নবেন্দু ঘোষ, বসিরহাট: আত্মীয়র বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার নাম করে নাবালিকাকে শ্মশানে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেছিল তিন যুবক। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৷ মামলা প্রত্যাহার না করায় নির্যাতিতাকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল অভিযুক্তের পরিজনদের বিরুদ্ধে৷ এই ঘটনায় আবারও নতুন করে চাঞ্চল্য ছড়াল হাসনাবাদ থানার অন্তর্গত আশারিয়া গ্রামে৷
দিনটা ছিল ২৩ আগস্ট৷ ওইদিন নবম শ্রেণির ছাত্রী টিউশন পড়ে একা বাড়ি ফিরছিল৷ অভিযোগ, তখনই তার পথ আটকায় গ্রামবাসীরা। সেই দলে ধৃত সবুজের পরিজনরাও ছিল। অভিযোগ, আচমকাই ওই নাবালিকাকে মারধর শুরু করে প্রতিবেশীদের দল। অন্ধকারের মধ্যে এই সম্মিলিত আক্রমণে কিছুটা হকচকিয়ে গিয়েছিল নাবালিকা। তবে চেষ্টা করেও হামলা থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারেনি সে। এদিকে মেয়ের আক্রান্ত হওয়ার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন নির্যাতিতার বাবা। তাঁকে দেখেই প্রতিবেশীরা পিছু হটে। নাবালিকাকে তড়িঘড়ি টাকি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এখন সেখানেই চিকিৎসাধীন নির্যাতিতা। পায়ে চোট পেয়েছে সে।
[হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের নামে বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণের ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর]
নাবালিকার বাবা জানান, মাসতিনেক আগে এক দূর সম্পর্কের আত্মীয়ই মেয়েকে ধর্ষণ করে শ্মশানে ফেলে গিয়েছিল। পরে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করলে সে গ্রেপ্তার হয়। বেশ কিছুদিন ধরে ওই যুবকের মুক্তির দাবিতে পরিজনরা তাঁদের নানাভাবে বিরক্ত করছে বলে দাবি নির্যাতিতার বাবার। তাঁর অভিযোগ, ধর্ষণের মামলা প্রত্যাহারের জন্যও চাপ দেওয়া হচ্ছিল নির্যাতিতাকে। তবে সেই দাবি পাত্তা না দেওয়াতেই মেয়েকে অভিযুক্তের আত্মীয়রা বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ নির্যাতিতার বাবার৷
এদিকে গোটা ঘটনায় যখন প্রতিবেশীদের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলছেন নির্যাতিতার বাবা, তখন অন্য কথা বলছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। তাঁদের পালটা অভিযোগ, ওই নাবালিকার স্বভাবচরিত্র মোটেই ভাল নয়। বহু ছেলের সঙ্গেই সম্পর্ক রয়েছে তার৷ বুধবার রাতে মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফিরছিল ওই ছাত্রী। সেই সময় ইচ্ছে করেই রাস্তায় বেশ কয়েকজনকে বিরক্ত করে সে। গ্রামের পথে এক গৃহবধূর সঙ্গেও ধাক্কা লাগে তার। ওই গৃহবধূ কিছু বুঝে ওঠার আগেই নাবালিকা তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে বলে অভিযোগ। মারধরও করে। এদিকে চেঁচামেচির শব্দ শুনে বাসিন্দারা পথে বেরলেই দেখতে পান, টলতে টলতে বাড়ির দিকে চলেছে নাবালিকা। সঙ্গে সঙ্গেই মদ্যপ নাবালিকাকে বেধড়ক মারধর করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার সকালে গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান রোকেয়া বেগমকে জিজ্ঞাসা করা হলে নাবালিকার পরিবারের প্রতি ক্ষোভ উগড়ে দেন তিনি। এমনকী, পরিবারটিকে গ্রামছাড়া করার কথাও তোলেন। গোটা ঘটনায় এখনও পর্যন্ত থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি আক্রান্তের পরিবার।