Advertisement
Advertisement

Breaking News

দুর্গাশ্লোক, চণ্ডীপাঠ শিখতে টোলে দৌড়চ্ছেন পেশাদার পুরোহিতরা

নতুন প্রজন্মের উৎসাহ চোখে পড়ার মতো।

Now training camp for priests on Durga Puja
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:September 21, 2017 3:17 pm
  • Updated:September 28, 2019 1:14 pm

চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: মহালয়ার তর্পণ থেকে দুর্গাপুজো। বাংলার পুরোহিতরা যজমানদের ডাকে পৌরহিত্য করলেও প্রতিযোগিতার মুখে পড়েছে তাঁরাও। বিয়ের মন্ত্র থেকে দুর্গা শ্লোক একই ছন্দে শুনতে চাইছেন না কেউ। মহালয়ার ভোরে বীরেন্দ্রকৃষ্ণের চণ্ডীপাঠ এখনও মন্ত্রমুগ্ধের মতো শোনেন বাঙালি। পুজো উদ্যোক্তারা চাইছেন পুজোর চারটে দিন মণ্ডপে মন্ত্রোচারিত হোক ঠিক সেই ধারায়। নিত্যপুজো থেকে দুর্গাপুজো করেন যাঁরা সেই পুরোহিতরা সময়ের দাবি মেনে তাঁরাও এখন ছুটছেন টোল-সংস্কৃতির পাঠশালায়। দুর্গাপুজোর মুখে বেদ, বেদান্ত, স্মৃতি, ন্যায়শাস্ত্র, ব্যকরণ শিক্ষা নিয়ে এখন ব্যস্ত খনি শিল্পাঞ্চলের পুরোহিতরা। সালানপুরের এথোড়া গ্রামে চক্রবর্তীদের দুর্গামন্দির শুরু হয়েছে এই চতুষ্পাঠী টোল।

[অশুভ বিনাশে এবার পুজোয় ‘অসুর’ ধর্ষক বাবা রাম রহিমই]

Advertisement

চণ্ডীমণ্ডপে প্রতিমা গড়ে চলেছেন মৃৎশিল্পী। তার পাশে ধুতি-পাঞ্জাবি পরে শুদ্ধ সংস্কৃত উচ্চারণে পুরোহিতরা বসে পাঠ করছেন দুর্গা শ্লোক। ছোরা বোপদেব চতুষ্পাঠীর টোল পণ্ডিত কার্তিক মুখোপাধ্যায় তাঁদের শেখাচ্ছেন দুর্গাপুজোর কল্প, কর্ম, আর গুণ ভেদের পাঠ। শুধু পুরোহিতরাই নয় এই প্রজন্মের পড়ুয়ারও নিয়ম করে আসছেন টোলে। চণ্ডীপাঠের সময় ভিড় জমাচ্ছেন স্থানীয়রাও।শ্রীরামকৃষ্ণদেব শৈশবে ব্রাহ্মণ সমাজের প্রচলিত সংস্কৃতি শিক্ষাকে “চাল-কলা-বাঁধা-বিদ্যা” বলে উপহাস করেছিলেন। টোল পণ্ডিত কার্তিকবাবু বলেন, এই বিদ্যা থেকে বেরিয়ে এসে প্রফেশনাল পুরোহিতরাও প্রকৃত শিক্ষা নেওয়ার জন্য টোলে আসছেন। সংস্কৃত এমন একটা ভাষা যা অতি সমৃদ্ধ ও প্রাচীন তাকে অবহেলা করাটা সভ্যতারই ক্ষতি। অথচ অনেক আধুনিক শিক্ষার বীজমন্ত্র লুকিয়ে আছে এই সংস্কৃত ভাষার অন্দরে। পশ্চিম বর্ধমানে একমাত্র চতুষ্পাঠী টোল তিনি চালাচ্ছেন।

Advertisement

[‘বাহুবলী’ থিম চুরির অভিযোগ, এবার পুজোয় বাড়তি উত্তাপ]

PUJO-TRAINING.jpg-1

চতুষ্পাঠী শিক্ষা নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গল্পে বর্ধমানের বিজয় চতুষ্পাঠীর উল্লেখ পাওয়া যায়। ১৩০৬ বঙ্গাব্দে যা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ২০০২ সালে ছোরা বোপদেব চতুষ্পাঠীর তিনটি শাখা তৈরি হয়েছে। সংস্কৃত শিক্ষাকে নতুন প্রজন্ম আবার আপন করে নিচ্ছে বলেই ভালো সাড়া পাওয়া গেছে বলে পন্ডিতমশাই জানান। এমনিতে সারা বছরই নানা পাঠ চলে তবে দুর্গাপুজোর আগে স্পেশাল ক্লাস শুরু হয়েছে। পাঠ দেওয়া হচ্ছে ৭ টি কল্পের প্রকারভেদের। স্নান পুজো বলি ও হোমের চতুষ্কর্মীয় কর্মভেদ শেখানো হয়েছে। পুরোহিতদের জন্য রয়েছে ‘পৌরহিত্য বার্তা’। এগুলি সবই দুর্গা পুজোর পাঠ। সঙ্গে রয়েছে মহিষাসুরমর্দিনী চণ্ডীন্ডীপাঠ। টোলে পাঠরত পেশাদার পুরোহিত শিবনাথ ভট্টাচার্য বলেন এখানে এসে তিনি সমৃদ্ধ হয়েছেন। বংশপরম্পরায় পৌরহিত্য করলেও চতুষ্পাঠী টোলে এসে তিনি প্রকৃত শিক্ষা পাচ্ছেন। টোলের পন্ডিত জানান বিভিন্ন পুজো কমিটি তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তাঁদের ছাত্রদের নিয়ে যাচ্ছেন বুকিং করে। কারণ শুদ্ধ মন্ত্র উচ্চারণের লয়-ছন্দে কান তৈরি হয়েছে সবার। সেটাই সবাই লাইভ শুনতে চাইছেন এখন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ