতে শিখে গিয়েছেন রবিকান্ত।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ