Advertisement
Advertisement

নিঝুম সোনাঝুড়ির বাড়ি, প্রিয় নেতার প্রয়াণে অঘোষিত বনধ বোলপুর-শান্তিনিকেতনে

রাজনীতিবিদ নন, ছিলেন সবার কাছের মানুষ।

Shantiniketan mourns the death of Somnath Chatterjee
Published by: Kumaresh Halder
  • Posted:August 13, 2018 6:48 pm
  • Updated:August 13, 2018 6:48 pm

ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: রাজনীতিতে বামপন্থী হলেও বীরভূমের রাজনীতিতে তিনি ছিলেন সব কিছুর ঊর্ধ্বে। বোলপুর-শান্তিনিকেতনের মানুষের কাছে তিনি হয়ে উঠেছিলেন উন্নয়নের প্রতীক। সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় নয়, এলাকার বাসিন্দাদের কাছে তিনি হয়ে উঠে ছিলেন ‘সোমনাথ দা’। প্রিয় নেতার মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা বোলপুর-শান্তিনিকেতন৷ কাজের দিনেও কার্যত অঘোষিত বন্ধের চেহারা নেয় এলাকা৷ স্মৃতিতে মাল্যদানের পাশাপাশি করা হয়েছে নীরবতা পালন।

[সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে গান স্যালুটে শেষ শ্রদ্ধা জানাবে রাজ্য, ঘোষণা মমতার]

১৯৭৭ সাল থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএম সাংসদ ছিলেন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়। এরপর ১৯৮৪ সালে নির্বাচনে হেরে যান কংগ্রেস প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। ১৯৮৫ সালে বোলপুর লোকসভার উপনির্বাচনে ফের জেতেন সোমনাথবাবু। সেই থেকে টানা ২০০৯ সাল পর্যন্ত সাংসদ ছিলেন৷ ১৯৮৯ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত লোকসভায় সিপিএম সংসদীয় দলের নেতা ছিলেন৷ ২০০৪ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত লোকসভার অধ্যক্ষের পদে নির্বাচিত হন তিনি৷ পরে পার্টির বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার জন্য ২০০৮ সালে তাঁকে সিপিএম থেকে বহিষ্কার করা হয়৷ পরে তিনি বোলপুরের স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে যান৷ সোনাঝুড়ি সংলগ্ন এলাকাতে একটি হাউজিংয়ে বাড়ি কিনে বসবাস শুরু করেন৷ ২০১৭ সালের প্রথম দিকে অসুস্থ হওয়ার পর তিনি কলকাতাতেই থাকতেন৷

Advertisement

[রাজনীতির মঞ্চ ছেড়ে মহাশূন্যের ঠিকানায় সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়]

Advertisement

বোলপুর-শান্তিনিকেতনের উন্নয়নের অন্যতম কারিগর ছিলেন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়৷ তাঁর হাত ধরে বোলপুর-শান্তিনিকেতনের পরিকল্পনামাফিক উন্নয়নের জন্য গঠিত হয়ে ছিল শ্রীনিকেতন-শান্তিনিকেতন উন্নয়ন পর্ষদ। বোলপুর শহরের নিকাশি ব্যবস্থার সংস্কারের পাশাপাশি একাধিক রাস্তা তৈরি করা হয়ে ছিল৷ গড়ে উঠেছে আধুনিক প্রান্তিক টাউনশিপ৷ যা নিয়ে বিতর্ক হলেও যার সুফল ভোগ করছে বোলপুর-শান্তিনিকেতনের মানুষ। আধুনিক বোলপুর-শান্তিনিকেতনের রূপকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন, ‘‘আজ খুব দুঃখের দিন। বোলপুর-শান্তিনিকেতনের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ছিলেন সোমনাথ বাবু। আমি আমার এক জন বন্ধুকে হারালাম।’’

[সংসদীয় গণতন্ত্রকে সমৃদ্ধ করেছেন সোমনাথ, টুইটারে শোকপ্রকাশ মোদি-মমতার]

রাজনৈতিক সহকর্মী তথা কংগ্রেস নেতা সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বোলপুর-শান্তিনিকেতনের উন্নয়ন হয়েছে সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের হাত ধরে। এই উন্নয়নে আমরা সব সময় তাঁর পাশে থেকেছি৷ বিরোধ হয়েছে, কিন্তু সবটাই রাজনীতির ঊর্ধ্বে।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় বলেন, ‘‘সোমনাথ বাবুর সঙ্গে সরাসরি রাজনীতি করার সুযোগ না হলেও লোকসভা অধ্যক্ষ থাকার সময় তিনি যে ভাবে দেশের স্বার্থে দলের বিরুদ্ধে ভোট দিয়ে ছিলেন, এতে তাঁর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়ে উঠে ছিল। এট তাঁর মতো রাজনীতিবিদের পক্ষেই সম্ভব।’’

বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজকলি সেন বলেন, ‘‘সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন রাজনীতির ঊর্ধ্বে উদার মনস্ক, সজ্জন মানুষ। আমি রাজনীতির লোক না হলেও বিভিন্ন সময়ে তাঁর কাছে সাহায্য পেয়েছি। বোলপুর-শান্তিনিকেতনের যা উন্নয়ন করেছেন, সারাজীবন মানুষ তাঁকে মনে রাখবেন।’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রামচন্দ্র ডোম বলেন, ‘‘আমার রাজনৈতিক জীবনের পাশাপাশি সাংসদ হিসাবে তার সহকর্মী ছিলাম। এটা আমার জীবনের বড় পাওনা৷’’

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ