বিপ্লবচন্দ্র দত্ত: নদিয়ার শান্তিপুরের চৌধুরিপাড়ার বিষমদ কাণ্ডে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা৷ শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী বিষমদে মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের৷ পেটে ব্যথা, বমির উপসর্গ নিয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি অন্তত ২৫ জন৷ অসুস্থদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গিয়েছে৷ অসুস্থদের শুশ্রূষায় আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে শান্তিপুর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ৷
[বেঙ্গল সাফারি পার্কের চিতাবাঘকে দত্তক, অভিভাবক পেল ‘নয়ন’]
বিষমদ কাণ্ডে মৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যেই সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন৷ গোটা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার নির্দেশও দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র৷ সিআইডির পাশাপাশি আবগারি দপ্তরও তদন্ত শুরু করেছে। মৃত দশজনের পরিবারকে দুই লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করছে রাজ্য৷ জেলাশাসককে দ্রুত অর্থসাহায্য পরিবারের সদস্যদের হাতে পৌঁছে দিতে বলা হয়েছে৷ রানাঘাট রেঞ্জের ডেপুটি আবগারি কালেক্টর, শান্তিপুরের আবগারির ওসি, প্রাক্তন ওসি ছাড়াও ওই দপ্তরের আটজন কনস্টেবলকে সাসপেন্ড করেছে নবান্ন৷ ক্লোজ করা হয়েছে শান্তিপুর থানার ওসি সৌরভ চট্টোপাধ্যায়কে৷ ঘটনায় চার জনকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ৷ আরও দুই অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ৷
[খাবারের খোঁজে হাসপাতালের হেঁশেলে হাতির হানা, সাবাড় রোগীদের পথ্য]
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফোনে রাজ্যের অর্থ ও আবগারি মন্ত্রী অমিত মিত্রকে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দেন৷ অর্থমন্ত্রীর আশঙ্কা, বিহার ও ঝাড়খণ্ড থেকে মূলত কোনও জিনিসের আড়ালে করে বিষমদ পাচার করা হচ্ছে এ রাজ্যে। এমন রিপোর্ট কয়েকদিন ধরেই পেয়েছে রাজ্য। তবে শান্তিপুরের মৃত্যুর কারণ দেশি মদ না চোলাই মদ, তা তদন্তসাপেক্ষ। মগরাহাটের সংগ্রামপুরে চোলাই মদের বলি ছিলেন শতাধিক। স্থানীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার বিকেলে শান্তিপুর থানার নৃসিংহপুরের একটি চোলাই মদের ঠেক থেকে মদ খেয়েই এই কাণ্ড ঘটেছে। নৃসিংহপুরের চৌধুরিপাড়ায় এই চোলাইয়ের ঠেকটি চলত। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গঙ্গার ওপার থেকে নৌকায় করে এপারের ঠেকে পৌঁছায় চোলাই মদ৷
[ডেলোর আকাশে বন্ধ প্যারাগ্লাইডিংয়ের উড়ান, হতাশ পর্যটকরা]
আশপাশের ইটভাটা ও খেতের শ্রমিকরা এদিন বিকেলে সেই ঠেক থেকে মদ খান বলে দাবি স্থানীয়দের। সন্ধ্যা নামতেই প্রতিক্রিয়া শুরু হয় বিষমদের৷ চৌধুরিপাড়া এলাকার বেশ কয়েকজন বাসিন্দার প্রায় একইসঙ্গে পেটব্যথা ও বমি শুরু হয়৷ প্রত্যেকের গায়ে জ্বালা হচ্ছিল৷ খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিশ বাহিনী৷ যান প্রশাসনের আধিকারিকরাও৷ বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত শান্তিপুর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ২১ জন। পুলিশ চোলাইয়ের ঠেকগুলিতে অভিযান শুরু করেছে। জেলা পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার বুধবার রাতে জানান, চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মূল অভিযুক্ত চন্দন মাহাতো ওরফে গুলবার ও তার ভাই লক্ষ্মী রাতে কল্যাণীর হাসপাতালে মারা যায়। অন্য এক মৃত ভুটোন মাহাতোর ভাই চন্দন ও লক্ষ্মী-সহ মোট ছ’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ৷