নিজস্ব সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: আছে বন্দুক, পিস্তল, লাঠি। বাসিন্দাদের নিরাপত্তার ভরসা তারাই। কিন্তু সেই পুলিশই কার্যত ঠুঁঠো জগন্নাথ মূষিক বাহিনীর দাপটে। এমনই অভিনব ঘটনার সাক্ষী শিলিগুড়ির ভক্তিনগর থানার অধীন আশিঘর পুলিশ ফাঁড়ি। ফাঁদ পেতে ওষুধ দিয়েও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। ভয়ডর নেই উর্দিতেও। সুযোগ মিলতেই জরুরি নথি কেটেকুটে ছত্রখান করছে। আর তাতেই মাথায় হাত পুলিশ কর্তাদের। সমস্যা এতটাই তীব্র যে অনেকে ইঁদুরের দাপটে ফাঁড়ি থেকে বদলি নেওয়ার বিষয়েও চিন্তাভাবনা শুরু করেছেন। পাশাপাশি মূষিক বাহিনীকে দমাতে এখন তাঁরা বিকল্প ব্যবস্থার খোঁজ শুরু করেছেন।
[জেলে মাদক-মোবাইল রুখতে পদস্থ কর্তাদেরও তল্লাশি শুরু আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে]
এক পুলিশকর্তা বলেন, “একজন হ্যামলিনকে পাওয়া গেলে বাঁচা যেত।” শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের ভক্তিনগর থানার অধীনে থাকা আশিঘর পুলিশ ফাঁড়ির এমনিতেই বেহাল অবস্থা। ২৮৮ বর্গ ফুটের একটি টিনের চালের ঘর। বৃষ্টিতে চালের ছিদ্র থেকে জল পড়ে। গরমে সমস্যা আরও বেড়ে যায়। প্রথম প্রথম ফ্যানও ছিল না। মাসখানেক আগে দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মীরাই ব্যক্তিগত উদ্যোগে একটি ফ্যান লাগিয়েছেন।
সেখানেই ওসি-সহ তিনজন এএসআই ও জনা ছয়েক কনস্টেবল কাজ করেন। আপাতদৃষ্টিতে দেখলে এটিকে কোনওভাবেই পুলিশ ফাঁড়ি বলে মনে হবে না। কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে অগত্যা সেখানেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন পুলিশকর্মীরা। এত অসুবিধার পরেও কাজ করতে আপত্তি ছিল না কারও। কিন্তু সব হিসাব উলটে দিয়েছে মূষিককুল। দিনে রাতে তাঁদের দৌরাত্ম্যে কাজ করাই দায় হয়ে উঠেছে। এফআইআর কিংবা মামলা সংক্রান্ত কোনও সরকারি নথি রাখলেই তা সাবাড় করে দিচ্ছে ইঁদুর। আলমারিতে রেখেও রক্ষা করা যাচ্ছে না নথিপত্র।
সরকারি নথি নয়ছয় হলে উপরওয়ালাকে তার জবাবদিহি করতে হবে। ফলে সবসময় তটস্থ থাকতে হয় পুলিশকর্মীদের। ইঁদুর মারার ওষুধ থেকে খাঁচা, সবরকম দাওয়াই প্রয়োগ করেও তাদের দাপট কমানো যায়নি এতটুকুও। ফাঁড়ির এক পুলিশ কর্মী বলেন, “ইঁদুরের দাপটে একটিও কাগজও রাখা যায় না। কোথাও লুকিয়ে রেখেও নিশ্চিন্ত হওয়ার জো নেই।” কমিশনারেটের ডিসিপি (ইস্ট-জোন ১) গৌরব লাল বলেন, “সমস্যার বিষয়টি জানি। আধিকারিককে দেখতে বলা হয়েছে।”
[স্বামী পলাতক, ওপার বাংলায় শৌচাগারে সন্তান প্রসব ভারতীয় মহিলার]