প্রতীকী ছবি
স্টাফ রিপোর্টার: ফেসবুকে প্রেমিকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ছবি পোস্ট করার জেরে আত্মঘাতী আরও এক কলেজ ছাত্রী। শুক্রবার রাতে প্রায় একইরকমভাবে অপমান ও গঞ্জনা সইতে না পেরে নদিয়ার নবদ্বীপে আত্মহত্যা করেছিলেন এক কলেজ ছাত্রী। এবার একইভাবে লোকলজ্জার ভয়ে সন্মান বাঁচাতে আত্মহননের পথ বেছে নিলেন বি এ প্রথম বর্ষের এক কলেজ ছাত্রী। এবারের ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ারই ধানতলা থানার চাঁদপুর গ্রামে। বাড়িতে রাখা কীটনাশক খেয়ে শেষপর্যন্ত মারা গেলেন ওই কলেজ পড়ুয়া।
[রাধাকে খুনের আগে দৈহিক চাহিদা মেটায় ধৃত প্রেমিক]
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ওই ছাত্রীর নাম রিয়া বিশ্বাস (১৮)। তাঁর বাড়ি ধানতলা থানার চাঁদপুর গ্রামে। গত ৩০ অক্টোবর রাতে তিনি বাড়িতে কীটনাশক খান। তাঁকে প্রথমে রানাঘাট হাসপাতাল তারপরে কল্যাণী জে এন এম হাসপাতাল এবং শারিরীক অবস্থার অবনতি হওয়ার পর তাঁকে কলকাতার এন আর এস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শেষমেশ একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করার পর শনিবার রাতে মারা যান রিয়া।
বগুলা শ্রীকৃষ্ণ কলেজে বি এ প্রথম বর্ষে পড়তেন রিয়া। ওই একই কলেজে একই ক্লাসে পড়ে সুফল দাস নামে এক যুবক। সুফলের বাড়ি রিয়ার বাড়ির কাছেই। প্রতিবেশী হওয়ায় ও একই কলেজে একই ক্লাসে পড়ার সূত্রে সুফল মনে মনে চাইত রিয়াকে। যদিও রিয়ার মা শ্যামলী বিশ্বাস বলেছেন, “ওই ছেলেটি প্রায় সময় আমার মেয়েকে বিরক্ত করত। বারবার বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছে। আমার মেয়ে রাজি হয়নি। এক সময় জোর করে বাড়ি ফেরার পথে আমার মেয়েকে কোনও একটা ঘরে ঢুকিয়ে মোবাইলে কিছু অশালীন ছবি তোলে সে। এরপর ফের বিয়ের জন্য চাপ দেয়। ওই অশালীন ছবিগুলো নেটে ছেড়ে দেওয়ার হুমকিও দেয় সে। মেয়ে তাতেও রাজি না হওয়ায় দুর্গাপুজোর পর ফেসবুকে ওই ছবি ছেড়ে দেয়। তা কিছুদিনের মধ্যেই জেনে যায় গ্রামের লোকজন। বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন প্রশ্ন-কটুক্তি করতে থাকে । লজ্জায় সে তাঁর জীবনটাই দিয়ে দিল। আমরা ওই ছেলেটির কঠোর শাস্তি চাই।”
পেশায় সম্ভ্রান্ত কৃষক রিয়ার বাবা কার্তিক বিশ্বাস। গত ছ’দিন ধরে নিজের এক মাত্র সন্তানকে বাঁচানোর চেষ্টা করেও বিফল হয়েছেন। তিনি বললেন,”মেয়েকে অনেকভাবে বুঝিয়ে ভোলানোর চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু মেয়ে ফেসবুকে ছড়ানো ওই ছবি প্রকাশ্যে আসার ঘটনা মেনে নিতে পারেনি। তাই মুখ লুকাল। আমার দাবি ফেসবুক বা সোশ্যাল মিডিয়ার এই অপব্যবহার এবার বন্ধ হোক।” রবিবার সন্ধেয় মেয়ের মৃতদেহ নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন কার্তিক বাবু। ফোনে বললেন, ‘আমি মেয়ের মৃতদেহ নিয়েই থানায় যাব। কড়া অভিযোগ জানাব সুফল নামে ছেলেটির নামে। পুলিশ ওকে যেন কড়া শাস্তির ব্যবস্থা করে।’ রিয়ার মৃত্যুর ঘটনার পর থেকেই পলাতক সুফল। তার খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
[কন্যাসন্তানকে বিয়ে করে যৌনতায় লিপ্ত হতে পারেন পিতা, নিদান মৌলবির]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.