ঘটনাস্থলে পুলিশ আধিকারিকরা। নিজস্ব চিত্র
অর্ণব দাস, বারাকপুর: স্বনামধন্য বনেদি পরিবারের ঘর থেকে ভর সন্ধ্যায় আচমকা পরপর গুলির আওয়াজ। স্থানীয়রা ছুটে গিয়ে দেখেন স্বামীর হাতে রয়েছে আগ্নেয়াস্ত্র। গুলিতে রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে রয়েছেন স্ত্রী। শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে নৈহাটির রাজেন্দ্রপুর এলাকার এই ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। জখম স্ত্রী চন্দ্রলেখা ঘোষের হাতে, পায়ে এবং আরেকটি গুলি বুক ছুঁয়ে বেরিয়ে গিয়েছে।
প্রথমে তাঁকে নৈহাটি স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় পরে বারাকপুর ওয়ারলেস মোড় সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। অভিযুক্ত মহেন্দ্রপ্রতাপ ঘোষকে গ্রেপ্তার করেছে শিবদাসপুর থানার পুলিশ। এনিয়ে বারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি (নর্থ) গণেশ বিশ্বাস বলেন, “জখম মহিলা চিকিৎসাধীন রয়েছেন। চিকিৎসক না জানানো পর্যন্ত তাঁর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে এখনই কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না। তদন্ত একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।” পারিবারিক বিবাদের কারণেই এই ঘটনা বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত মহেন্দ্রর পরিবার অত্যন্ত ধনী ও বনেদি হিসেবে এলাকায় পরিচিত। তাঁর ঠাকুরদা নীলমণি ঘোষকে বাসিন্দারা মাছের ব্যবসার ‘টাইকুন’ বলেই ডাকতেন। রাজেন্দ্রপুরের মৎসবাজারের ব্যবসা জেলা জড়িয়ে রাজ্যব্যাপী হয়েছিল তাঁর হাত ধরেই। তাই ঘোষ পরিবারের সম্পত্তি প্রচুর। এনিয়েও পারিবারিক বিবাদও রয়েছে বলেই এলাকাবাসী সূত্রে খবর। তাই এদিনের ঘটনাকে পারিবারিক বিবাদ বলেই অভিযোগ করছেন অনেকে। যদিও অভিযুক্তর কাকা প্রতিবেশী বাবলু ঘোষ ঘটনাটিকে দুর্ঘটনা দাবি করেন। তিনি বলেন, “মহেন্দ্র তাঁর লাইসেন্সপ্রাপ্ত বন্দুক অনেক দিন পরিষ্কার করেননি। সেটাই এদিন সন্ধ্যায় ঘরে পরিষ্কার করছিলেন। তখন তাঁর স্ত্রী ঘরে ঢুকলে কোনওভাবে বন্দুক থেকে একটি গুলি বেরিয়ে ওর তাঁর গায়ে লাগে। ভয় পেয়ে মহেন্দ্র বন্দুক মাটিতে ফেলতে গেলে আরও দুটি গুলি বেরিয়ে স্ত্রীর গায়ে লাগে।”
যদিও এই কথা কতটা বিশ্বাসযোগ্য? তাই নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ আছে। প্রতিবেশী অনেকেই মদ্যপ অবস্থায় পারিবারিক গণ্ডগোল শুনেছেন বলেও অভিযোগ। বিধায়ক সনৎ দে বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই জমি, জায়গা-সহ পারিবারিক নানা বিষয় নিয়ে ওঁদের পরিবারে অশান্তি চলছে বলে শুনেছি।” গোটা ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.