এই বাড়িতেই এসেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। নিজস্ব চিত্র
সুবীর দাস, কল্যাণী: নদিয়ার হরিণঘাটার জমিদার ছিলেন সর্বেশ্বর সিংহ। তাঁর বাড়িতেই গিয়েছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। কেবল গিয়েছিলেন, বলাও ভুল। ওই বাড়িতে বেশ কিছুদিন ছিলেনও স্বামীজি। ‘স্বামীজীর পদচিহ্ন’ হিসেবে নামকরণ করাও হয় ওই বাড়ির। সেই ঘটনারও একশো বছর পেরিয়ে গিয়েছে। সময়ের ভারে ওই জমিদার বাড়ির রোশনাই কমে গিয়েছে। জরাজীর্ন হয়েছে সেই বাড়ি। স্বামীজির স্মৃতিকে ধরে রাখতেই ওই বাড়িকে সংস্কার করার ভাবনায় হরিণঘাটা পুরসভা।
ওই বাড়ির বংশধর বিষদ বসুর কন্যা কাঞ্চনমালা পালিত জানান, সম্ভবত তাঁদের ঠাকুমা মৃণালিনী সিংহের আহ্বানে স্বামীজি ওই বাড়িতে গিয়েছিলেন। স্বামী বিবেকানন্দ ১৯০২ সালের মে মাসে ট্রেনে করে কাঁচরাপাড়া নামেন। সেখান থেকে গরুরগাড়ি চেপে বড়জাগুলির সিংহবাড়িতে যান। স্বামীজীর সঙ্গে ছিলেন স্বামী নির্ভয়ানন্দ এবং তাঁর দাদু। ওই বাড়িতেই সপ্তাহখানেক ছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। বাড়ির প্রবেশদ্বারের বাঁদিকের একটি বড় ঘরে তাঁর থাকার ব্যবস্থা হয়েছিল।
জানা যায়, ওই সময় তিনি পার্শ্ববর্তী পুকুরটিতে ছোট ছেলেমেয়েদের নিয়ে একটি সাঁতার প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিলেন। তিনি থাকাকালীন নিয়মিত ওই পুকুরে স্নান করতেন, সাঁতারও কেটেছিলেন বলে কথিত আছে। শতবর্ষপ্রাচীন ওই বাড়ির এখন ভগ্নদশা। বহু জায়গায় পলেস্তরা খসে গিয়েছে। বহু জায়গায় বড় গাছও রয়েছে। শোনা যায়, বেলুড় মঠ থেকেও এটিকে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। বাড়িটির মালিকানায় শরিকি সমস্যা থাকায় সেই কাজ আর হয়নি।
রবিবার স্বামী বিবেকানন্দের ১৬৩ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ওই বাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়। স্বামীজির ছবিতে মাল্যদান করা হয়। একটি ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন করে হরিণঘাটা পুরসভা। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হরিণঘাটা পৌরসভার পৌরপ্রধান দেবাশীষ বসু, উপব পৌর প্রধান সঞ্জীব রাম, হরিণঘাটা শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি উত্তম সাহা, হরিণঘাটা পৌরসভার একাধিক কাউন্সিলর ও বিশিষ্টজনেরা। ওই পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। বর্তমান উত্তরাধিকারীরা সহমত হলে পুরসভার পক্ষ থেকে লোই বাড়ি সংস্কার করা হবে। হেরিটেজ হিসেবে পর্যটন ক্ষেত্রে সেদিকে সামনে আনা হবে। এই কথাও জানানো হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.