অর্ণব দাস, বারাসত: দত্তপুকুরের বাজিতপুরের চাষের জমিতে হজরতের মুন্ডু কেটে ব্যাগে ভরে বামনগাছি স্টেশন লাগোয়া কচুপনা ভর্তি ডোবায় ফেলার পর নিশ্চিন্তে বাড়ি ফিরেছিল মহম্মদ জলিল গাজি। পরদিন ৩ ফেব্রুয়ারি ভোরে মুণ্ডুহীন দেহ উদ্ধারের পর খেতে পুলিশ ও গ্রামবাসীরা জড়ো হলে ভিড়ের মধ্যে উপস্থিত থেকে সবটার উপর নজরও রাখছিল ছিল সে। ভেবেছিল অকুস্থল থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে মুন্ডু ফেলে আসায় পুলিশ হদিশ পাবে না। তাই যখন মুণ্ডুহীন দেহ উদ্ধারের ঘটনায় তোলপাড় পড়ে গিয়েছে, তখন নিশ্চিন্তে স্ত্রীর সঙ্গে বাড়িতেই স্বাভাবিক জীবন কাটাচ্ছিল। কিন্তু তাল কাটে হজরতের স্ত্রীর রাতের ফোনে। জলিলের স্ত্রী সুফিয়াকে ফোন করে সে স্বামীর খোঁজ জানতে চায়।
কারণ, ঘটনার দিন বাড়ি থেকে বেরনোর সময় হজরত তার স্ত্রীকে জলিলের বাড়ি যাচ্ছে বলেই জানিয়েছিল। কিন্তু জলিল বাড়িতে নেই এমনকি হজরতের বিষয়েও জানে না এমনটা সুফিয়া জানানোর পরই জম্মুতে যাওয়ার পরিকল্পনা নেয় অভিযুক্ত। সেইমতো ৪ ফেব্রুয়ারি সকালের বামনগাছি রেলস্টেশন থেকে ট্রেন ধরে কলকাতা স্টেশনে পৌঁছে সেখান থেকে ট্রেনে করেই জম্মু পৌঁছয় জলিল। তবুও মোবাইলে সারাক্ষণ খবরের দিকে নজর ছিল তার। সুফিয়ার সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ কলেও এই বিষয়ে খবর নিত সে। শেষে সুফিয়া গ্রেপ্তার হলে জম্মুর প্রথম আস্তানা পালটে পাকিস্তান সীমান্ত সংলগ্ন সাম্বা গ্রামে আশ্রয় নেয় মূল অভিযুক্ত। এই সংক্রান্ত তথ্য ইতিমধ্যেই পুলিশের হাতে এসেছে।
পাশাপাশি মুন্ডু উদ্ধারের দিন পুলিশ ও সংবাদমাধ্যমের সামনে জলিলের স্বীকারোক্তি যাচাই করেছেন তদন্তকারীরা। তাতে উঠে এসেছে বখরা ভাগ নিয়ে বিবাদ সহ স্ত্রী সুফিয়ার সঙ্গে বিকৃত যৌনাচারের তত্ত্ব। খুনে ব্যবহৃত হাতুড়ি ও ধারালো অস্ত্রও উদ্ধার করেছে পুলিশ। যদিও সুফিয়ার বয়ান অনুযায়ী মঙ্গলবারের পর বুধবারও বামনগাছি স্টেশন সংলগ্ন নয়নজুলি খালে পাম্প লাগিয়ে জল সেচেও হজরতের মোবাইলের খোঁজ মেলেনি। এদিনই ধৃত সুফিয়া খাতুন ও ওবায়দুল গাজিকে বারাসত জেলা আদালতে তোলা হয়েছিল। সুফিয়াকে দু’দিনের পুলিশ হেফাজত এবং ওবায়দুলকে সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.