Advertisement
Advertisement
Kim Davy

২৭ বছর পর সমাধানের পথে পুরুলিয়া অস্ত্রবর্ষণ মামলা! ডেনমার্ক থেকে শীঘ্রই ফিরছেন মূল অভিযুক্ত

কলকাতা নগর দায়রা আদালত ঘুরে দেখল ডেনমার্কের প্রতিনিধি দল।

Purulia Arms Drop Case Main Accused Likely To Be Extradited To India | Sangbad Pratidin
Published by: Kishore Ghosh
  • Posted:February 23, 2022 8:47 pm
  • Updated:February 23, 2022 9:08 pm

গোবিন্দ রায়: ২৭ বছর আগে পুরুলিয়া অস্ত্রবর্ষণ মামলায় (Purulia Arms Drop Case)  মূল অভিযুক্ত ডেনমার্কের (Denmark) নাগরিক নিয়েলস হলক ওরফে কিম ডেভির (Kim Davy) প্রত্যর্পণ মসৃণ হল। বিগত কয়েক বছর ধরেই তাঁকে বাগে পেতে জোরদার চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে নয়াদিল্লি। এতদিনে কিম ডেভির প্রত্যর্পণ কার্যত চূড়ান্ত হল। বিচারপর্বের জন্য তাঁকে ভারতে ফেরানোর অনুকূল পরিস্থিতি রয়েছে কিনা তা যাচাই করতে বুধবারই কলকাতা নগর দায়রা আদালতে ঘুরে গেলেন ডেনমার্কের একটি প্রতিনিধি দল। উল্লেখ্য, এর আগে ভারতের সংশোধনাগারের বেহাল দশার অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কিম। যার ফলে তার ভারতে প্রত্যর্পণ পিছিয়ে যায়।  

সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, এদিন আদালত ঘুরে দেখে ইতিবাচক কথাই জানিয়েছেন ডেনমার্কের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল। ফলে কিম ডেভিকে ভারতে ফেরানোর পথ প্রশস্ত হল বলেই মনে করা হচ্ছে। এদিন ডেনমার্কের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নবান্ন, লালবাজার ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআইয়ের (CBI) প্রতিনিধিরাও ছিলেন। সব মিলিয়ে ১১ জনের প্রতিনিধি দল খতিয়ে দেখেন আদালতের বিচার ভবনের পরিকাঠামো, নিরাপত্তা ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য পরিকাঠামো-সহ একাধিক বিষয়। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে তাঁরা আদালত চত্বর, এজলাস ঘুরে দেখেন। পরে নগর দায়রা আদালতের মুখ্য বিচারকের সঙ্গে দেখা করেন বলেও আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে। কিম ডেভিকে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার বিষয়ে ডেনমার্কের প্রতিনিধিরা সিবিআই-এর ডেপুটি ইনস্পেক্টর জেনারেল অখিলেশ সিংয়ের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন।

Advertisement

[আরও পড়ুন: লকডাউনে ফেসবুকে প্রেম, বিয়ের ছ’মাসের মধ্য়েই নিখোঁজ স্বামী, পোস্টার নিয়ে রাস্তায় স্ত্রী]

উল্লেখ্য, ১৯৯৫ সালের ১৭ ডিসেম্বর গভীর রাতে লাটভিয়ার একটি ছোট বিমান (অ্যান্টোনভ এএন‑২৬) থেকে পুরুলিয়ার ঝালদার সাতটি গ্রামে অস্ত্র বর্ষণ করা হয়। গোটা ঘটনার মাস্টারমাইন্ড কিম ডেভি। তাঁর সঙ্গী ছিলেন ব্রিটিশ নাগরিক পিটার ব্লিচ। বিমান থেকে ৩০০’র বেশি একে ৪৭ রাইফেল এবং ১৬ হাজার রাউন্ডের অধিক গুলি ফেলা হয়েছিল। এদেশের আকাশসীমা পেরনোর আগেই বিমানটিকে মাটিতে নামতে বাধ্য করে বায়ুসেনা। গ্রেপ্তার করা হয় পিটার ব্লিচকে। যদিও কিম ভারত সরকারের চোখে ধুলো দিয়ে চম্পট দেন। ঘটনার ১২ বছর পর, ২০০৭ সালে তাঁর হদিশ মেলে ডেনমার্কে। তারপর থেকেই তাঁকে ভারতে ফেরানোর চেষ্টা চলছে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা সংক্রমিত ২৭২ জন, পজিটিভিটি রেট ০.৮৫ শতাংশ]

সিবিআই সূত্রে খবর, গত ২০১০ সালের ৯ এপ্রিল কিমের প্রত্যর্পণে রাজি হয়েছিল ডেনমার্ক সরকার। কিন্তু ভারতের সংশোধনাগারের বেহাল দশার অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হন কিম। এমনকী পিটার ব্লিচও ডেনমার্কের উচ্চ আদালতে জানান এখানকার জেলের ব্যবস্থা ভাল নয়। তাতেই বেঁকে বসে সেদেশের সরকার। ২০০৭ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত ডেনমার্কের আদালতে টানা আ‌ইনি লড়াই চালিয়েছে ভারত। অবশেষে গত বছর কিমকে প্রত্যর্পণে সম্মত হয়েছে ডেনমার্ক।

তবে শর্ত দেয়, এই দেশে আর পাঁচজন বন্দির মতো কিম ডেভিকে রাখলে চলবে না এবং তাঁর জন্য সংশোধনাগারে বিশেষ ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে কোনওমতেই তাঁর সুরক্ষা বিঘ্নিত না হয়। সেই মতো এদিন পরিদর্শনে আসেন ডেনমার্কের প্রতিনিধিরা। শর্ত মেনে কিমকে ‘বিচারাধীন বন্দি’ হিসেবে সংশোধনাগারের বাইরে কোথাও রাখা যায় কি না, সেব্যাপারেও এদিন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা। সেক্ষেত্রে হাওড়ার কোনও গ্রামীণ এলাকায় ‘বিশেষ জেল’-এর পৃথক পরিকাঠামো গড়া হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। তবে ডেনমার্কের প্রতিনিধিদের রিপোর্টের উপরই নির্ভর করছে চূড়ান্ত প্রত্যর্পণ পর্ব।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ