Advertisement
Advertisement
Pahalgam Terror

পহেলগাঁওয়ে নিহত মণীশরঞ্জনের বাড়িতে NIA, বয়ান রেকর্ড স্ত্রীর, স্কেচ দেখে জঙ্গিদের শনাক্ত করল ছেলে

ইতিমধ্যেই রাজ্যের অপর দুই মৃত পর্যটকের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছে NIA।

Pahalgam Terror: NIA officers Questions killed IB officers wife

মণীশরঞ্জন মিশ্রের বাড়িতে এনআইএ। ছবি: অমিতলাল সিং দেও।

Published by: Subhajit Mandal
  • Posted:April 29, 2025 11:04 pm
  • Updated:April 29, 2025 11:04 pm  

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ঠিক এক সপ্তাহ আগের হাড়হিম করা ঘটনার প্রায় পুঙ্খানুপুঙ্খ এনআইএর সামনে তুলে ধরলেন নিহত আইবি অফিসারের স্ত্রী জয়া দেবী। পুরুলিয়ার ঝালদার বাসিন্দা তথা আইবি অফিসার মণীশরঞ্জন মিশ্রের বাড়িতে মঙ্গলবার বিকাল ৪টা ৪০ নাগাদ পা রাখে ওই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার প্রতিনিধি দল। গত ২২ এপ্রিল দুপুরে কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার পহেলগাঁওয়ের বৈসরনে ঘটে যাওয়া জঙ্গি হানার বিবরণ নিহত মনীশরঞ্জনের স্ত্রীর কাছ থেকে শোনে ওই তদন্তকারীদের দল।

কীভাবে ওই আইবি অফিসারকে জঙ্গিরা গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেয়। তার সব দিক জানতে চান তারা। প্রায় ১০ থেকে ১২ মিনিট ধরে জয়া দেবী সেদিনকার ঘটনা যেভাবে তুলে ধরেন সেই বয়ান রেকর্ড করে এনআইএ। একইভাবে তারা নিহতের ১২ বছরের ছেলে সায়নের কাছ থেকেও ওই ঘটনার বিবরণ নেন। তবে তার কোন বয়ান রেকর্ড করা হয়নি। তবে এই বিষয়ে এনআইএর আধিকারিকরা একটি কথাও বলতে চাননি।

Advertisement
Pahalgam Terror: NIA officers Questions killed IB officers wife
মণীশরঞ্জন মিশ্রের বাড়িতে এনআইএ। ছবি: অমিতলাল সিং দেও।

গত শনিবার বেহালার শখের বাজারের বাসিন্দা নিহত সমীর গুহর বাড়িতে যায় ওই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। রবিবার যায় নিহত বিতান অধিকারীর বৈষ্ণবঘাটার বাড়িতে। এরপর গত সোমবার পুরুলিয়ার ঝালদায় মণীশরঞ্জনের বাড়িতে ওই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আসার কথা ছিল। কিন্তু মণীশরঞ্জনের স্ত্রী জয়া দেবী অসুস্থ হয়ে যাওয়ার কারণেই ওই দল ওই দিন আসেননি। যদিও গত শুক্রবার এনআইএর তরফে নিহত মণীশরঞ্জনের পরিবারে জানানো হয় তারা সোম অথবা মঙ্গল দু’দিনের মধ্যে আসবেন। এদিন ওই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তিন প্রতিনিধির দল সবার প্রথমে নিহতের ১২ বছরের ছেলে সায়নের সঙ্গে কথা বলে। একেবারে আদরের সুরে ওই ঘটনার কথা জানতে চান। ওই কেন্দ্রীয় সংস্থার সায়নকে প্রশ্ন ছিল ওই দিন জঙ্গিরা কজন ছিল? কোন পথ দিয়ে আসে? সেই সময় সায়ন কী করছিল? তার বোন কোথায় ছিল? তার মা কী করছিল? তার বাবা কোন দিকে ছিল? সমস্ত প্রশ্নের উত্তর সায়ন সঠিক ভাবেই দেয় বলে পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে। সায়ন ওই তদন্তকারী সংস্থাকে জানায়, সে বোনের সাথে গাছের নিচে খেলা করছিল। তার মা ছিল মোবাইলে ব্যস্ত। তার বাবা ছিল গাছের উলটোদিকে। ওই হামলায় জড়িত জঙ্গিদের একটি স্কেচ তৈরি করেছে এনআইএ। সেই ছবি সায়নকে দেখানো হয়। ছবি দেখে সায়ন বলে, এটা যদি রঙিন হতো তাহলে সে সহজেই চিনতে পারতো। তবে জঙ্গিদের মুখ অনেকটা এরকমই ছিল। সায়নের সঙ্গে কথা বলার পরেই ওই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তার মায়ের সাথে কথা বলতে চান। কিন্তু পরিবারের তরফে আপত্তি আসে। জানানো হয় নিহতের স্ত্রী জয়া দেবী একেবারেই সুস্থ নন। কিন্তু ওই তদন্তকারী সংস্থা বলে, তাদেরকে জয়া দেবীর সঙ্গে কথা বলতেই হবে। তবে এমন ভাবে তারা কথা বলবেন যাতে জয়া দেবীর কোন খারাপ না লাগে।

সায়নকে প্রশ্ন করার সময় তার কাকু রাহুলরঞ্জন যেমন ছিলেন। তেমনি জয়া দেবীকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় তার শ্বশুর মঙ্গলেশ মিশ্র হাজির থাকেন। আগে থেকে ওই সংস্থার আধিকারিকরা বলে দিয়েছিলেন, জিজ্ঞাসাবাদের সময় উপস্থিত থাকা কেউ যাতে কোন কথা না বলেন। ওই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে জয়া দেবী জানান, জঙ্গি হামলার বিপদ বুঝেই তার স্বামী ১০ থেকে ১২ জন পর্যটককে সেফ প্লেসে নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু জঙ্গিদের নজরে পড়তেই গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যান। তাঁর আক্ষেপ, বিপদ বুঝে তিনি যদি আগে সতর্ক হতেন। তাহলে এই ঘটনা ঘটত না। পরিবারের তরফে নিহত আইবি অফিসারের ভাই রাহুলরঞ্জন বলেন, “প্রথমে আমার ভাইপো তারপর বৌদিকে ওই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দল জিজ্ঞাসাবাদ করে। তবে ভাইপোর বয়ান রেকর্ড করেনি। বৌদির বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে।”

ওই কেন্দ্রীয় দল প্রায় দু’ঘণ্টা মণীশরঞ্জনের বাড়িতে ছিল। নিহত আইবি অফিসারের বাবা মঙ্গলেশ মিশ্র বলেন, “আমাদের বাড়িতে কে আসছে কে যাচ্ছে আমার এসব কিছু দেখার দরকার নেই। আমি এই ঘটনার বিচার চাই। সেই বিচার দেখবো বলেই আমি বেঁচে আছি। কোন রকম বিলম্ব না করে অবিলম্বে জঙ্গি দমন শুরু হোক।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement