সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের মারণ সেলফির বলি তাজা প্রাণ। বন্ধুকে বাঁচাতে গিয়ে মৃত্যু হল আরও তিন বন্ধুর। বৃহস্পতিবার সন্ধেবেলায় ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার লিলুয়ায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আপ হাওড়া-ব্যাণ্ডেল লোকালে করে বেলুড়ের দিকে যাচ্ছিলেন ৫ বন্ধু। মত্ত অবস্থায় চলন্ত ট্রেনের গেটে দাঁড়িয়ে ৫ বন্ধু সেলফি তুলছিলেন। ট্রেন লিলুয়া স্টেশন ছাড়তেই হাত ফসকে এক বন্ধুর মোবাইল ফোন পড়ে যায়। সেই ফোন তোলার জন্য চলন্ত ট্রেন থেকে ঝাঁপ দেন এক যুবক। ততক্ষণে ট্রেন বেলুড় স্টেশনে ঢুকে গিয়েছে। তখনই ট্রেন থেকে নেমে বাকিরা বন্ধুর খোঁজে লাইন ধরে দৌড়তে শুরু করেন। সেই সময় সামনে থেকে আসা হাওড়া-গোঘাটে লোকালের ধাক্কায় মৃত্যু হয় তিনজনের। গুরুতর আহত হন দু’জন। তাঁদের হাওড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এরপর পুলিশ একজনের পকেট থেকে একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে৷ সেখান থেকেই কললিস্ট ঘেঁটে পুলিশ মৃতদের পরিচয় জানতে পারে৷ মৃতদের নাম সুমিত কুমির, কাজলচন্দ্র সাহা ও চন্দন পোল্লে৷ রেল পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের বাড়ি দমদমের শ্যামনগর রোড এলাকায়৷ মৃত তিনজন ও আহত একজন বন্ধু৷ এঁরা তারকেশ্বর পুজো দিয়ে লিলুয়া হয়ে দমদম ফিরছিল৷ রেল লাইন দিয়ে ছুটতে গিয়েই বেলুড়ের আগে পটুয়াপাড়ার কাছে ট্রেনের ধাক্কা লাগে৷ পুলিশ জানতে পেরেছে সুমিতদের পাড়ার ক্লাবের কয়েকজন মিলে গিয়েছিল চৈত্রের শেষে নীলের পুজো দিতে তারকেশ্বর গিয়েছিলেন৷ সেখান থেকেই ফিরছিলেন তাঁরা৷ সুমিতদের কিছু বন্ধু এদিন সন্ধ্যায় বালি হল্ট স্টেশনে নেমে দমদম চলে যায়৷ কিন্ত্ত সুমিতরা লিলুয়ায় নামার পরিকল্পনা করে৷ কিন্তু লিলুয়ায় নামার পর ট্রেন মিস করাতেই তাঁরা পরিকল্পনা করেন লাইন ধরে দৌড়ে পরের স্টেশনে পৌঁছে যাবেন৷ আর তাতেই প্রাণ হারাতে হল তিন যুবককে৷ এই শ্যামনগর রোডে তিন যুবকের মৃত্যুর খবর পৌঁছতেই এলাকায় নামে শোকের ছায়া৷ পুলিশ মৃতদেহগুলিকে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে৷ অন্যদিকে, এদিনই প্রায় একই সময়ে একই জায়গায় স্থানীয় দু’জন চলন্ত ট্রেনকে পিছনে রেখে সেলফি তুলছিলেন৷ হঠাৎই সেই সময় শারীরিক নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পেরে ওই দুই যুবক ট্রেন ট্র্যাকের একদম কাছে চলে আসেন৷ আর সেই সময় একটি ডাউন ট্রেন এসে পড়ায় ধাক্কা লাগে দুই যুবকের৷ আহত অবস্থায় বেশকিছুক্ষণ তাঁরা রেল লাইনের ধারেই পড়েছিলেন৷ সন্ধ্যার এই ঘটনা দেখতে পেয়েই ছুটে আসেন স্থানীয়রা৷ তাঁরাই আহত দুই যুবককে জয়সওয়াল হাসপাতালে ভর্তি করেন৷