Advertisement
Advertisement

দুর্বিষহ জীবন, দোরে দোরে মৃত্যুভিক্ষা মা-ছেলের

পাশে দাঁড়ালেন স্থানীয়রা।

Mother-son seek death in Barasat
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:November 15, 2018 11:31 am
  • Updated:November 15, 2018 11:31 am

ব্রতদ্বীপ ভট্টাচার্য, বারাসত: মাথার উপর ছাদ নেই। ঠিকানা রেলের পরিত্যক্ত কোয়ার্টার। অনাহার ও চরম অনটনে দিন কাটাচ্ছেন। তার উপর ছেলের অসুখ। শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে শয্যাশায়ী সে। সপ্তাহখানেক আগে একমাত্র সম্বল স্বামীকেও হারিয়েছেন। ছেলের চিকিৎসা তো দূর, দু’বেলা দু’মুঠো খাবার জোগাড় করা দায়। এমত অবস্থায় বিকল্প কোনও পথ না পেয়ে নিজের ও অসুস্থ ছেলের জন্য বিষ চেয়ে স্থানীয়দের দোরে দোরে ঘুরলেন পঞ্চাশোর্ধ্ব রেখা সানা। বুধবার এমনই এক বেদনাদায়ক ঘটনার সাক্ষী হয়ে থাকল উত্তর ২৪ পরগনার বামুনগাছি এলাকা। নিরাশ্রয় ও বৃদ্ধার স্বেচ্ছামৃত্যুর আরজি শুনে এদিন তাঁর পাশে এসে দাঁড়ান এলাকার মানুষ। রেখাদেবী ও তাঁর অসুস্থ ছেলের খাওয়ার ব্যবস্থা করেন তাঁরা। কিন্তু অসুস্থ ছেলের চিকিৎসা? স্থানীয়দের দাবি, ছ’মাস বয়স থেকে কঠিন রোগে ভুগছে রেখাদেবীর ছেলে কৃষ্ণ। মাথায় জল জমে শয্যাশায়ী সে। এই দুরারোগ্য ব্যধির চিকিৎসা সাধারণ ব্যাপার নয়। তাই সহায়সম্বলহীন এই বৃদ্ধা ও তাঁর ছেলেকে এই পরিস্থিতির থেকে উদ্ধার করার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন তাঁরা।

[‘শুভেন্দুর মুন্ডু চাই’, মাওবাদীদের হুমকি পোস্টারে ছয়লাপ জঙ্গলমহল]

Advertisement

বছর সাতেক আগে দমদম থেকে বামুনগাছির মাঝেরপাড়ায় একটি ভাড়া বাড়িতে এসে উঠেছিলেন রেখাদেবীর পরিবার। স্থানীয়দের থেকে জানা যায়, ছেলে কৃষ্ণর অসুস্থতার কারণে দমদমের বাড়ি বিক্রি করে সেখানে একটি ভাড়া বাড়িতে ছিলেন তাঁরা। রেখাদেবীর স্বামী কার্তিক সানা রংমিস্ত্রির কাজ করতেন। স্বল্প আয়। তার অধিকাংশই ছেলের চিকিৎসায় চলে যেত। বাড়ি ভাড়া দিতে না পারায় বাড়িওয়ালা তাড়িয়ে দেন তাঁদের। দমদম থেকে এসে তাঁরা আশ্রয় নেন বামুনগাছি স্টেশনে। স্টেশনের এক সাফাইকর্মী সুব্রত রায় জানান, কয়েকদিন প্ল্যাটফর্মের উপরই দিন কাটিয়েছিলেন তাঁরা। তবে নিত্যযাত্রীরা স্টেশন মাস্টারের কাছে অভিযোগ জানানোর কারণে তাঁদের সেখান থেকে চলে যেতে বলা হয়। সুব্রত রায় ও তাঁর সহকর্মীরা মিলে অসহায় ওই পরিবারকে স্টেশন সংলগ্ন রেলের একটি পরিত্যক্ত কোয়ার্টারে থাকার ব্যবস্থা করে দেন। সেখানেই কোনও মতে শয্যাশায়ী ছেলেকে নিয়ে দিন কাটাচ্ছিলেন তাঁরা। কিন্তু হঠাৎই সপ্তাহখানেক আগে আকস্মিক মৃত্যু হয় রেখাদেবীর স্বামী কার্তিকবাবুর।

Advertisement

স্থানীয়দের থেকে জানা যায়, কার্তিকবাবুর শেষকৃত্যের জন্যও টাকা ছিল না রেখাদেবীর কাছে। স্টেশনের সাফাইকর্মী ও সংলগ্ন বাজারের ব্যবসায়ীরা টাকা দিয়ে কার্তিকবাবুকে দাহ করেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী সদস্যের মৃত্যুর পর একেবারে অথৈ জলে পড়েন রেখাদেবী। স্থানীয়দের তিনি জানান, গত কয়েকদিন খাওয়া হয়নি তাঁর। ছেলের অসুস্থতা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। বসতে পর্যন্ত পারে না সে। কৃষ্ণকে খাওয়ানো থেকে শৌচকর্ম সবই রেখাদেবীকে করিয়ে দিতে হয়। এদিন সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যাওয়ায় চরম সিদ্ধান্ত নেন রেখাদেবী।

[রোগীর আত্মীয়দের মাদক মেশানো চা খাইয়ে সর্বস্ব লুট বর্ধমান মেডিক্যালে]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ