নিজস্ব সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি: প্রত্যাশা ছিল আবার আসবে ফিরে। কিন্তু হাজার হাজার পরিয়ায়ীর মাঝে এবার আর দেখা মিলল না তার। তবে ‘বিন গুজ’ না ফিরুক তার শূন্যতা পূরণ করল ‘বার হেডেড গুজ’। গজলডোবার জলাশয়ে এবারে বাড়তি প্রাপ্তি স্নিউ এবং ব্ল্যাকনেক গ্রিব হাঁস। বিরল প্রজাতির এই পরিযায়ীদের কারও ঠিকানা রাশিয়া। তো কেউ আবার তিব্বত, মঙ্গোলিয়া থেকে উড়ে এসেছে এদেশে। নানা প্রজাতির বিরল পাখি, হাঁস-সহ পরিযায়ীদের দেখে মহা খুশি আগত পর্যটকরা।
বৈকুন্ঠপুর বনবিভাগের সহকারী বনাধিকারিক রাহুল দেব মুখোপাধ্যায় বলছেন, “অনেক প্রত্যাশা ছিল এবারও দেখা মিলবে বিন গুজের। সংখ্যায় একটি হলেও গত বছর উত্তরবঙ্গে প্রথম সাইবেরিয়ার এই হাঁসের দেখা মিলেছিল গজলডোবার জলাশয়ে। তার জায়গায় এই বছর দল বেঁধে আসা বার হেডেড গুজকে দেখেও কম উচ্ছ্বসিত নন পাখি প্রেমীরা।” পরিবেশ প্রেমী সংগঠন ন্যাফ-কে সঙ্গে নিয়ে বন বিভাগের যৌথ সমীক্ষায় গজলডোবার জলাশয়ে ১১টি বার হেডেড গুজের দেখা মিলেছে এই বছর। গজলডোবার পাশাপাশি ফুলবাড়ির জলাশয়েও টানা দু’দিন ধরে চলে পাখি সমীক্ষা। তাতে গত বছরের তুলনায় দু’জায়গাতেই বৃদ্ধি পেয়েছে পরিয়ায়ী পাখির সংখ্যা। গত বছর প্রায় ৬০০০ পরিয়ায়ী পাখির দেখা মিলেছিল ফুলবাড়ির জলাশয়ে। এবার সেই সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০২০। পাশাপাশি গজলডোবার জলাশয়ে এই বছর ৬৭ প্রজাতির পরিয়ায়ী চিহ্নিত হয়েছে। সংখ্যাটা প্রায় ৯০১৩। গত বছর সমীক্ষায় ধরা পড়েছিল ৭৭০৩টি পাখি।
সহকারী বনাধিকারিক রাহুল দেব মুখোপাধ্যায় আরও জানান, “বিন গুজ না এলেও এই বছর উল্লেখযোগ্য প্রাপ্তি বার হেডেড গুজ। সেই সঙ্গে স্নিউ এবং ব্ল্যাক নেক গ্রিব হাঁস। পরিয়ায়ীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে অক্টোবর মাস থেকেই নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এই দুই জলাশয়ে।” প্রতি বছরই সাইবেরিয়া, রাশিয়া, তিব্বত, মঙ্গোলিয়া সহ বিভিন্ন দেশ থেকে পরিযারীরা ভিড় জমায় এখানে। আর সেই পাখির টানে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসেন হাজার হাজার পর্যটক থেকে পাখি প্রেমীরা। এখানকার পরিবেশে ভিন দেশ থেকে অতিথিদের কথা মাথায় রেখে তৎপর রয়েছে বন দপ্তর। এই সময় পরিযায়ীদের দেখভালের বিষয়ে সতর্ক নজর দেয় বন দপ্তরের কর্মীরা। পরিযায়ীদের খাওয়া-দাওয়া থেকে সুরক্ষার দিকেও বিশেষ নজর দেওয়া হয়। প্রতি বছরের মত এবারের বন দপ্তরের তরফে বাড়তি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ভিন দেশ থেকে আসা এবছর বিরল প্রজাতির পরিযায়ীদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় সে দিকেও সতর্ক নজর রয়েছে বন দপ্তরের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.