খিচুড়ির বদলে ফেনাভাত নিয়ে অভিভাবকদের বিক্ষোভ।
রমণী, তেহট্ট: অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে গাছতলায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। খোলা আকাশের নিচে সেখানেই হচ্ছে রান্না। আর শিশু ও মায়েদের খিচুড়ির বদলে দেওয়া হচ্ছে ফেনাভাত। এই অভিযোগেই খাবার নিতে অস্বীকার অভিভাবকদের। আজ শুক্রবার বিক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সুপারভাইজার ও সিডিপিও। তাঁদেরকে ঘিরেও চলে বিক্ষোভ।
এদিন ঘটনাটি ঘটেছে কালীগঞ্জ থানার বড় চাঁদঘর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ডুবতলা পাড়ার ১১৭ নম্বর অঙ্গনওয়াড়িতে। অভিযোগ, ওই কেন্দ্রের কোনও ঘর নেই। একটি বট গাছের নিচে অস্বাস্থ্যকর জায়গায় উনান ধরিয়ে হয় রান্না। ঠিকমত দিদিমণি আসেন না। ঘর বা বসার জায়গা না থাকায় বন্ধ পড়াশোনাও। পাশাপাশি ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে শিশু ও প্রসূতিদের যে খাবার দেওয়া হয় তা অত্যন্ত নিম্নমানের। খিচুড়ির বদলে দেওয়া হয় জলের মতো সাদা রংয়ের ফেনাভাত। তাতে না আছে কোনও সবজি বা ডাল। এমনকি হলুদও থাকে না, কেবলমাত্র জল ও নুন দিয়ে চাল ফুটিয়ে ফেনা ভাত তৈরি করা হয়। ডিম দেওয়ার কথা থাকলেও তা নিয়মিত দেওয়া হয় না। অভিভাবকেরা খাবার আনতে এসে দেখেন খিচুড়ির বদলে দেওয়া হচ্ছে ফেনা ভাত। এরই প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা।
অভিভাবকদের মধ্যে রেহানা মণ্ডল, রিংকি খাতুনরা জানান, “সেন্টারে কোনও ঘর নেই। গাছতলায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে হয় রান্না। এই খোলা আকাশের নিচে রান্না হওয়ার ফলে যেকোনও সময় উপর থেকে বিষাক্ত কিছু পড়ে খাবারে মিশলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এদিকে, দিদিমণি ঠিকমতো আসেন না, পড়াশোনার বালাই নেই, সপ্তাহের বেশিরভাগ দিন দেওয়া হয় ডাল, হলুদ, তেল, সবজি ছাড়া ফেনা ভাত। তাই সেন্টারের ঘর, সঠিক খাবার ও শিশুদের পড়াশোনার দাবিতে আজকে আমাদের এই বিক্ষোভ। এতেও সমস্যার সমাধান না হলে সমস্ত মায়েরা একত্রিত হয়ে এর চাইতেও বড় ধরনের আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।”
এনিয়ে সিডিপিও নিকিতা আগারওয়াল জানান, “সমস্ত ঘটনা আমি আগে থেকেই জানি। এই সেন্টারে অনেক সমস্যা রয়েছে, ঘর নেই, খোলা আকাশের নিচে রান্না হচ্ছে, পড়াশোনা কোনওদিনই হয় না, মায়েদের যে পরিমাণে খাবার দেওয়ার কথা তাও তারা পায় না। আমি কাজে যোগদান করার সঙ্গে সঙ্গে সফল কেন্দ্রের দিদিমণিদের বলে দিয়েছি খোলা আকাশের নিচে কোনওভাবে রান্না করা যাবে না। প্রত্যেক কেন্দ্রে খাদ্যের তালিকা পাঠানো হয়েছে, এদের কাছে সেই তালিকাটাও নেই। এর আগেও এই কেন্দ্রের দিদিমণিকে খাবারের মান ঠিক করার জন্য সতর্ক করেছি, তারপরেও এই ঘটনা।” বিষয়গুলো তিনি গুরুত্বসহকারে দেখবেন বলে আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। তিনি আরও বলেন, কেউ যদি একটু জমি দান করেন তাহলে সেই জায়গায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কিংবা ভিডিও এর কাছে আবেদন করে একটি ঘরের ব্যবস্থা করা হবে। যতদিন ঘরের ব্যবস্থা না হচ্ছে ত্রিপল দেওয়া হয়েছে। সেই ত্রিপল খাটিয়ে তার নিচে রান্না করতে হবে এবং রান্নার গুণগত মান সরকারের নির্দেশিকা অনুযায়ী ঠিক রাখতে হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.