Advertisement
Advertisement

Breaking News

ট্রানজিট সেন্টার

বাসের অপেক্ষায় ট্রানজিট সেন্টারে ৫ ঘণ্টা, জল-খাবার না পেয়ে ক্ষোভ রোগীর পরিবারের

ভোররাতেই ফেসবুক লাইভ করে সুরাহা পেলেন ভেলোর থেকে আসা ৬২ জন যাত্রী।

People coming from Vellore agitate in Purulia Transit Centre
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:May 14, 2020 7:18 pm
  • Updated:May 14, 2020 7:18 pm

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ‘ট্রানজিট সেন্টার’-এ এসেও যানবাহন না পাওয়ায় রোগীদেরকে নিয়ে পাঁচ ঘন্টা আটকে রইল তাদের পরিবার। সেখানে জল, কোনও খাবার না পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। এই ঘটনায় পুলিশের সঙ্গে বচসা, ক্ষোভ-বিক্ষোভে ভোররাতেই ফেসবুক লাইভ করে সুরাহা পেলেন ভেলোর থেকে আসা ৬২ জন যাত্রী।

বুধবার রাত আড়াইটের সময় ভেলোর থেকে খড়গপুর হয়ে পুরুলিয়ার ৬২ জন দুটি সরকারি বাসে দেবেন মাহাতো গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের হাতোয়াড়া ক্যাম্পাসে আসেন। ভিনরাজ্যে আটকে থাকা মানুষজনকে ঘরে ফেরাতে পুরুলিয়া ট্রানজিট রুট হওয়ায় তার অন্যতম সেন্টার ওই মেডিক্যাল কলেজের হাতোয়াড়া ক্যাম্পাস। কিন্তু তাদের বিভিন্ন থানা এলাকায় বাড়ি পৌঁছানোর জন্য কোনও যানবাহনের বন্দোবস্ত না হওয়ায় মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত রোগী নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েন। অভিযোগ, হাতোয়াড়া ক্যাম্পাসে থাকা পুলিশকে বলেও কোন কাজ হয়নি। তখন তারা তুমুল বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। ভোররাতেই ওই ‘ট্রানজিট সেন্টার’-এর ক্যাম্পাস থেকেই তাঁরা রোগীদেরকে নিয়ে ফেসবুক লাইভ শুরু করে দেন। ততক্ষণে অবশ্য বিষয়টি কানে চলে যায় জেলা প্রশাসনের।

Advertisement

তারপরে সকাল আটটা বাজার আগেই তাদেরকে তিন মহকুমা এলাকার জন্য বাড়ি পৌঁছে দিতে রওনা দেয় তিনটি বেসরকারি বাস। পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ভেলোর থেকে এই যাত্রীদের জেলায় আসার কোন খবরই ছিল না। তাই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়। তাছাড়া এদিন সকালে নিউ জলপাইগুড়িতে যাওয়া একটি ট্রেন পুরুলিয়া স্টেশনে স্টপেজ দিতে পারে সেইজন্য সেখানে বাসের ব্যবস্থা করা হয়। ফলে ওই সময় আর বাস পাওয়া যাচ্ছিল না। জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, “কিছুক্ষণ তাঁদেরকে অপেক্ষা করতে হয়। তবে তারপর তাদের সকলকেই বাসে করে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।”

Advertisement

এই ৬২ জন যাত্রী সকলেই লকডাউনে তামিলনাড়ুর ভেলোরে আটকে ছিলেন। এরা সকলেই চিকিৎসার জন্য সেখানে যান। কেউ কিডনির রোগী। কারও আবার হার্টের সমস্যা। আবার কারও সাইনাসের। রাজ্য সরকার তাঁদের ফেরাতে ভেলোরের কাছে কাটপাডি স্টেশন থেকে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করে। ওই ট্রেনে বাংলার বিভিন্ন জেলার রোগী ও তাঁর পরিবার ছিল। গত মঙ্গলবার দুপুর বারোটা নাগাদ তাদের ওই ট্রেন ছাড়ে। বুধবার বিকেল সাড়ে তিনটা নাগাদ ওই ট্রেন খড়গপুরের কাছে হিজলিতে তাঁদের নামিয়ে দেয়। সেখানে সন্ধ্যে পর্যন্ত তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার শংসাপত্র দেওয়া হয়। দেওয়া হয় দু’দফায় খাবারও। রাত আটটা নাগাদ মেদিনীপুর ডিপোর দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের দুটি গাড়ি করে তাদেরকে নিয়ে রওনা হয়। রাত আড়াইটে নাগাদ তারা এই হাতোয়াড়া ক্যাম্পাসে আসেন।

সাঁতুড়ির বালিতোড়া সুদীপ্তা চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সেই মার্চ মাসে ভেলোরে চিকিৎসা করাতে গিয়ে লকডাউনে আটকে যাই। ওখানে প্রায় ২৫ হাজার টাকা হোটেল ভাড়া গুনতে হয়। ওই হোটেলেই রান্না করে ডাল-ভাত খাচ্ছিলাম। বাড়ি ফেরার জন্য আর তর সইছিল না। রোগী নিয়ে নিজের জেলায় এসে মধ্যরাতে আটকে যাওয়ায় মেজাজ হারিয়ে ফেলেছিলাম। তবে শেষমেশ প্রশাসনের জন্যই বাড়ি ফিরলাম।”

ছবি: সুনীতা সিং

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ