Advertisement
Advertisement

Breaking News

শামুকতলার ট্রেন দুর্ঘটনায় সাসপেন্ড চালক ও গার্ড

রেড সিগন্যালেও কেন থামল না ট্রেন, উঠছে প্রশ্ন

Shamuktala train accident: Driver and guard suspended
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:December 8, 2016 9:13 am
  • Updated:December 8, 2016 9:13 am

নিজস্ব সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: চালক কি ঘুমিয়ে পড়েছিলেন! না হলে রেড সিগন্যাল কেন দেখলেন না তিনি? শামুকতলায় ট্রেন দুর্ঘটনা-কাণ্ডে তদন্তে নেমে এই প্রশ্নটাই ঘুরেফিরে আসছে বারবার৷ কেননা, যদি ট্রেনেই চালক ঘুমিয়ে পড়েন তাহলে আরও বড়সড় বিপদ যে ঘটতে পারত তা স্বীকার করে নিচ্ছেন রেলের আধিকারিকরা৷ প্রশ্ন উঠেছে, রেড সিগন্যাল থাকার পরও ট্রেনটি সাণ্টিং ইয়ার্ডে না নিয়ে গিয়ে কেন মেন লাইন দিয়ে চালাতে শুরু করলেন ক্যাপিটাল এক্সপ্রেসের চালক৷ রেলের নিয়ম অনুযায়ী, লাল সংকেত থাকলে চালক ইয়ার্ডে ট্রেন চালালেও মেন লাইনে নিয়ে যেতে পারেন না৷ এদিকে আপ ক্যাপিটাল এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনার তদন্তে আজ, বৃহস্পতিবার দিল্লি থেকে আসছেন রেলের সেফটি কমিশনার শৈলেশকুমার পাঠক৷ কেননা, শুধু এটিই নয়৷ মালদহ থেকে শিলিগুড়ি, কোচবিহার থেকে উত্তর দিনাজপুর–এর আগে ট্রেন বেলাইনের একাধিক ঘটনা ঘটেছে৷ স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, এসবের জন্য দায়ী কে বা কারা৷ রেললাইনে ত্রূটি না কি যান্ত্রিক গোলযোগ বারবার ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার কারণ৷ তবে চালকের ভুলেও যে এধরনের ঘটনা ঘটতে পারে তার উদাহরণ মঙ্গলবার রাতে শামুকতলায় আপ ক্যাপিটাল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন সেতু থেকে নদীতে হুমড়ি খেয়ে পড়ার ঘটনা৷ এর জেরে ইঞ্জিনের পিছনের দু’টি কামরা লাইনচ্যুত হয়৷ তুবড়ে যায় সেগুলি৷ এঘটনায় দুই যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে৷ জখমের সংখ্যা অন্তত ছয়৷ ঘটনার পর তড়িঘড়ি চালক, সহচালকের পাশাপাশি গার্ডকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক প্রবণজ্যোতি শর্মা৷ বলেছেন, কেন বারবার ট্রেন বেলাইন হচ্ছে রেলের সেফটি কমিশনার তদন্ত করার পরই তা জানা যাবে৷ কেননা, চালক সিগন্যাল উপেক্ষা করলেও ট্রেন কেন বেলাইন হবে তা বুঝতে পারছেন না বিশেষজ্ঞরা৷ ঘটনার পিছনে অন্তর্ঘাতের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচেছ না রেলের একাংশ৷ আলিপুরদুয়ারের ডিআরএম সঞ্জীব কিশোর বলেন, সবকিছুই হতে পারে৷ বিষয়টি জটিল৷ এজন্যই তদন্তে আসছেন সেফটি কমিশনার৷

ট্রেনটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ার পর ইঞ্জিন সহ দুটি জেনারেল বগির সঙ্গে বাকি ১৯টি বগি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়৷ ঘটনার জেরে অন্তত সাত ঘণ্টা ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়৷ দুর্ঘটনায় মৃতরা হলেন মুন্সি নাথ (৬০) এবং মহেশ নাথ (৪০)৷ তাঁদের বাড়ি হরিয়ানায়৷ তাঁদের কাছে কোনও টিকিট ছিল না৷ আহত ছ’জনের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আলিপুরদুয়ার রেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনজন৷ তাঁরা প্রসেনজিত্‍ মণ্ডল, ইন্দ্রজিত্‍ মণ্ডল এবং শাহজমাল শেখ৷ প্রথম দু’জনের বাড়ি ডুয়ার্সের বানারহাট৷ তৃতীয়জনের বাড়ি অসমের গোয়ালপাড়ায়৷ এছাড়া আর এক মহিলা এবং এক কিশোর সহ তিনজন আহত৷ ইতিমধ্যেই রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু এই দুর্ঘটনা নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন৷ দুর্ঘটনা নিয়ে রেলের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য৷ আলিপুরদুয়ারের ডিআরএম সঞ্জীব কিশোর জানিয়েছেন, রাজেন্দ্রনগর-গুয়াহাটি আপ ক্যাপিটাল এক্সপ্রেস মঙ্গলবার রাত ন’টা পাঁচ মিনিটে শামুকতলা রোড স্টেশনে পৌঁছয়৷ ট্রেনটি ছিল চার নম্বর লাইনে৷ ওই সময় পাঁচ নম্বর লাইনে রাজধানী এক্সপ্রেস ঢোকার কথা ছিল৷ ক্যাপিটাল এক্সপ্রেসের চালক ‘রেড সিগন্যাল’ উপেক্ষা করে ট্রেনটিকে ইয়ার্ডে রাখার পরিবর্তে মেন লাইন দিয়ে চালাতে শুরু করেন৷ এতেই ট্রেনটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে৷ বেশ কয়েকজনকে আহত অবস্থায় উার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়৷ দুর্ঘটনায় দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া কামরা গ্যাসকাটার দিয়ে কেটে দুটি মৃতদেহ উদ্ধার হয়৷ দুর্ঘটনার খবর পেয়ে উত্তর-পূর্ব রেলের অতিরিক্ত জেনারেল ম্যানেজার রতনলাল ঘটনাস্থলে আসেন৷ পাঠানো হয় রিলিফ ট্রেন৷ লাইনচ্যুত দু’টি কামরার ১৫০ জন যাত্রী দুর্ঘটনাস্থলে আটকে পড়েন৷ রাতেই তাঁদের কামাখ্যা-আলিপুরদুয়ার জংশন ইণ্টারসিটি এক্সপ্রেসে আলিপুরদুয়ারে নিয়ে আসা হয়৷ ঘটনার জেরে আলিপুরদুয়ার, নিউ কোচিবহার এবং এনজেপি রুটে একাধিক জায়গায় বিভিন্ন দূরপাল্লার ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়ে৷ তিনটি ট্রেন বাতিল করা হয়৷ আটটি ট্রেনকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়৷ পরে লাইন ক্লিয়ার করে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হতে ভোর হয়ে যায়৷ ক্রেন দিয়ে তোলা হয় লাইনচ্যুত বগি৷ আহতদের চিকিৎসার জন্য পাঁচ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে রেল৷ চলতি বছর ৯ সেপ্টেম্বর শিলিগুড়িতে লাইনচ্যুত হয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে চেন্নাই এক্সপ্রেস৷

Advertisement

Advertisement

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ