২৫ জ্যৈষ্ঠ  ১৪৩০  শুক্রবার ৯ জুন ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

সম্প্রীতির নজির, সরস্বতী পুজোর মণ্ডপে-মণ্ডপে কবিতা পাঠ মুসলিম প্রৌঢ়ের

Published by: Paramita Paul |    Posted: January 29, 2020 8:56 pm|    Updated: January 29, 2020 8:56 pm

Muslim neighbours help in furnel of a hindu vagabond in S 24 pargana.

দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: সরস্বতী পুজোয় বেনজির সম্প্রীতির সাক্ষী হয়ে থাকল দক্ষিণ ২৪ পরগনার দুই প্রান্ত। একদিকে ঘুটিয়ারিতে হিন্দু ভাইয়ের সৎকার করলেন মুসলিম ভাইয়েরা, অন্যদিকে মণ্ডপে-মণ্ডপে ঘুরে বাগদেবীকে নিয়ে স্বরচিত কবিতা পাঠ করলেন আরেক মুসলিম দিনমজুর। 

প্রথম ঘটনাটি ঘটেছে জীবনতলা থানার ঘুটিয়ারি শরিফের মনসা পুকুর এলাকায়। এলাকার বাসিন্দারা জানান, “বছর  সত্তরের মানু মিস্ত্রি দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর মঙ্গলবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। মানুর কোনও আপনজন নেই। ভিক্ষা করেই দিনগুজরান করতেন তিনি। তাই অসুস্থ হওয়ার পর মানুকে হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁর সংখ্যালঘু প্রতিবেশীরাই। পরে তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আনা হয়। বাড়িতেই তাঁর মৃত্যু হয়। পরিবারে কেউ না থাকায় মানুর সৎকার নিয়ে চিন্তায় পড়ে যান তাঁর দুঃসম্পর্কের এক ভাগ্নে সন্ন্যাসী মিস্ত্রি ও তাঁর স্ত্রী। সেই সময় তাঁদের সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসেন গ্রামের মহম্মদ মোজাম্মেল সরদার, মহম্মদ হোসেন শেখ, ফজলুর রহমান-সহ অন্যরা। তাঁরাই দেহ সৎকার থেকে শুরু করে শ্রাদ্ধ-শান্তির দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন।

[আরও পড়ুন : প্রয়াত সুন্দরবনের উন্নয়নের কান্ডারী, শোকবার্তা পাঠালেন মমতা]

এবিষয়ে মহাম্মদ হোসেন শেখ বলেন, “এখানে আমরা হিন্দু-মুসলিম সবাই মিলেমিশে থাকি। বিপদে পাশে দাঁড়ানোটা কর্তব্য বলে মনে করি। মনু মিস্ত্রির শেষযাত্রায় সঙ্গ দিতে পেরে ভাল লাগছে।” নিহতের ভাগনে সন্ন্যাসী মিস্ত্রি বলেন,”ওরা যেভাবে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে তাতে আমরা অভিভূত। মামা মারা যাওয়ার পর কr করব বুঝতে পারছিলাম না। ওঁরাই সমস্ত দায়িত্ব নিয়ে সবকিছু সম্পন্ন করেছে। আমি চিরকৃতজ্ঞ ওঁদের কাছে।”

[আরও পড়ুন :ফের প্রথা ভেঙে সরস্বতী পুজো, শিলিগুড়ির স্কুলে পুরোহিতের আসনে একাদশ শ্রেণির ছাত্রী]

অন্যদিকে, ভাঙড়ের বিভিন্ন মণ্ডপে ঘুরে ঘুরে স্বরচিত কবিতা পড়ছিলেন হাসমত আলি। পেশায় কাপড়ের দোকানে কর্মরত তিনি। আর সুযোগ পেলেই কবিতা লেখেন। সরস্বতী পুজো উপলক্ষ্যে তিনি একটি কবিতা লিখেছন, ‘মাঘী পূর্ণিমার পঞ্চমীতে এসেছো শ্বেত শতদল বিহারীনি…’ বুধবার দুপুরে কাজের ফাঁকে ভাঙড়ের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, ভাঙড় থানার মণ্ডপে গিয়ে জোড় হাত করে দেবীর সামনে সেই কবিতা আবৃত্তি করেন। হাসমত বলেন, “হিন্দু-মুসলমান বলে কিছু নেই, আমরা সবাই মানুষ। সব মানুষ যদি এক থাকেন, এক সুরে কথা বলেন তাহলে সমস্ত অশুভ শক্তি পরা্ত হবে।‘ হাসমতের সহপাঠী ঘটকপুকুর হাই স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক অরবিন্দ মণ্ডল বলেন, “হাসমতের মত উদারমনস্ক মানুষের বড়ই অভাব। স্কুলজীবন থেকেই ও উদারচেতা মনের জন্য সবার কাছে জনপ্রিয়।”

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে