দেবব্রত মণ্ডল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: স্বামীর রিভলভার দিয়েই প্রেমিককে ফাঁদে ফেলে চাপ দিয়ে খুন করিয়েছে স্ত্রী মধুমিতা। সোনারপুরের তৃণমূল শ্রমিকনেতা খুনের তদন্তে নেমে এমনটাই জানতে পেরেছে পুলিশ। প্রেমিক চন্দনকে জেরা করে রিভলভারটিরও হদিশ মিলেছে।
শুক্রবার সোনারপুরের খুড়িগাছিতে চন্দনের এক ‘পাতানো’ দিদির বাড়ি থেকে কালো রঙের প্লাস্টিকের প্যাকেটের ভিতর থেকে ওই অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়েছে। খুনে অভিযুক্ত চন্দন পুলিশকে জেরার মুখে জানিয়েছে, খুনে ব্যবহৃত রিভালভারটি নিহত শ্রমিকনেতা সমীর মিস্ত্রিরই। মাস তিনেক আগে সমীরের স্ত্রী মধুমিতার কিছু টাকা হারিয়ে যায়। সেই টাকা খুঁজতে নিজের ঘরে আলমারি ঘাঁটতে শুরু করে। বাড়িতে দু’টি আলমারির একটা ছিল সমীরের ব্যক্তিগত। তার চাবি জোগাড় করে এক সময় খুলে ফেলে মধুমিতা। ওই আলমারির পিছন দিকে জামাকাপড়ের নিচে একটা ওয়ান-শাটার রিভলভার এবং চার-পাঁচটি গুলি দেখতে পায়। প্রথমে আঁতকে উঠলেও পরে সামলে নেয়। ঠিক করে, এই অস্ত্রেই স্বামীকে ‘শিক্ষা’ দিতে হবে। কারণ, মাস কয়েক ধরেই চন্দনের সঙ্গে মেলামেশা ও ফোন করা নিয়ে সমীর নাকি মধুমিতাকে ব্যাপক গালিগালাজ ও মারধর করছিল।
[পঞ্চায়েতে ‘জয়ী’র নামে দেওয়াল লিখন তৃণমূলের, হাই কোর্টের রায়ে বাড়ল জটিলতা]
পুলিশের কাছে চন্দন দাবি করেছে, দিন কয়েক আগেই ওই রিভলভারটি নিয়ে এসে মধুমিতাই তাকে দিয়েছিল। সঙ্গে দু’টি গুলি ছিল। বলেছিল,“ডিভোর্স তো হল না। তা হলে এই অস্ত্র দিয়েই খতম করো দাও ওকে।” কিন্তু প্রথমে সমীরকে খুন করতে রাজি ছিল না বলে দাবি করেছে চন্দন। ঘটনার দিন যাদবপুর স্টেশনে দেখা হতেই কার্যত হুমকি দেয় মধুমিতা। চন্দনের দাবি, “যদি গুলি করে খুন না করি, তবে মধুমিতা বলেছিল ওর শরীর ছোঁয়া যাবে না, আর দেখা করবে না।”
প্রেমের ফাঁদে ও চাপে পড়ে শেষে খুন করতে রাজি হয়। কীভাবে দরজা খোলা রাখা হবে এবং কখন গুলি চালানো যাবে, খুনের যাবতীয় প্লট ঠিক হয় প্ল্যাটফর্মে বসেই। এমনকী, কখন সমীর খেতে বসবে, তখন কীভাবে দরজা খোলা রাখা হবে তার সময় ও পরিস্থিতি সবই মধুমিতা ঠিক করে দিয়েছিল বলে পুলিশের কাছে দাবি চন্দনের। তবে পুলিশ চন্দনের সব কথায় বিশ্বাস করছে না। কারণ, আগ্নেয়াস্ত্র সংগ্রহ এবং খুনের দায় এড়াতে নিহত সমীর ও প্রেমিকা মধুমিতার ঘাড়ে পুরো দোষ চাপিয়ে দিতে চাইছে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা। তবে সত্যিই সমীরের রিভলভার চন্দনকে দিয়েছিল কি না তা জানতে আপাতত জেল হেফাজতে থাকা মধুমিতাকেও ফের জেরা করবে পুলিশ। অন্যদিকে, সমীর আদৌ আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে বাড়িতে রেখেছিল কি না তা জানতে নিহত শ্রমিক নেতার ঘনিষ্ঠদেরও জেরা করতে পারে বারুইপুর পুলিশ জেলার স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপের গোয়েন্দারা।
[ভাগাড় আতঙ্কে হোটেলের মাংসে ভীতি, বাড়ছে মাছ-ডিম ও নিরামিষের চাহিদা]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.