Advertisement
Advertisement
ক্রীড়া শিক্ষকের মৃত্যু

ঘরবন্দি জীবনে মর্মান্তিক পরিণতি! ছাদে ব্যাডমিন্টন খেলতে গিয়ে পড়ে মৃত্যু ক্রীড়া শিক্ষকের

পড়ে গিয়ে তাঁর ফুসফুসে আঘাত লাগে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

Retired sports teacher in Bankura dies of falling the the roof
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:April 10, 2020 5:51 pm
  • Updated:April 10, 2020 5:54 pm

টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: সারাটা জীবন খেলার মধ্যে ছিলেন। জীবন থেকে বিদায়ও নিলেন খেলতে খেলতেই। তবে অতর্কিতে, দুর্ঘটনায়। লকডাউনে ঘরবন্দি অবস্থায় ব্যাডমিন্টন খেলার সময়ে দোতলার ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু হল ক্রীড়া শিক্ষকের। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর শহরের গোপেশ্বর পল্লির এই মর্মান্তিক ঘটনা যেন স্তব্ধ করে দিয়ে গেল গোটা এলাকাকে। এই সংকটের সময় শোকে প্রায় পাথর হয়ে যাওয়া পরিবারের সদস্যদের পাশে গিয়ে দাঁড়ানোর উপায়ও নেই কাছের মানুষদের। কারণ, করোনা। কারণ, লকডাউন। কারণ, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার দায়িত্ব।

BNK-Teacher-Death
নিহত দুলালচন্দ্র দে

বিষ্ণুপুর শহরের গোপেশ্বর পল্লির বাসিন্দা বছর বাষট্টির দুলালচন্দ্র দে। ক্রীড়া শিক্ষক হিসেবে কুশদ্বীপ মাখনলাল বিদ্যামন্দিরে চাকরি করতেন। বছর দুই আগে অবসর নেন। কিন্তু তারপরও খেলা অর্থাৎ শরীরচর্চায় ছেদ পড়েনি। প্রতিদিন সকাল-বিকেল নিয়ম করে মাঠে গিয়ে শরীরচর্চা করতেন। শরীর ফিট রাখতে খেলতেন ব্যাডমিন্টন। দুলালবাবু খেলা এবং শরীরচর্চার সঙ্গী ছিলেন তাঁর স্ত্রী, প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা কাঞ্চন দে। লকডাউনের আগে পর্যন্ত মাঠে ছিল তাঁদের অবাধ বিচরণ।

Advertisement

[আরও পডুন: রেশনে বরাদ্দের তুলনায় মিলছে কম সামগ্রী! পঞ্চায়েত সদস্যকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ উন্মত্ত জনতার]

কিন্তু মার্চের মাঝামাঝি থেকে করোনার দাপট বাড়ল এদেশে। সোশ্যাল ডিসট্যান্স নিয়ে লাগাতার প্রচার, জনতা কারফিউয়ের পর ২৫ মার্চ থেকে টানা একুশ দিনের লকডাউন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তারপর থেকে দৈনন্দিন জীবনে কিছুটা বদল হলেও, দুলালবাবুর শরীরচর্চায় ছেদ পড়েনি। মাঠের বদলে তিনি বিকেলে ছাদে ব্যাডমিন্টন খেলতেন স্ত্রীর সঙ্গে। এছাড়া এই ঘরবন্দি দশাতেও সকলে যাতে শরীর চর্চায় মন দেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই সচেতনতা প্রচারও করতেন এই ক্রীড়া শিক্ষক। তবে এসবের মাঝে বৃহস্পতিবার ঘটে গেল মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। খেলতে খেলতে আচমকাই তিনি দোতলার ছাদ থেকে পড়ে যান। গুরুতর জখম অবস্থায় বিষ্ণুপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতে দুর্গাপুরের হাসপাতালে তাঁকে রেফার করা হয়। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পথে রাস্তায় মৃত্যু হয় দুলালবাবুর।

Advertisement

[আরও পডুন: সংক্রমণ ঠেকাতে অভিনব পন্থা, লোহার খাঁচা পরে রাস্তায় যুবক]

চোখের সামনে এমন ঘটনা দেখে স্তম্ভিত হয়ে যান স্ত্রী কাঞ্চনদেবী। প্রথমে কোনও কথাই বলতে পারছিলেন না। দুলালবাবুর প্রতিবেশী মাধবী চট্টোপাধ্যায় জানান, “বিকেল পাঁচটা নাগাদ আমরা সকলে যে যার ছাদে উঠে গল্প করছিলাম। করোনা, লকডাউন – এসব নিয়েই কথা হচ্ছিল। হঠাৎ একটা তীব্র শব্দ কানে আসায় ঘুরে দেখি, দুলালবাবু ছাদ থেকে মাটিতে পড়ে গেলেন। দেখলাম, তাঁর মাথা দিয়ে গলগল করে রক্ত ঝরছে, হাতে ব্যাডমিন্টনের ব়্যাকেটটি ধরা। আমরা সঙ্গে সঙ্গে ছুটে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করি।” চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তিনি পড়ে যাওয়ার পর কার্নিশে এবং পাশের পাঁচিলে ধাক্কা খেয়ে, মুখ থুবড়ে কংক্রিটের উঠোনে পড়ে যান। তাঁর ফুসফুস ফেটে গিয়েছে বলে জানান চিকিৎসকরা। ঘটনার তদন্তে নেমেছে বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ। প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ