Advertisement
Advertisement

Breaking News

পুরুলিয়ায় তীব্র শৈত্যপ্রবাহ, বন্যপ্রাণীদের উষ্ণ রাখতে চিড়িয়াখানায় ‘ডায়েট চেঞ্জ’

‘উষ্ণ অভ্যর্থনায়’ খানিকটা কষ্ট লাঘব অবলাদের।

Purulia zoo changes inmates’ diet as mercury dips
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:January 9, 2018 7:56 am
  • Updated:January 9, 2018 7:56 am

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: প্রবাদ আছে, মাঘের শীতে নাকি বাঘও কাঁপে! তবে, মাঘ আসতে এখন বেশ কয়েকদিন দেরি। কিন্তু তার আগেই প্রায় শেষ পৌষ কাঁপুনি ধরিয়েছে চিড়িয়াখানায়। ঝাড়খণ্ডের পাথুরে অঞ্চল লাগোয়া পুরুলিয়ায় গত চারদিন ধরে শৈত্যপ্রবাহ চলছে। তার ধাক্কায় ঠকঠক করে কাঁপছে পুরুলিয়া শহরে উপকন্ঠে থাকা সুরুলিয়া মিনি জু-র ভল্লুক, হরিণ, সাজারু, বাঁদররা। গত কয়েক দিন ধরে যেভাবে এই জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রিতে ঘোরাফেরা করছে, তাতে জবুথবু চিড়িয়াখানার বন্যপ্রাণ। হাড়হিম করা শীতে বন্যপ্রাণীদের চাঙ্গা রাখতে খাদ্যতালিকাও বদলে ফেলা হয়েছে।

[সারবে পেটের রোগ, বিশ্বাসে বক্রেশ্বর উষ্ণ প্রস্রবণে মেলা ভিড়]

Advertisement

গত ৪ জানুয়ারি থেকে শৈত্যপ্রবাহের কবলে পুরুলিয়া। জেলার তাপমাত্রা ৫-৬ ডিগ্রিতে ঘোরাফেরা করছে। মঙ্গলবার জেলার পারদ নামে ৬.২ ডিগ্রিতে। প্রবল ঠান্ডায় বন্যপ্রাণীদের শক্তিশালী রাখতে ভল্লুক, হরিণের ‘ডায়েট চেঞ্জ’ করেছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। আগে হরিণকে যেখানে শসা, লাউ, ঢেঁড়শ, কুমড়ো দেওয়া হত, এখন তাদের মেনুতে রয়েছে গাজর, বিট, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, বিনস। সেইসঙ্গে তাদের সুস্থ রাখতে খাবারে মেশানে হচ্ছে ক্যালসিয়ামের ওষুধ। এই চিড়িয়াখানায় ৪৮টি হরিণ রয়েছে। তার মধ্যে শাবক রয়েছে প্রায় ১৫টি। আর এই ঠান্ডায় শাবকদের স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে চিন্তায় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। তাদের রাতের থাকার জায়গায় রাখা হয়েছে পর্যাপ্ত খড় ও বস্তা।

Advertisement

[হরিশ্চন্দ্রপুরে এখনও পুকুর কাটছেন আড়াই বছর আগে মৃত ব্যক্তি!]

একইভাবে ভল্লুকের খাদ্যতালিকাও বদলে ফেলা হয়েছে। তরমুজ, আপেল, আঙুরের বদলে দেওয়া হচ্ছে গরম দুধ, ডিম ও রুটি। গ্লুকোজের জন্য আঙুরের বদলে রাখা হয়েছে খেজুর। চিড়িয়াখানার দায়িত্বপ্রাপ্ত রেঞ্জার নলিনাকান্ত মাহাতো বলেন, “যা শীত পড়েছে তাতে বন্যপ্রাণীদের স্বাস্থ্য নিয়ে আমরা বেশ চিন্তিত। এর জন্য একাধিক পশুর খাদ্য তালিকা আমরা বদলে দিয়েছি। রাতে ভল্লুক খাবারই খাচ্ছে না। একইভাবে খাবার থেকে মুখ ফেরাচ্ছে হরিণও। এই চিড়িয়াখানর মধ্যেই রাজ্যের একমাত্র ভল্লুক পুনর্বাসন কেন্দ্র রয়েছে। এর জন্য বিকাশ ও রানি নামের দুই ভল্লুককে রীতিমতো ভিআইপি পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে।”

PRL-HEAT-ZOO-2

[পাগল ছেলেকে ক্ষমা করতে পারেন শচীনই, কাতর আরজি দেবকুমারের পরিবারের]

ভল্লুকের পরিচর্যার যারা দায়িত্বে রয়েছেন তাঁদের কথায়, “এসময় ভল্লুকের ঘনঘন জ্বর আসে। সেজন্য বারবার তাদেরকে গরম দুধ খাওয়ানো হচ্ছে।” বাদর, হনুমানগুলিকে শুকনো ভাতের জায়গায় গরম ফেনা ভাত দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। সজারুদের লাউ, কুমড়োর বদলে খাওয়ানো হচ্ছে বিনস, গাজর। পেঁচা ও সারসের ডায়েটে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে মুরগির মাংসের পরিমাণ। এই ঠান্ডায় কার্যত নড়ছে না পাইথন। একেবারে নিস্তেজ। একটি মুরগি খেয়েই তার এক সপ্তাহ কেটে যাচ্ছে। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, “আবহাওয়া বদলের সঙ্গে সঙ্গে বন্যপ্রাণীদের খাদ্যতালিকায় বদল না ঘটালে তাদের সুস্থ, স্বাভাবিক রাখা যায় না। তাই নিয়ম করে চিকিৎসকরা চিড়িয়াখানায় আসছেন। তাঁদের পরামর্শ মতো ডায়েটে এই রদবদল।” বাঁকুড়া আবহাওয়া কেন্দ্রের আধিকারিক মধুসূদন পাত্র বলেন, “উত্তরের হাওয়ার দপাটে এমন কাঁপুনি ধরেছে। আপাতত এই হাড়হিম করা শীত থাকবে।” এই পূর্বাভাসে চিন্তা বাড়ছে চিড়িয়াখানার কর্মীদের। তাঁরা যথাসাধ্যভাবে পশুদের উষ্ণ রাখার চেষ্টা করছেন।

ছবি: সুনীতা সিং

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ