সৌরভ মাজি, বর্ধমান: মোবাইলে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতকে ছাড়ানোর দাবিতে থানায় হামলা চালানোর ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে আরও চারজনকে। শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীতে।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম গোলাম কুদ্দুস মল্লিক, সেলিম হোসেন শেখ, মদন মল্লিক, গোলাম নবি মল্লিক ও আলমগির মল্লিক। ধৃতদের বাড়ি পূর্বস্থলী থানার পিলা গ্রাম পঞ্চায়েতের পাঠানগ্রাম ও গাছা গ্রামে। শনিবার ধৃতদের পুলিশ কালনা মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়। বছর খানেক আগে কালনা মহকুমা এলাকায় ছেলেধরা গুজবে পরপর বেশ কয়েকটি গণপ্রহারের ঘটনা ঘটে। তার জের দুই জনের মৃত্যু হয়। তারপর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব রুখতে কড়া অবস্থায় নেয় জেলা পুলিশ ও প্রশাসন।
[দলীয় কর্মী খুনের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীকে কুরুচিকর আক্রমণ সেলিমের]
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি পূর্বস্থলী এলাকায় সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব ছড়ানো হচ্ছিল, বিহার থেকে লোকজন এসে ধরে নিয়ে গিয়ে কিডনে কেটে বিক্রি করে দিচ্ছে। তেমনই গুজব সংক্রান্ত বার্তা পুলিশের কাছে যায়। এমনকী পুলিশ-প্রশাসনের কাছেও সেই গুজবের বার্তা পৌঁছে যায়। তারপরই তদন্তে নেমে পুলিশ পাঠান-গ্রামের গোলাম কুদ্দুস মল্লিককে কয়েকদফায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। শুক্রবার তাকে গ্রেপ্তার করে পূর্বস্থলী থানায় নিয়ে আসা হয়। অভিযোগ, এরপরই এলাকা থেকে প্রচুর লোকজন এসে পূর্বস্থলী থানায় বিক্ষোভ দেখায়। ধৃতকে ছেড়ে দেওয়া দাবি করে।
পুলিশের দাবি, থানাতেও ভাঙচুর করা হয়। এরপরই পুলিশ ভাঙচুর ও হামলার অভিযোগে আরও চারজনকে রাতেই গ্রেপ্তার করে। যদিও গ্রামবাসীদের দাবি, থানায় কেউ ভাঙচুর করেনি। ধৃত গুজব ছড়ায়নি বলেও দাবি তাঁদের। গ্রামবাসীদের দাবি, ধৃত পুলিশকে বিষয়টি জানিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলে। যদিও পুলিশের দাবি, গুজব ছড়িয়ে এলাকায় অশান্তির পরিবেশ সৃষ্টি করা হচ্ছিল। তার জন্যই গ্রেপ্তার। আর তাকে ছাড়ানোর দাবিতে থানায় হামলা ও ভাঙচুর করায় আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বছর খানেক কালনা, পূর্বস্থলী-সহ বিভিন্ন এলাকায় গুজব ছড়িয়ে অশান্তি সৃষ্টি করা হয়েছিল। একের পর এক গণপ্রহারের ঘটনা ঘটে ছেলেধরা সন্দেহে। যার জেরে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে। বেশ কয়েকজন জখম হন। এরপরই সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব ছড়ানোর রুখতে কড়া অবস্থান নেয় প্রশাসন। সচেতনতার প্রচারও করা হয়।