Advertisement
Advertisement
Kharagpur

‘দেহ নিতে এখানে এসো’, স্ত্রীকে মেসেজের পরই রেললাইনে দক্ষিণ-পূর্ব রেলকর্তার দেহ উদ্ধারে রহস্য

খড়গপুর-মেদিনীপুর রেলশাখার রাজগ্রাম রেলগেট থেকে একটু দূরে রেললাইন থেকে উদ্ধার দেহ।

South Eastern Railway officer's body recovers from railway track of Kharagpur Medinipur Rail division । Sangbad Pratidin
Published by: Sayani Sen
  • Posted:January 21, 2024 1:09 pm
  • Updated:January 21, 2024 1:09 pm

অংশুপ্রতিম পাল, খড়গপুর: সন্ধ্যা তখন ৭টা ৩৯ মিনিট। স্ত্রী লিখিতা লাবণ্যর ফোনে এল একটি মেসেজ। যেখানে লেখা হয়েছিল ‘আমার মৃতদেহ নিতে হলে এখানে এসো।’ লোকেশন দেওয়া সেই মেসেজে। তার পরেই ফোন বন্ধ। আর তার ঘণ্টাখানেকের মধ্যে লিখিতাদেবী স্বামীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর পেলেন। সেই মৃত‌্যু ঘিরে যাবতীয় রহস্য দানা বেঁধেছে। কারণ, ওই যুবকের বাসস্থান কলকাতার চেতলার ফ্ল্যাট। কর্মস্থল গার্ডেনরিচ। অথচ শুক্রবার রাতে দ্বিখণ্ডিত মৃতদেহ পাওয়া গেল কর্মস্থল থেকে ১৪২ কিমি দূরে খড়গপুর-মেদিনীপুর রেল শাখার রাজগ্রাম রেলগেট থেকে একটু দূরে রেললাইনে। ফলে অবিভক্ত দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ের কর্মচারী সমবায় ব্যাঙ্কের ডেপুটি চিফ ম্যানেজার ইয়েরা সাস্থা স্বরূপের (৩০) মৃতদেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে।

রেল পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের বাড়ি অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমের পেনডুরথি থানার কৃষ্ণনগর এলাকায়। মাত্র এক বছর দুই মাস আগে তিনি গার্ডেনরিচে কাজে যোগদান করেন। বাড়িতে তাঁর স্ত্রী ও চার বছরের এক কন্যাসন্তান রয়েছেন। রহস্য তৈরি হয়েছে স্ত্রী থেকে শুরু করে সহকর্মীদের মনে। তিনি বাইক নিয়ে অফিস থেকে বেরিয়েছিলেন বলে জানান সহকর্মীরা ও স্ত্রী। জিআরপি মৃতের দুটি মোবাইল ফোন ও একটি হাতঘড়ি পেয়েছে। তবে খোঁজ মেলেনি বাইকের। মেদিনীপুর থেকে হাওড়াগামী একটি লোকাল ট্রেনের ধাক্কায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে খুনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না বলে জানায় পুলিশ। প্রশ্ন, বাড়ি কিংবা কর্মস্থল থেকে এত দূরে কীভাবে তিনি পৌঁছলেন। আর এত দূরে এসে আত্মহত্যা করলেন কেন। তবে ঘটনার আগে শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা ৩৯ মিনিটে এই আধিকারিক নিজের ফোন থেকে স্ত্রীকে রাজগ্রাম এলাকার লোকেশন দেখিয়ে একটি মেসেজ করেন। যেখানে ইংরেজিতে লেখা ছিল ‘আমার মৃতদেহ নিতে হলে এখানে এসো।’

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘ভগবান বিচার করবেন’, ইডি হেফাজত শেষে জেলে যাওয়ার পথে বললেন শংকর]

জানা গিয়েছে, শুক্রবার দুপুর দুটোয় মধ্যাহ্ন বিরতির সময় অফিস থেকে বাইক নিয়ে বেরিয়ে যান এই আধিকারিক। তিনি চিফ ম্যানেজার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলে যান ব্যাঙ্কে যাচ্ছেন। তারপর থেকে আর ফেরেননি অফিসে। এদিকে অফিস থেকে বেরনোর আগে তিনি স্ত্রীর সঙ্গে শেষ কথা বলেন। মৃতের সহকর্মী কৃষ্ণেন্দু পাল খড়গপুর পৌঁছন। তিনি বলেন, ‘‘অফিস থেকে বেরনোর সময় তাঁর টেবিলের ল্যাপটপ খোলা অবস্থায় ছিল। ফলে সকলেই ভেবেছিলেন, কোনও কাজে হয়ত বেরিয়েছেন। সময় মতো চলে আসবেন। কিন্তু অফিস টাইম শেষ হওয়ায় শুরু হয় খোঁজখবর নেওয়া। তার মধ্যেই সন্ধ্যা ৭টা ৩৯ মিনিটে স্ত্রীর ফোনে ওরকম একটি মেসেজ পৌঁছনোর পর সকলেই চিন্তিত হয়ে পড়েন। পরে রাতে মৃত‌্যুর খবর মেলে।’’ মৃতের স্ত্রী লিখিতা লাবণ্য জানালেন, তাঁর পারিবারিক কোনও সমস‌্যা ছিল না। মৃতের বাবা ইয়েরি নাগরাজু-সহ সকলেই ঘটনায় রহস‌্য আছে বলে দাবি করেছেন। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, খড়গপুরে অন্ধ্রপ্রদেশের অনেক মানুষ থাকেন। তাঁদের কারও সঙ্গে ওই যুবকের যোগাযোগ ছিল। সেই কারণেই তিনি খড়গপুরে এসেছিলেন।

Advertisement

[আরও পড়ুন: জ্বলছে মণিপুর! ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে’ মায়ানমার সীমান্ত সিল করছে কেন্দ্র]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ