নন্দন দত্ত: শিব জ্ঞানে জীবসেবা। সেই সেবার টানে বেলুড় থেকে সুদূর সিউড়ির আদিবাসী পাড়ায় ছুটে এলেন একদল ছাত্র। যাঁরা বিনোদনের খরচ বাঁচিয়ে, টিফিনের টাকা তুলে রেখে আদিবাসী পাড়ায় কিছু উপহার তুলে দিলেন। বিষয়টা সামান্য হলেও তাঁদের উদ্দেশ্য দেখে মোহিত রামকৃষ্ণ মিশনের স্বামীজিরা। তাঁরাও ছাত্রদের টানে বেলুড় থেকে বৃহস্পতিবার সকালে সিউড়ির চন্দনপুর, গজালপুর গ্রামে এসে কাটালেন সারাটাদিন।
[ বৃদ্ধের সৎকারে একজোট হিন্দু-মুসলিম, নদিয়ায় সম্প্রীতির ছবি ]
২০১৩ সাল। বেলুড়ে বিবেকানন্দ চর্চা শুরু করেন মিশনের কিছু ছাত্র। পড়তে পড়তে তাঁদের মনে হয় স্বামী বিবেকানন্দ মানুষের সেবার মাধ্যমে তাঁদেরই পুজো করতে চেয়েছিলেন। তাই বছরের একটা সময়ে তাঁরা বেরিয়ে পড়েন নিরন্ন মানুষের সঙ্গে সারা দিন কাটিয়ে তাদের পাশে দাঁড়াতে। সেই সূত্রে বেলুড়ের বিবেকানন্দ ওয়ার্ক রামকৃষ্ণ বিদ্যাসাগর কলেজের ২৩ জন ছাত্র এসেছিলেন চন্দনপুরে। তাঁদের সমীক্ষায় সিউড়ির এই আদিবাসী পাড়ায় আরও কিছু সাহায্য প্রয়োজন। চন্দনপুর, গজালপুর প্রাথমিক স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের তাঁরা ৫০টির বেশি সোয়েটার উপহার দিলেন। গ্রামবাসীদের দিলেন কম্বল। তাঁদের সঙ্গে আসা স্বামীজি মহাবিদ্যানন্দ মহারাজ বলেন, “বিবেকানন্দর আদর্শকে বুকে নিয়ে এভাবে মানবপুজোর আয়োজনই আমাকেও ওঁদের সঙ্গে টেনে এনেছে। সমাজে যেখানে শুধুই আমিত্ব, স্বার্থপরতা, অহংকার, সেখানে একদল এই ছাত্রের বুকেই বেঁচে আছেন স্বামিজী। এরাই ভবিষ্যৎ ভারতের প্রেরণা।”
[ সরস্বতী পুজোর বিসর্জন ঘিরে উত্তাল কেতুগ্রাম, বাড়ি ভাঙচুর-আগুন ]
বেলুড় থেকে আসা ছাত্রদলের কেউ এখন স্নাতক, কেউ বা আবার স্নাতোকোত্তর স্তরে পড়ছেন। কেউ কেউ প্রাক্তনী হয়ে পড়েছেন। চারজনের সেই উদ্যোগে এখন দল বেঁধে ২৩ জন ছাত্র। তাঁদের একজন দিব্যেন্দু মণ্ডল বলেন, “আমরা মধ্যমগ্রাম থেকে আমাদের সাধ্যমতো টাকায় উপহার দেওয়া শুরু করেছিলাম। এটা আমাদের অষ্টম প্রয়াস। আমরা দান বলি না। মানুষকে সেবার মাধ্যমে উপহার দিই।” ছাত্রদের এই অবদানে গ্রামের বীরভূমের মানব কল্যাণ সমিতি গোটা গ্রামে ভোজনের উদ্যোগ নেয়। দুপুরে সকলের সঙ্গে খাওয়ার পাশাপাশি বিবেকানন্দের সেবার কথা ও ভবিষ্যৎ সমৃদ্ধ ভারত গড়ার কথা বলে ছাত্রদল।
ছবি: বাসুদেব ঘোষ
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.