বিক্রম রায়, কোচবিহার: হতদরিদ্র পরিবারের মেধাবী সন্তান। কিন্তু এমএ পাশ করেও চাকরি পাননি। পরিস্থিতির চাপে পড়ে শ্রমিকের কাজ করতে গিয়েছিলেন কেরলে। বন্যায় কার্যত বিনা চিকিৎসায় মারা গেলেন কোচবিহারের বছর একুশের এক তরতাজা যুবক। বুধবার সকালে তাঁর মরদেহ পৌঁছল মেখলিগঞ্জের বাড়িতে। এলাকায় শোকের ছায়া।
[ কেরলে হড়পা বানের কবলে বাঙালি, তলিয়ে গেলেন নদিয়ার যুবক]
মৃতের নাম সিরাজ ইসলাম। কোচবিহারের মেখলিগঞ্জের কাসিমহাট এলাকার বাসিন্দা তিনি। পরিবারের আর্থিক অবস্থা একেবারেই ভাল নয়। কিন্তু চরম দারিদ্র্যও পড়াশোনার পথে অন্তরায় হতে পারেনি। এমএ পাশ করেছিলেন সিরাজ। আশা ছিল, চাকরি করে পরিবারের আর্থিক দুরবস্থা ঘোচাবেন। কিন্তু, তেমনটাই আর হল কই! সিরাজ ইসলামের পরিবারের লোকেদের দাবি, এমএ পাশ করার পরও বহু চেষ্টা করেও চাকরি পাননি তিনি। বাধ্য হয়েই বছর দুয়েক আগে কেরলে শ্রমিকের কাজ করতে গিয়েছিলেন উচ্চশিক্ষিত ওই যুবক। প্রবল বন্যায় পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সিরাজের। খাবার, ওষুধ কিছুই পাওয়া যাচ্ছিল না। গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। শেষপর্যন্ত, কার্যত বিনা চিকিৎসায় ১৬ আগস্ট মারা যান সিরাজ ইসলাম। কেরলের পরিস্থিতি এখন এতটাই খারাপ যে, ছেলের মৃত্যুসংবাদ সময়মতো পাননি সিরাজের পরিবারের লোকেরা। বুধবার, বখরি ইদের দিন সকালে কোচবিহারের মেখলিগঞ্জের বাড়িতে ফিরল সিরাজ ইসলামের নিথর দেহ।
বন্যা কবলিত কেরলে বাঙালির শ্রমিকের মৃত্যু অবশ্য এই প্রথম নয়। কোঝিকোড় শহরে শ্রমিকের কাজ করতেন নদিয়ার দিলওয়ার মল্লিক। বিরামহীন বৃষ্টিতে হড়পা বান এসেছিল শহরে। বানের জলে তলিয়ে যান দিলওয়ার। তাঁর বাড়ি নদিয়ার নাকাশিপাড়ার চৌমুহা গ্রামে। রবিবার সকালে ওই যুবকের মৃত্যুসংবাদ পান পরিবারের লোকেরা। সোমবার দিলওয়ার শেখের মৃতদেহ আনা হয় বাড়িতে।
[ ইদের নমাজ পড়ে ফেরার পথে আক্রান্ত গ্রামবাসীরা, আহত ২০]