অর্ণব আইচ: বক্সিং চ্যাম্পিয়ন ছিল আর জি কাণ্ডের দোষী সঞ্জয় রায়। তাই শক্ত ডান হাত দিয়েই নির্যাতিতার মুখ চেপে ধরেছিল। টিপেছিল গলাও। আদালতের নির্দেশের কপির ভিত্তিতে প্রকাশ্যে এমনই তথ্য।
আর জি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় সঞ্জয় রায় যে একাই দোষী, তা আগেই স্পষ্টই জানিয়ে দিয়েছে আদালত। তার স্বপক্ষে যুক্তিও দিয়েছে। এদিকে সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে রায়দানের পরও নির্যাতিতার পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় যে, আরও তদন্তের প্রয়োজন। সঞ্জয় একা নয়, এর পিছনে রয়েছে আরও অনেকে। কিন্তু শিয়ালদহ আদালতের এডিজে (১) আদালতের বিচারক তাঁর নির্দেশে তুলে ধরেছেন যে, সঞ্জয় রায় একাই খুন করেছে। নির্যাতিতার ধর্ষণ তথা যৌন অত্যাচারের পিছনে রয়েছে সে একাই। বৈদ্যুতিক প্রমাণ ও জৈবিক প্রমাণ তুলে ধরা হয়েছে এর সাপেক্ষে। আদালতে বিচারপর্বে খুন ও ধর্ষণের দায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সঞ্জয় রায়ের সামনে নথি তুলে ধরে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, ২০০৪ সালে সঞ্জয় দক্ষিণ কলকাতার একটি নামী বক্সিং ক্লাব আয়োজিত বক্সিং প্রতিযোগিতায় রানার্স আপ, চ্যাম্পিয়ন হয় কি না। উত্তরে সঞ্জয় আদালতকে জানিয়েছিল, সে বক্সিং-এর চ্যাম্পিয়ন ছিল। সে একজন ডানহাতি।
সিবিআই আদালতকে আগেই জানিয়েছিল যে, ডানহাতে একসময় প্রতিনিয়ত বক্সিংয়ের অভ্যাস করা সঞ্জয় রায় ছিল যথেষ্ট শক্তিশালী। তার হাতও ছিল যথেষ্ট শক্ত। নির্দেশের কপিতে আদালত জানিয়েছে, সঞ্জয়ের আইনজীবী আদালতে জানান, যে আঘাতগুলি নির্যাতিতার দেহে পাওয়া যায়, তাতে তাঁদের ধারনা, এটা একজনের কাজ নয়। অনেকজন মিলে তাঁকে মারধর করেছে। তখন সিবিআইয়ের আইনজীবী আদালতে সওয়াল করেন যে, ধর্ষণ ও খুনের পিছনে সঞ্জয় একাই রয়েছে। ফরেনসিক ও চিকিৎসকদের নিয়ে সিবিআইয়ের সুপারিশে তৈরি বিশেষজ্ঞ টিম এমআইএমবি তার সপক্ষেই আদালতকে জানিয়েছিল। দু’পক্ষের সওয়ালের পর আদালতের বক্তব্য, ময়নাতদন্তের চিকিৎসকদের মতে, নির্যাতিতা বাধা দেওয়ার ফলে তাঁর মুখ, নাক ও গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আঘাতগুলি করা হয়েছে শক্ত ও সবল ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলিতে। বাইরে থেকে তা বোঝা না গেলেও দেহের অভ্যন্তরে এই আঘাতের ফলে রক্ত বেরিয়েছে তার প্রমাণ মিলেছে। একটি ছবি তুলে ধরে ময়নাতদন্তের চিকিৎসক দেখিয়েছেন যে, নির্যাতিতার মুখ ও গলায় একাধিক আঙুলের নখের দাগ রয়েছে। এটি সম্ভব যখন কোনও একজন ব্যক্তি তার ডান হাত দিয়ে গলা ও মুখ টিপে ধরে। ফলে, একজন ব্যক্তি এই খুনের ঘটনার পিছনে ছিল। বিশেষজ্ঞ টিম এমআইএমবি-র এক কর্তাও এই বিষয়টির সপক্ষে সাক্ষ্য দেন। আদালত জানিয়েছে, নির্যাতিতা এক ব্যক্তির দ্বারাই আক্রান্ত হন। ওই ব্যক্তি তথা সঞ্জয় রায় তাঁর গলা টিপে ও শ্বাসরোধ করে খুন করে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.