অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: বিমল গুরুং কি তাহলে ফের বিজেপির (BJP)দিকে ঝুঁকছেন? পাহাড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনে (Panchayat Election) তাঁর দল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা এবার হামরো পার্টি ও বিজেপির সঙ্গে জোট করতে চলেছে। শনিবার এবিষয়ে শিলিগুড়িতে বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তার সঙ্গে বৈঠকও করেন বিমল গুরুং (Bimal Gurung)ও অজয় এডওয়ার্ড। এছাড়া এদিন দার্জিলিংয়ের সাংসদ তাঁদের জোটসঙ্গী জিএনএলএফ, সিপিআরএম, অখিল ভারতীয় গোর্খা লিগ-সহ আরও কিছু আঞ্চলিক দলের সঙ্গেও বৈঠক করেন। তার লক্ষ্য মহাজোট করে পাহাড়ে পঞ্চায়েত দখল করা। রাজু বিস্তা বলেন, “এটা পৃথক রাজ্যের জন্য নির্বাচন নয়। এই নির্বাচন গ্রামীণ এলাকার উন্নয়নের জন্য। তাই আমরা পাহাড়ের স্বার্থে মহাজোট করতে চাই।”
পাহাড়ে পরপর তিনবার লোকসভা নির্বাচনে (Loksabha Election) জিতলেও সাংগঠনিকভাবে দুর্বল বিজেপি। এখন তো আবার তাদের ওপর আস্থাও হারিয়েছে পাহাড়বাসী। তাই প্রায় ৮০০আসনে প্রার্থী দেওয়ার ক্ষমতা বিজেপির নেই। এ কারণেই তাঁরা অনীত থাপা বাদে বাকি দলগুলোর সঙ্গে জোট করতে চাইছে। নিজেদের দুর্বলতা ঢাকতে রাজু বিস্তার মন্তব্য, ”বিজেপির পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ কম। আমাদের লক্ষ্য লোকসভা নির্বাচন। এটা আঞ্চলিক দলগুলোই লড়বে।”
[আরও পড়ুন: ‘অশান্তিতে জড়াবেন না’, পঞ্চায়েতের মনোনয়ন পর্বে ঝামেলা নিয়ে কড়া বার্তা অভিষেকের]
শনিবার শিলিগুড়ি (Siliguri) সংলগ্ন মাটিগাড়ার খাপরাইলে সাংসদ রাজু বিস্তার বাসভবনে জোট সঙ্গীদের নিয়ে একটি গোপন বৈঠক আয়োজিত হয়। সকাল থেকে দীর্ঘক্ষণ ওই বৈঠক চলে। বৈঠকের পর সাংসদ রাজু বিস্তা বলেন, “আজ সব জোটসঙ্গীদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। এই নির্বাচনে আমরা সবাই একজোট হয়ে লড়ব। অন্য রাজনৈতিক দলগুলিকেও আমাদের সঙ্গে আনা যায় কিনা সেই বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।” এরপরই প্রার্থীর বিষয়ে তিনি বলেন, “আমাদের জোট সঙ্গীরা যে যেখানে শক্তিশালী তারা নিজেদের প্রতীকে সেখানে লড়বে। এটা আমার পক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয় যে ৮০০ প্রার্থী কোথায় থেকে লড়বে। মণ্ডল ও স্থানীয় স্তরে সেই সিদ্ধান্ত নিতে বলেছি। তারা নিজেরা আলোচনা করে সেই সিদ্ধান্ত নেবে। কারণ এটা কোনও বিধানসভা বা লোকসভা নির্বাচন নয়। গ্রামের নির্বাচন। গ্রামের লোকেরাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে।”
[আরও পড়ুন: ‘আমার ২০০ কোটির সম্পত্তি তো ইডির কী?’, আম্বানি-আদানির উদাহরণ টানলেন ‘কালীঘাটের কাকু’]
অন্যদিকে, জিএনএলএফ (GNLF) মুখপাত্র তথা বিধায়ক নীরজ জিম্বা বলেন, “বৈঠকের কোন চূড়ান্ত ফল বের হয়নি। আগামীতে আরও বৈঠক হবে। জোট আরও বাড়ার প্রস্তাব এসেছে। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চাও (GJM) আমাদের সঙ্গে আসতে চাইছে।” হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ড বলেন, “এটা প্রাথমিক আলোচনা। চূড়ান্ত কিছু হয়নি।” প্রসঙ্গত, দার্জিলিং জেলায় ৫৯৮ টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসন ও ১৫৬ টি পঞ্চায়েত সমিতির আসন। অন্যদিকে কালিম্পং (Kalimpong) জেলায় ২৮১ টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও ৭৬ টি পঞ্চায়েত সমিতির আসন রয়েছে। সব মিলিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতেই প্রায় ৮০০ বেশি আসনে নির্বাচন হতে চলেছে।