নিজস্ব সংবাদদাতা, তেহট্ট: সাম্প্রদায়িক শক্তির হাতে প্রাণনাশের আশঙ্কা। বিভিন্ন সূত্র মারফত একাধিকবার খুনের হুমকি পাচ্ছেন বলে আরএসএস, বজরং দলের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুললেন রাজ্যের সংখ্যালঘু মন্ত্রী তথা জামিয়তে-উলেমা-হিন্দের প্রধান সিদ্দিকুল্লা চৌধুরি। রবিবার নদিয়ার কালীগঞ্জের দেবগ্রামে ইমাম মুয়াজ্জিনদের জেলা সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়ে তিনি জানান, নিজের নিরাপত্তাহীনতার কথা চিঠি লিখে জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সাহায্যের আবেদন করবেন।
[পাক ম্যাচ ইস্যুতে সৌরভের বিরোধিতা, বিতর্কে বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য]
লোকসভা নির্বাচনের আগে বাংলার মাটিতে হিন্দুত্বের তাসেই নিজেদের ভিত শক্ত করতে চাইছে বিজেপি। বিভিন্ন প্রান্তে ভেদাভেদের ভিত্তিতে রাজনৈতিক লড়াইয়ের চেষ্টাও চলছে। আর ঠিক এধরনের উসকানিমূলক কাজকর্ম থেকে রাজ্যবাসীকে দূরে রাখতেই লাগাতার প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবারই সতর্কবার্তা দিয়েছেন, বাংলার মাটিতে কোনও রকম বিভেদ বরদাস্ত নয়। বরং বিভেদকামীদের ঠেকিয়ে রাখতে হবে। কোনও প্ররোচনায় পা দেওয়া যাবে না। অথচ সেই প্রশাসনেরই এক সংখ্যালঘু মন্ত্রী অভিযোগ তুলছেন, তাঁকে কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের কাছে তিনি নিরাপদ নন। দেবগ্রামের সভায় এদিন সিদ্দিকুল্লা চৌধুরির দাবি, ‘ট্রেনে বসে ওরা আলোচনা করছে, সিদ্দিকুল্লাকে গুলি করে মারব। কৃষ্ণনগর-শিয়ালদাগামী ওই ট্রেনে যাঁরা উপস্থিত ছিলেন, তাঁরা আমাকে একথা জানিয়েছেন। যারা এনিয়ে চর্চা করছে, তারা সবাই বজরং, আরএসএসের সদস্য।’ এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘ওই ট্রেনে এক মৌলানা ছিলেন। তাঁকেই বলা হয় যে তিনি যেন আমাকে এই খবর দেন এবং প্রস্তুত থাকতে বলেন। আমার ওপর এদের রাগের কারণ, আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আছি। সবাইকে বোঝাচ্ছি, বিজেপির দিকে না এগোতে, তাই ওরা এই পরিকল্পনা করেছে।’
[ভোট প্রচারে হাতিয়ার সোশ্যাল মিডিয়া, প্রচুর আইটি কর্মী নিয়োগ করল মোর্চা]
এনিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠাবেন বলে জানিয়েছেন রাজ্যে জনশিক্ষা ও গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরি। তিনি বলেন, ‘আমি প্রথমবার এধরনের অভিযোগ করছি। দু ঘন্টা আগে এই খবর পেয়ে আমি নিরাপত্তাহীনতা অনুভব করছি। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখব। নিরাপত্তা চাইব। দেশপ্রেম কারও কাছে শিখব না। স্বাধীনতার সময় আমরা দেশ রক্ষায় প্রমাণ দিয়েছি। এই দেশে আমরা থাকব। কোথাও যাব না। এখানেই মরব, এখানেই বাঁচব।’ রবিবার দেবগ্রামের সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস, বিধায়ক কল্লোল খাঁ, হাসানুজ্জামান সেখ, সংখ্যালঘু সেলের জুলফিকার আলিও। সকলকে সাক্ষী রেখেই সিদ্দিকুল্লা চৌধুরি নিজের আশঙ্কার কথা প্রকাশ করেছেন। লোকসভার আগে রাজ্যের সংখ্যালঘু মন্ত্রীর এই অভিযোগ বঙ্গ রাজনীতির উত্তাপ বাড়াবে বলেই মনে করা হচ্ছে।