সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: একদিনে ১০০ টনের বেশি! লেনদেন প্রায় কোটি টাকা। এই সংখ্যাতত্ত্ব দেখে কিছুটা অবাক হলেও এটাই কিন্তু সত্যি। সোমবার বসন্ত পঞ্চমীতে দেশি ও দক্ষিণী মাছের লড়াইয়ে তামাম পুরুলিয়ায় এটাই মাছ বিক্রির হিসাব। আজ, মঙ্গলবার অরন্ধন ষষ্ঠীতে বাসি ভাতে মাছ-ই যে মধ্যমণি। অর্থাৎ বাংলাদেশের মতো সাবেক মানভূমের মানুষও আজ বাসি ভাতে সাদা ভাতের চেয়ে মাছ বেশি খাবেন। তাই বাসি ভাতে থাকে মাছের হরেক পদ। রুই মাছের ঝাল, কাতলার কালিয়া, দই কাতলা, সর্ষে দিয়ে চারাপোনা, রুই পোস্ত, মাছের টক আরও কত কী।
তবে এই পরবে সাধারণত দেশি ও দক্ষিণী মাছের পদই থাকে বেশি। সামুদ্রিক মাছ সেভাবে বিক্রি না হলেও কিছু ব্যতিক্রমে বাগদা, গলদা চিংড়ি, সামান্য ভেটকি ও ইলিশের বেচাকেনা হয়। তবে জেলার নিরিখে শহরে অনেকটাই কম। শহর পুরুলিয়ার পাইকারি মাছ বিক্রেতা চন্দন ধীবর বলেন, ‘‘শুধুমাত্র পুরুলিয়া শহরেই সরস্বতী পুজোয় ৫০ থেকে ৬০ টন মাছ বিক্রি হল। সমগ্র জেলার হিসাব করলে সেটা কোথায় ঠেকবে জানি না। জেলার নিরিখে মাছের জন্য প্রায় কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে।’’
এদিন সকাল থেকেই শহর পুরুলিয়া, মানবাজার, শিল্পশহর রঘুনাথপুর, রেল শহর আদ্রা, ঝালদা-সহ ব্লক শহরগুলোতে মাছ কেনার জন্য রীতিমতো হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। দর-দাম করে দেশি মাছ বাড়ি নিয়ে যেতে মাছের বাজারে যেন হৈ-হট্টগোল বেঁধে যায়। তবে দেশির সঙ্গে দক্ষিণী মাছের লড়াই চলে বেশ জমজমাট। এবার পুরুলিয়া শহরে অন্যবারের তুলনায় দেশি মাছের আমদানি হয়েছিল অনেকটাই। এই দেশি মাছের দাম কেজি প্রতি ৩৫০-৪০০ টাকা থাকলেও বাঙালি এই মাছ ঘরে তুলতে যেন মরিয়া হয়ে উঠেছিল। তেমনই দক্ষিণ থেকে আসা ১৫০-২৫০ টাকা পর্যন্ত কাতলাও দেদার বিক্রি হয়েছে।
শহর পুরুলিয়ার বড়হাটে খুচরো শহর পুরুলিয়ার বড়হাটে মাছ কিনতে আসা অমর বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘‘আজকের দিনে বাড়িতে দেশি মাছ ছাড়া অন্য কি মাছ নেব! তাই ৪০০ টাকা কেজি দরে দেশি মাছ নিয়েছি।’’ মানবাজারের পোদ্দারপাড়ার বাসিন্দা অরুণ দত্ত বলেন, ‘‘দেশি মাছ একদমই পাইনি। তাই তিন কেজি অন্ধ্রের মাছই নিয়ে যেতে হয়েছে।’’ পুরুলিয়া শহরে দেশি মাছের এদিন আমদানি হলেও মানবাজার দক্ষিণের মাছ-ই বেশি বিক্রি হয়। শহর পুরুলিয়ার বড়হাটে এদিন প্রায় বিকাল পর্যন্ত মাছ বিক্রি হয়েছে। অন্যান্য দিন অবশ্য বেলা এগারোটার আগেই মাছের বাজারে ঝাঁপ পড়ে যায়। তবে এদিন ব্লক শহরগুলিতে সন্ধ্যার মুখেও দেদার মাছ বিক্রি হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.