সৌরভ মাজি, বর্ধমান: ছাত্রীর রহস্যমৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোট থানা এলাকায়। বৃহস্পতিবার বিকেলে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়ে ওই ছাত্রী। প্রথমে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও পরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হলে, সেখানেই মৃত্যু হয় তার। অভিযোগ, প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে বিষ মেশানো হজমি খাইয়ে ওই কিশোরীকে খুন করেছে এলাকারই এক যুবক।
[শিক্ষক নেই, ক্লাস হয় না, মিড-ডে মিল খেয়েই বাড়ি ফেরে পড়ুয়ারা]
পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটে বরাগড় গ্রামের বাসিন্দা টিনা আফরোজ। স্থানীয় মঙ্গলকোট এ কে হাইস্কুলের একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া ওই কিশোরী। মঙ্গলবার থেকে পরীক্ষা শুরু হয়েছে তাদের। বৃহস্পতিবার বিকেলে পরীক্ষা দিয়ে ফিরছিল টিনা। জানা গিয়েছে, সেই সময় এলাকারই এক যুবক আবদুর রহমান ও তার বোন পথ আটকায় তার। ওই যুবকের বোন ওই কিশোরীর বান্ধবী হওয়ায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে বেশ কিছুক্ষণ তারা কথা বলেন। এরপর সেখানেই টিনাকে হজমি খেতে দেয় তারা। এরপর বাড়ি ফিরে যায় টিনা। অভিযোগ, বাড়ি ফেরার পর হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়ে টিনা। প্রথমে তাঁকে উদ্ধার করে মঙ্গলকোট প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভরতি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মৃত্যু হয়েছে ওই কিশোরীর। জানা গিয়েছে, ওই হাসপাতালেই ছাত্রীর পরিবারের সঙ্গেই ছিলেন আবদুর রহমান নামে ওই যুবক। অভিযোগ, ওই ছাত্রীর মৃত্যুর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই ওই যুবকের আচরণে খটকা লাগে কিশোরীর পরিবারের। এরপর তাকে চেপে ধরে মৃতার পরিবারের লোকরা। সেই সময় যুবককে বেধড়ক মারধরের পর মৃতের পরিবারের লোকেরা তাঁকে বর্ধমান থানার পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
[‘দেশকে রক্ষার্থে বিয়েটা পিছোতে হবে’, মালার বদলে রাইফেল তুললেন বাংলার জওয়ান]
স্থানীয় সূত্রে খবর, দীর্ঘদিন ধরেই টিনা আফরোজাকে উত্যক্ত করত আবদুর রহমান নামে ওই যুবক। কিশোরীকে একাধিকবার প্রেমের প্রস্তাবও দিয়েছিল সে। তবে তাতে সায় দেয়নি টিনা। মৃতার পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, সেই আক্রোশের বশেই বৃহস্পতিবার হজমির সঙ্গে বিষ মিশিয়ে টিনাকে খাওয়ায় অভিযুক্ত যুবক ও তার বোন। তবে ঘটনায় একটি বিষয় ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। জানা গিয়েছে, মৃতার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেই হাসপাতালে গিয়েছিলেন অভিযুক্ত আবদুর। কিন্তু কেন? তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। মৃতার পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে যে, এলাকার যুবক হওয়ার কারণেই অভিযুক্তকে সঙ্গে নেন তারা। যদিও গোটা ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর তারা দাবি করেন, কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে কিনা তা জানতেই তাদের সঙ্গ দিয়েছিল ওই যুবক। তবে তা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি তারা। পুলিশ সূত্রে খবর, আদৌ বিষক্রিয়াতেই কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে কি না তা জানা যাবে ময়নাতদন্তের পরেই।