Advertisement
Advertisement

Breaking News

রাজধানী এক্সপ্রেস থেকে নিখোঁজ কর্মী, ক্ষতিপূরণ না মেলায় অসহায় স্ত্রী এখন পরিচারিকা

আইন না মানায় রেলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ইউনিয়নেরও।

Railway worker went missing for years, wife forced to work as maid
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:April 22, 2018 11:08 am
  • Updated:November 1, 2018 3:07 pm

সুব্রত বিশ্বাস: রেলকর্মী পাত্র। বড় আশায় বুক বেঁধে একদিন ওড়িশার চন্দনেশ্বর থেকে পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরে ডান্ডা বেলবনি গ্রামে ঘর বাঁধতে এসেছিলেন রাণুবালা মাইতি। স্বামী পূর্ণচন্দ্র মাইতি টিকিয়াপাড়ার সিনিয়র সেকশন ইঞ্জিনিয়ারের আওতায় এসিসি বিভাগের কর্মী। সুখের সংসারে দুই সন্তান নিয়ে দিন কাটছিল ভালই। ২০১৩ সালের ৩ মে রাজধানী এক্সপ্রেস নিয়ে দিল্লি যাওয়ার পথে কানপুর থেকে দিল্লির মাঝে ট্রেন থেকে নিখোঁজ হয়ে যান ৪৩ বছরের পূর্ণচন্দ্রবাবু। কর্তব্যরত অবস্থায় নিখোঁজ হলেও রেল শুধু দিল্লি স্টেশনে মিসিং ডায়েরি করেই দায় ঝেড়ে ফেলে। ব্যস, ওই পর্যন্তই। আর কোনওরকম পদক্ষেপ করেনি রেল বলে রাণুদেবীর আক্ষেপ। স্বামী নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পর রেণুদেবীকে বিভাগীয় ভাবে থানা ও সিআইডি বিভাগে মিসিং ডায়েরি করতে বলা হয়। কথামতো সেই কাজ করেও কোনওরকম ক্ষতিপূরণ পাননি রাণুদেবী। এমনকী পূর্ণচন্দ্রবাবু নিখোঁজ হন মে মাসে। সেই মাসেরও বেতন দেওয়া হয়নি।

 ১৫ বছরের মামলায় জয়, ৪৬ বছর পর পিতৃপরিচয় পেলেন সন্তান ]

Advertisement

30422340_1748822548510789_1516561188_n
রাণুদেবীর আক্ষেপ, রেলে চাকরি মানে জানতাম, সম্মান আর দায়িত্বই ওঁদের কাজের মাপকাঠি। তাই গ্রাম ছেড়ে ঘর করতে এসেছিলাম রেলকর্মীর সঙ্গে। আজ বুঝেছি মায়া-মমতাহীন এক জাঁতাকল পরিচালনার নামই রেল। শুধুই নিয়েছে, বিপদে পাশেও দাঁড়ায়নি। ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানী ছাড়ার সময় কথা হয় মোবাইলে। সাড়ে সাতটায় শেষ কথা। শুক্রবার আর কথা হয়নি, কারণ, শনিবারই বাড়ি ফেরার কথা ছিল। তাই ফোন করেননি রাণুদেবী। শনিবার এক অপরিচিত সহকর্মী ডান্ডা বেলবনি গ্রামে তাঁর বাড়ি এসে পূর্ণচন্দ্রবাবুর খোঁজ করে চলে গেলেও বিষয়টি জানাননি। সোমবার তৎকালীন সিনিয়র সেকশন ইঞ্জিনয়ার মিশ্রবাবুকে ফোন করে রাণুদেবী জানতে পারেন, স্বামী ট্রেন থেকে নিখোঁজ। রেল কর্মীরা দিল্লিতে মিসিং ডায়েরি করেছেন।

Advertisement

[  পাসপোর্ট পরীক্ষার নামে অন্তঃসত্ত্বাকে হেনস্তা, থানায় অভিযোগ দায়ের স্বামীর ]

30777156_1748825181843859_831998438_n
সেই সময় অস্থায়ীভাবে তিনি বেলুড় ধর্মতলা রোডে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। কিন্তু তারপর পরিবারের সব চিত্রটাই বদলে যায় রেলের চরম উদাসীনতায়, এমনটাই অভিযোগ করেন বাড়িওয়ালা শ্যামল ভাণ্ডারি। রাণুদেবী ছোট্ট দুই ছেলের হাত ধরে পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরে চলে যান। কোনওরকম ক্ষতিপূরণ না পেয়ে চরম দারিদ্রের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন রাণুদেবী। লোকের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করে কোনওমতে দিন কাটাচ্ছেন। বড় ছেলে উচ্চমাধ্যমিক দিয়েছে এবার। ছোট ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ছে। পূর্ব রেলের পার্সোনেল বিভাগ স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, আগে সাত বছর অপেক্ষার পর নিখোঁজ থাকলে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা ছিল। এখন তা কমিয়ে এক বছর করা হয়েছে। কর্তব্যরত অবস্থায় এক বছর নিখোঁজ থাকলেই সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ ও পোষ্যের চাকরি মেলে। হাওড়া পার্সোনেল বিভাগের কাজকর্মের তীব্র সমালোচনা করেন পূর্ণচন্দ্রবাবুর সহকর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ, চরম উদাসীন ওই দপ্তর। বহু সার্ভিস রেকর্ড হারিয়ে গিয়েছে। কর্তারা সব জেনেও কোনওরকম ব্যবস্থা না করায় সাধারণ কর্মীদের পরিবারগুলো হয়রান হচ্ছে। পূর্ব রেলের মেনস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সূর্যেন্দুকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “প্রকৃত তথ্য জমা দেওয়ার পর এমন হয়রানি প্রশাসনিক গাফিলতি। আমরা এই হয়রানির প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ