শুভঙ্কর বসু: কলকাতার নামী এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে উঠল যৌন হেনস্তার অভিযোগ। অভিযোগ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরে স্কুলেরই তিন শিক্ষিকাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন। গোটা ঘটনাটি নিয়ে ওই তিন নির্যাতিতা আলিপুর আদালতের দ্বারস্থ হন। আদালত রবীন্দ্র সরোবর থানার পুলিশকে গোটা ঘটনাটি তদন্ত করে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দিয়েছে।
জানা গিয়েছে, অভিযোগকারী ৩ শিক্ষিকা দীর্ঘদিন ধরে যৌন হেনস্তার অভিযোগ আনছিলেন। সেই অভিযোগকে নাকি গুরুত্ব দেয়নি স্কুলের পরিচালন সমিতি। উলটে ওই তিন শিক্ষিকাকে হুমকি দেন প্রধান শিক্ষক। তিনি সরাসরি বলেন, তিনি প্রভাবশালী ব্যক্তি। ‘উপরমহলে’ তাঁর চেনাজানা রয়েছে। অভিযোগ জানালে ফল ভাল হবে না। এই ঘটনার পরও একাধিকবার ওই শিক্ষিকাদের উপর চলে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন। শেষ পর্যন্ত ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায়। একাধিক জায়গায় অভিযোগ জানান তাঁরা। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক প্রভাব খাটিয়ে সমস্ত অভিযোগ নস্যাৎ করে দেন। শেষমেশ আলিপুর আদালতের দ্বারস্থ হন তিন নির্যাতিতা। আদালতের তরফে তাঁদের অভিযোগ শোনা হয়। রবীন্দ্র সরোবর থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পুলিশ যেন তদন্ত শুরু করে। ৩০ নভেম্বরের মধ্যে তদন্ত শেষ করে আদালতে রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
শিক্ষিকাদের আইনজীবী আনির্বাণ গুহঠাকুরতা জানিয়েছেন, বিশাখা গাইডলাইন অনুযায়ী যে কোনও প্রতিষ্ঠানে মহিলাদের নিরাপত্তার জন্য একটি কমিটি থাকা উচিত। কিন্তু এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমন কোনও কমিটি নেই। তাই এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টেও মামলা দায়ের করার কথা বলেছেন তিনি। এক নির্যাতিতা জানিয়েছেন, প্রধান শিক্ষক তাঁকে রিসর্টে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তিনি সটান ‘না’ করে দেন। অভিযোগ, তারপরই নাকি তাঁকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরেন অভিযুক্ত। কিন্তু তখনই অন্য এক শিক্ষিকা ঘরে ঢুকে আসায় বরাতজোরে রক্ষা পান তিনি। যদিও প্রধানশিক্ষক সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, কেন তাঁর বিরুদ্ধে কুৎসা রটানো হচ্ছে তা তিনি জানেন না। বুঝতেও পারছেন না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.