সৈকত মাইতি, তমলুক: সাতসকালে ধানের খেত থেকে ছাত্রীর নগ্ন দেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়াল তমলুকে। অভিযোগ, অপহৃত ছাত্রীকে ধর্ষণের পর খুন করা হয়েছে। শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে তমলুকের চিয়াড়া গ্রামে। গ্রাম লাগোয়া চাষের জমি থেকেই উদ্ধার হয় মৃতদেহটি। স্থানীয়রা রোজকার মতো সকালে কাজে যাচ্ছিলেন। তখনই দুর্গন্ধের সূত্র ধরে ধানখেতে উঁকি দিয়ে দেখেন একটি দেহ পড়ে আছে। ভাল করে দেখেই তাঁরা বুঝতে পারেন এলাকার নিখোঁজ নাবালিকার মৃতদেহ পড়ে আছে। সঙ্গে সঙ্গেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। মৃতের বাড়িতেও খবর দেওয়া হয়। খবর যায় স্থানীয় থানায়। তবে খবর পেয়েও ঘটনাস্থলে ঢুকতে পারেনি পুলিশ। গ্রামের মেয়ের এহেন মৃত্যুর ঘটনায় যথাযথ তদন্তের আর্জি জানিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয়রা। বেশ কিছুক্ষণ মৃতদেহ আটকে রেখে হলদিয়া মেচেদা রাজ্যসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ চলে। পুলিশ তদন্তের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ উঠে যায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বুধবার বিকেলে বাড়ি থেকে শাক তুলতে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে যায় বছর ১৪-র নাবালিকা। স্থানীয় সিন্ধুরানি বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী সে। কয়েকঘণ্টা কেটে গেলেও বাড়ির একমাত্র মেয়ে না ফেরায় সবাই চিন্তিত হয়ে পড়েন। শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। তবে কোনওভাবেই মেয়ের খোঁজ না মেলায় পুলিশেও অভিযোগ দায়ের করা হয়। তবে চারদিন হয়ে গেলেও কোথাও নাবালিকার কোনও সন্ধান মিলছিল না। স্বাভাবিকভাবেই চিন্তায় নাওয়া খাওয়া ছেড়ে দিয়েছিলেন পরিবারের সদস্যরা। এক মেয়ে ও শিশুপুত্র নিয়ে সুখের সংসার পরিবারের। পরিবারের কর্তা স্থানীয় বাজারের মিষ্টির দোকানের কর্মী। পাড়ায়ও শান্তশিষ্ট মেয়ের সুনাম ছিল। আচমকা শাক তুলতে বেরিয়ে সেই মেয়ের নিখোঁজের ঘটনায় প্রতিবেশীরাও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন।
এদিন ওই বাড়ির কাছের মাঠ থেকেই দুর্গন্ধ বেরতে থাকে। তাতে কেউ খুব একটা গা করেননি। তবে সেই প্রিয় মেয়ের দেহ উদ্ধারের পরেই খেপে ওঠেন এলাকাবাসী। পুলিশ কুকুর নিয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন বাসিন্দারা। প্রতিবেশীদের অভিযোগ, ধর্ষণ করেই ওই নাবালিকাকে খুন করা হয়েছে। দোষীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবিতে শুরু হয় বিক্ষোভ অবরোধ। এই প্রসঙ্গে তমলুকের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সুরজিৎ মণ্ডল বলেন, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
ছবি: রঞ্জন মাইতি
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.