৯ চৈত্র  ১৪২৯  শুক্রবার ২৪ মার্চ ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

রাজ্যের দেওয়া ‘জেড’ ক্যাটেগরির নিরাপত্তা ছাড়লেন মুকুল

Published by: Sangbad Pratidin Digital |    Posted: September 20, 2017 9:39 am|    Updated: September 20, 2017 9:42 am

Mukul Roy likely to sever ties with TMC

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব আরও বাড়ালেন মুকুল রায়। রাজ্যের দেওয়া জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তা ছাড়লেন দলের রাজ্যসভার সাংসদ। তবে সূত্রের খবর, কিছুদিনের মধ্যেই হয়তো দলও ছাড়তে পারেন মুকুল। এমন কথাই ঘুরছে হাওয়ায়। দ্রুতই এ কথা ঘোষণাও করতে পারেন মুকুল। সম্প্রতি দলীয় মুখপত্রের উৎসব সংখ্যা প্রকাশের অনুষ্ঠানেও দেখা যায়নি তাঁকে। এড়িয়ে গিয়েছেন স্ত্রী অসুস্থ বলে।

একদা তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ডের ঘনিষ্ঠরা জানাচ্ছেন, রাজ্য পুলিশি নিরাপত্তা তুলে নেওয়ার আগে তিনি নিজেই জেড ক্যাটেগরির নিরাপত্তা বলয় ছাড়লেন। সম্মান বজায় রাখতেই তাঁর এই সিদ্ধান্ত বলে সূত্রের খবর। সূত্রের খবর, দলের সহ-সভাপতি, স্ট্যান্ডিং কমিটি-সহ একাধিক পদ হারানোর খবর সংবাদমাধ্যম মারফত জেনে মুকুল রায় ‘ব্যথিত’। তাই নিজেই রাজ্য সরকারের দেওয়া নিরাপত্তারক্ষীদের আসতে নিষেধ করে দেন। জানিয়ে দিয়েছেন, এখন থেকে রাজ্যের দেওয়া সশস্ত্র আধিকারিকের কোনও দরকার নেই।

[মুকুল রায়ের নতুল দলেই কি এবার ঋতব্রত?]

সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া তৃণমূলের দলীয় নথিতে কোনও সাংগঠনিক পদেই মুকুল রায়ের নাম উল্লেখ করা হয়নি। বিজেপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার জেরেই তাঁকে দলের সবরকম আনুষ্ঠানিক পদ থেকে ছেঁটে ফেলা হল বলে সূত্রের খবর। আর তারপর থেকেই মুকুলের নতুন করে ব্যাকফুটে চলে যাওয়া নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে প্রবল জল্পনা। ঋতব্রতকে নিয়ে নতুন দল শুরু করতে পারেন মুকুল, শোনা যাচ্ছিল এমনটাই। তবে ঋতব্রত সম্ভবত যাচ্ছেন কংগ্রেসে। তাই আপাতত সেই জল্পনা খানিকটা থিতিয়ে এসেছে। কিন্তু মুকুল যে তৃণমূল ছাড়ছেন, সেটা যেন একরকমভাবে স্থির হয়েই গিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সংসদীয় কমিটির সদস্য ছিলেন মুকুল রায়। তাঁকে ওই পদ থেকেও দল অব্যাহতি দিয়েছে। মুকুল রায়ের বিকল্প হিসাবে মণীশ গুপ্তর নাম প্রস্তাব করে তৃণমূল।

তৃণমূলে তাঁর পদের ভার যে লাঘব হচ্ছে তা গত কয়েক মাসে অনেকটা পরিষ্কার হয়েছে। এক এক করে মুকুল রায়কে সরিয়ে দেওয়া হয় পরিবহণ, পর্যটন ও সংস্কৃতি বিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যানের পদ থেকে। এরপরও মুকুল রায়ের সঙ্গে দিল্লির যোগাযোগ হিসাবে ছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সংসদীয় কমিটির সদস্য থাকা। কিন্তু সেই দায়িত্ব থেকেও তাঁকে রেহাই দেয় তৃণমূল কংগ্রেস। মুকুল রায়ের জায়গায় রাজ্যসভার আর এক সাংসদ মণীশ গুপ্তকে আনা হতে পারে। কিছু দিন আগে তিনটি স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান পদে মুকুল রায়ের জায়গায় আনা হয়েছিল ডেরেক ও’ব্রায়েনকে। কেন্দ্রীয় রাজনীতি শুধু নয় একদা দলের ‘সেকেন্ড ম্যান’ বিহার, ঝাড়খণ্ড, ত্রিপুরা এবং পাঞ্জাবের দায়িত্ব থেকে মুকুল রায়কে সরিয়ে দেওয়া হয়। সেই পদে আনা হয় দলীয় রাজনীতিতে তাঁর বিরোধী হিসাবে পরিচিত অর্জুন সিংকে। সংসদে দলীয় শক্তির ভিত্তিতে ঠিক হয় কোন দল কতগুলি কমিটির চেয়ারম্যানের পদ পাবে। সেই ভিত্তিতে তৃণমূলের হাতে রয়েছে বেশ কিছু কমিটির চেয়ারম্যানের পদ।

[সহ-সভাপতির পদ খুইয়ে দলে কার্যত একঘরে মুকুল রায়]

তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির পদও খোয়ান মুকুল রায়। নির্বাচন কমিশনে সম্প্রতি ২১ জন পদাধিকারীর যে তালিকা দলের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে, তাতে সহ-সভাপতির পদটিই নেই। ওই পদেই ছিলেন মুকুলবাবু, সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী ও সদ্য প্রয়াত সাংসদ সুলতান আহমেদ। সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির পদ উঠে যাওয়ায় মুকুলবাবু এখন শুধু দলের ওয়ার্কিং কমিটি ও রাজ্য তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য রইলেন।

দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের পদে দীর্ঘদিন ছিলেন মুকুলবাবু। দু’বছর আগে দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ায় তাঁকে সরিয়ে রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সিকে আনা হয় ওই পদে। সেই সময়েই জল্পনা ছিল মুকুল নতুন দল গড়ছেন। শেষপর্যন্ত অবশ্য তিনি দলে থেকে যান। আগের মতোই কর্মসূচিতে নেমে পড়েন। তাঁর কাজে সন্তুষ্ট হয়ে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির পদে বসান। এবার সেই পদও গেল রাজ্যসভার সাংসদের। এবার ২১ জুলাইয়ের সভায় বক্তার তালিকায় ছিলেন না মুকুলবাবু। তার পর এক এক করে বিভিন্ন সংসদীয় কমিটি থেকে তাঁকে সরানো হয়। তখনই বোঝা যায় দল কতটা কঠোর মনোভাব নিতে চলেছে। সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির পদটি তুলে দিয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব মুকুলবাবুকেই বার্তা দিতে চেয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

[মুকুল কি বিজেপিতে! জল্পনার কী জবাব পার্থর?]

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে