রাজকুমার কর্মকার, আলিপুরদুয়ার: বাইসন, হাতির পর এবার গন্ডার! ফের জঙ্গলে সঙ্গিনী দখলের লড়াইয়ের বলি বন্যপ্রাণ। শনিবার সকালে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের হলং বিটের জঙ্গলে মৃত্যু হল একটি পূর্ণবয়স্ক গন্ডারের। বনকর্মীরা মৃতদেহটি দেখতে পেয়ে সেখানেই ময়নাতদন্ত করেন। প্রাথমিক তদন্তে বনকর্তাদের অনুমান, সঙ্গিনী দখলের লড়াইয়ে হেরেই পুর্ণবয়স্ক পুরুষ গন্ডারটির মৃত্যু হয়েছে।
জলদাপাড়ার ডিএফও কুমার বিমল বলেন, “মৃত গন্ডারের সারা শরীরে অন্য গন্ডারের খড়গের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সারা শরীরে ক্ষতচিহ্ন। যদিও মৃত গন্ডারটির খর্গ অক্ষত রয়েছে। এর থেকেই প্রমাণিত, ঘটনায় চোরা শিকারিদের কোনও হাত নেই। বরং আমরা একপ্রকার নিশ্চিত, নিজেদের মধ্যে লড়াইয়েই এই গন্ডারের মৃত্যু হয়েছে। মৃত গন্ডারের ময়নাতদন্ত হয়েছে। রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর কারণ আরও স্পষ্ট করে জানা যাবে।”
চলতি সপ্তাহেই বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের পূর্ব বিভাগের জঙ্গলে সঙ্গিনী দখলের লড়াইয়ে একটি পুর্ণবয়স্ক বাইসনের মৃত্যু হয়। শুক্রবার সকালে জলদাপাড়ার কোদালবস্তির জঙ্গলে জলদাপাড়ার ত্রাস লেজ কাটা দাঁতাল হাতি বাঁয়া গনেশের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। বাঁয়া গণেশের মৃত্যুও সঙ্গিনী দখলের লড়াইয়ের জেরেই হয়েছে বলে জানিয়েছে বন দফতর। তার একদিন পরই ফের একই কারণে গন্ডারের মৃত্যুতে উদ্বেগ বেড়েছে বন কর্তাদের। জঙ্গলে সঙ্গিনী দখলের লড়াইয়ে এই রকম বন্যপ্রাণীর মৃত্যু কীভাবে আটকানো যায়, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই ভাবনা-চিন্তা শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে ২৫০টির বেশি গন্ডার রয়েছে। বনকর্তারা জানিয়েছেন, তিনটি স্ত্রী গন্ডার পিছু একটি পুরুষ গন্ডার থাকলে সেই বনভূমি গন্ডারের বিচরণের জন্য আদর্শ হিসাবে ধরা হয়। কিন্তু জলদাপাড়ার জঙ্গলে এই অনুপাতের চেয়ে অনেক বেশি সংখ্যায় পুরুষ গন্ডার থাকায় মাঝেমধ্যেই সঙ্গিনী দখলের লড়াই হয়। এই গন্ডারটির ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.