প্রতীকী ছবি।
বাবুল হক, মালদহ: সন্তানসম্ভবাকে নিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে গিয়েছিল পরিবার। সেখানে প্রয়োজনীয় ওষুধ, পরিকাঠামো ছিল না বলে অভিযোগ। সিজারের সময় ভয়ানক ঘটনার সম্মুখীন হতে হয় ওই তরুণীকে! অভিযোগ, সিজারের সময় তাঁর হাত-পা বেঁধে রাখা হয়েছিল। পরে তিনি মারা যান। ওই তরুণী একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। সেই সন্তানও মারা গিয়েছে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে, মালদহের কালিয়াচকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। মৃত ওই তরুণীর নাম ফুলটুসি খাতুন(২৪)। ঘটনা জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বিভিন্ন মহলে। মালদহের জেলাশাসক ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
জানা গিয়েছে, ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জ মির্জাপুরের বাসিন্দা ওই তরুণী ফুলটুসি খাতুন সন্তানসম্ভবা ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর প্রসবযন্ত্রণা ওঠে। তাঁর স্বামী ফুলটুসিকে অ্যাম্বুল্যান্স করে মালদহ নিয়ে এসেছিলেন। অভিযোগ, সেসময় অ্যাম্বুল্যান্সচালক তাঁদের ভুল বুঝিয়ে মালদহ মেডিক্যালে না গিয়ে ওই হাসপাতালে নিয়ে যায়। একপ্রকার বাধ্য হয়ে তড়িঘড়ি সেখানেই তাঁকে ভর্তি করানো হয়। অভিযোগ, ওই হাসপাতালে কোনও পরিকাঠামো নেই। ওষুধপত্রও সেখানে নেই বলে অভিযোগ পরিবারের। ফুলটুসি খাতুনকে সিজারের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযোগ, সেখানে ওই তরুণীর হাত-পা বেঁধে ফেলা হয়। তারপর অস্ত্রোপচার হয়েছিল। সিজারের পরে এক পুত্র সন্তানের জন্ম হয়েছিল। কিন্তু সন্তান রাখার পরিকাঠামো নেই বলেও অভিযোগ।
এই পরিস্থিতিতে ওই তরুণীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। রাতের দিকেই ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরিবারকে সদ্যোজাতকে মালদহ মেডিক্যালে ভর্তি করাতে বলে। সদ্যোজাতকে নিয়ে যাওয়া হয় জেলা হাসপাতালে। ভোর পাঁচটা নাগাদ ওই সদ্যোজাতকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে ওই বেসরকারি হাসপাতালে ফিরে এসেছিলেন পরিবারের সদস্যরা। অভিযোগ, দেখা যায় ওই তরুণীর মৃত্যু হয়েছে। অভিযোগ, সেসময়ও ওই তরুণীর হাত-পা বাঁধা ছিল। শনিবার সকালে সদ্যোজাতও মারা যায় বলে খবর। এরপরেই পরিবারের সদস্যরা ওই বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন।
ঘটনা জানাজানি হতেই বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে। প্রসূতির হাত-পা বেঁধে কীভাবে ডাক্তাররা সিজার করতে পারে? পরে কেন তাঁকে বেঁধে রাখা হল? সেসব প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। মা ও সদ্যোজাতের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে বলে খবর। ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত করে কঠোর আইনি পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক নিতীন সিংহানিয়া। ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরও। যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.