দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: বেআইনি অনলাইন লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত গ্যাংয়ের মাস্টারমাইন্ডকে ধরতে বিহার যাচ্ছে চন্দননগর কমিশনারেটের (Chandannagar Police Ciommissionarate) বিশেষ তদন্তকারী দল। ইতিমধ্যে চক্রের তিন সদস্যকে নিষিদ্ধ মাদক পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ ছাড়াও হুগলির বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে নিষিদ্ধ মাদক পাচারের সঙ্গে যুক্ত। বৃহস্পতিবার ধৃতদের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে চুঁচুড়া আদালত।
পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় ধৃতরা জানিয়েছে গরিব মানুষের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ভাড়া করে রাতারাতি লক্ষ লক্ষ টাকা ভিন রাজ্যে লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত তারা। শুধু মাদক পাচার নয়, গরিব মানুষের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে তাদের থেকে পাশবই ও এটিএম কার্ডের স্বত্ব হাতিয়ে নিত মাসিক ৬ থেকে ৮ হাজার টাকা ভাড়ার বিনিময়ে। তারপর চন্দননগরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকের সেই অ্যাকাউন্টগুলি থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা বিহারের পাটনায় ট্রান্সফার হয়ে যেত। এর পিছনে একটা বড় চক্র রয়েছে যার মাস্টারমাইন্ড রয়েছে এখনও বিহারে বলে পুলিশের অনুমান। পুলিশ সেই মাস্টারমাইন্ডের খোঁজ শুরু করেছে।
[আরও পড়ুন: করোনার বলি ইন্দাসের বিধায়ক গুরুপদ মেটে, টুইটে শোকপ্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী]
প্রায় আট মাস আগে চন্দননগরের ওই রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকের প্রতারকরা গরিব মানুষকে দিয়ে KYC জমা করে একাধিক অ্যাকাউন্ট খোলাত মাসিক ভাড়ার বিনিময়ে। তারপর গত দু, চার মাস যাবৎ ওই অ্যাকাউন্টগুলিতে প্রায়শই লক্ষ লক্ষ টাকা জমা পড়ছিল। তা আবার নিমেষের মধ্যে তোলা হয়ে যাচ্ছিল বিহারের পাটনার অ্যাকাউন্ট থেকে। ইতিমধ্যে অনলাইনে এই লেনদেনের পরিমাণ কয়েক কোটির অঙ্ক ছাড়িয়েছে বলে অনুমান। এই লক্ষ লক্ষ টাকা লেনদেনের বিষয়ে ব্যাংক ম্যানেজারের সন্দেহ হওয়ায় তিনি চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীরকে বিষয়টি জানান। এরপরই ওই অ্যাকাউন্টের সূত্র ধরে সন্দেহভাজন তিন ব্যক্তিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ।
[আরও পড়ুন: ঝালদার তুলিনে ভরা হাটে খুন সিভিক ভলান্টিয়ার, মোটিভ নিয়ে ধন্দে পুলিশ]
জানা যায়, শুধু অনলাইন বেআইনি লেনদেন নয়, এরা মাদক পাচারের সঙ্গেও যুক্ত। পুলিশ সূত্রে খবর, মাদক পাচারের পাশাপাশি এই গ্যাংটি অনলাইন এই অবৈধ লেনদেন করে থাকে, যার জাল ছড়িয়ে আছে গোটা হুগলিতে। আর মাস্টারমাইন্ড বসে আছে বিহারের পাটনায়। বিহারের এই গ্যাংয়ের বহু সদস্যই ব্যান্ডেল থেকে উত্তরপাড়া পর্যন্ত ছড়িয়ে রয়েছে।
গোটা গ্যাংটাকে ধরার জন্য ইতিমধ্যেই চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিশের পক্ষ থেকে দু’টি টিম করা হয়েছে। একটি টিম হুগলিজুড়ে তল্লাশি চালাবে। আর একটি স্পেশ্যাল টিম ভিন রাজ্যের মাস্টারমাইন্ড ও তার সাঙ্গোপাঙ্গোদের খোঁজ করবে। খুব শীঘ্রই বিহারের উদ্দেশ্যে পুলিশের এই স্পেশ্যাল টিম রওনা দেবে বলে জানা গিয়েছে। গ্যাংয়ের পাণ্ডা এবং সব সদস্যকে জালে এনে চক্র ভেঙে দেওয়াই এখন মূল লক্ষ্য চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের।