বিপাকে পড়েছেন বৃদ্ধ দম্পতি। নিজস্ব চিত্র
সঞ্জিত ঘোষ, নদিয়া: আবাসের প্রথম কিস্তির টাকা পাওয়ার পর কপালে হাত ঠেকিয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জ থানার স্বর্ণখালির চক শ্যামনগর গ্রামের বাসিন্দা বৃদ্ধ দম্পতি রঞ্জিত বিশ্বাস ও সুচিত্রা বিশ্বাস। ভেবেছিলেন, বিড়ি বেঁধে দিন আনি দিন খাইয়ের সংসারে এবার হয়তো একটা পাকাপোক্ত মাথার ছাদ হবে তাঁদের। কিন্তু, তা ভাবাই সার।
টাকা পেয়ে ইট, বালি, সিমেন্টের জোগাড় করতে আচমকাই বিডিওর তরফে নোটিস আসে, ঘরের টাকা ফেরত দিয়ে দিতে হবে। কারণ, তাঁরা নাকি ভুল তথ্য দিয়ে টাকা পেয়েছেন। এসব শুনে মাথায় হাত অসহায় বৃদ্ধ দম্পতির। সরকারের দেওয়া টাকা ফিরিয়ে দিতে হবে বলে দুশ্চিন্তায় খোলা আকাশের নিচেই দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা। বৃদ্ধের অভিযোগ, তিনি বিজেপি করেন বলেই সরকার থেকে তাঁর আবাসের টাকা ফেরাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ষাটোর্ধ্ব দম্পতি রঞ্জিত ও সুচিত্রা বিশ্বাস বিড়ি বেঁধে দিন গুজরান করেন। ছেলেমেয়েরা বিয়ের পর আলাদা হয়ে গিয়েছেন। এতদিন তাঁদের টিনের চালের বাড়ি ছিল। সেখানেই থাকতেন বৃদ্ধ দম্পতি। বাংলা আবাস যোজনায় নাম তালিকাভুক্ত হওয়ার পর প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকাও ঢোকে তাঁদের অ্যাকাউন্টে। টাকা ঢোকার পর পুরনো টিনের ঘরটি চার হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন তাঁরা। কিনে ফেলেন বাড়ি তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম।
এই অবস্থায় হঠাৎই তাঁদের নোটিস পাঠিয়ে টাকা ফেরতের নির্দেশ দিয়েছেন বিডিও। টাকা ফেরত না দিলে তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হবে বলেও জানিয়েছেন। নোটিস পেয়ে বিপাকে পড়েছেন তাঁরা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দম্পতির ছেলের পাকা বাড়ি রয়েছে। সেই যুক্তি দিয়ে টাকা ফেরত চাওয়া হচ্ছে। যদিও, বৃদ্ধের অভিযোগ, তিনি বিজেপি করেন বলেই এই আক্রোশ। এ বিষয়ে কৃষ্ণগঞ্জের বিডিও সৌগত সাহা এবং কৃষ্ণগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কাকলি দাস কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি। তবে, কৃষ্ণগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি অনুপ দাস জানান, আবাসের সার্ভে করেছিলেন সরকারি আধিকারিকরা। তাঁরাই এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.