Advertisement
Advertisement

রাম নবমীর শোভাযাত্রায় মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চাপানউতোর পুরুলিয়ায়

তৃণমূল-বিজেপি চাপানউতোর তুঙ্গে।

Tension in Purulia over Ram Navami rally
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:March 26, 2018 1:54 pm
  • Updated:July 20, 2019 4:16 pm

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া:  রাম নবমীতে এক ব্যক্তির মৃত্যুকে ঘিরে তৃণমূল-বিজেপি চাপানউতোর তুঙ্গে পুরুলিয়ায়। শাসকদলের দাবি, মৃত ব্যক্তি তাদের দলের কর্মী ছিলেন। অন্যদিকে বিজেপির দাবি,  রাম নবমীর মিছিল আটকেছিলেন তৃণমূল কর্মীরাই। তা নিয়ে অশান্তিতেই ওই ব্যক্তির প্রাণ গিয়েছে। তবে এই ঘটনা নিয়ে গেরুয়া শিবিরের তরফে প্রকাশ্যে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি।  ঘটনায়  উত্তেজনা ছড়িয়েছে পুরুলিয়া আরষা ব্লকের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত বেলডি গ্রামে। পরিস্থিতি রীতিমতো থমথমে। স্থানীয় একটি প্রাথমিক স্কুলে বসেছে পুলিশ ক্যাম্প। দু’পক্ষের ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। যদিও রাম নবমীর মিছিলকে কেন্দ্র করে অশান্তিতে প্রাণহানির কথা স্বীকার করেনি পুরুলিয়া জেলা পুলিশ।

রবিবার, রাম নবমী উপলক্ষে পুরুলিয়ার আরষা ব্লকের বেলডি গ্রামে একটি শোভাযাত্রা বের করেছিল বজরং দল।  অভিযোগ, মাঝপথে শোভাযাত্রার পথ আটকায় অপর গোষ্ঠীর লোকেরা।  এই নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে তুমুল বাগ-বিতণ্ডা হয়। শেষপর্যন্ত, শোভাযাত্রা আর এগোতে পারেনি। যেখান থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয়েছিল, সেখানে ফিরে যাচ্ছিলেন বজরং দলের সদস্যরা।কিন্তু, তাতেও সংঘর্ষ এড়ানো যায়নি।  অভিযোগ, শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের উপর চড়াও হন অপর গোষ্ঠীর লোকেরা।  বেশ কয়েকটি  বাড়ি ও দোকানে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। ঘটনাস্থলে গিয়ে আক্রমণের মুখে পড়ে পুলিশও।  সংঘর্ষে  ৪ জন পুলিশকর্মী-সহ  ২ গোষ্ঠীরও বেশ কয়েজন আহত হন। সকলকেই স্থানীয় শিরকাবাদ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে একজন মারা যান বলে জানা গিয়েছে।  সূত্রের খবর, মৃতের নাম শেখ শাহজাহান।  ঘটনায় দু’পক্ষের ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আতঙ্কিত বেলডি গ্রামের বাসিন্দারা। এলাকার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পুলিশ ক্যাম্প বসেছে।রবিবার রাতেই সাংবাদিক সম্মেলনে করে তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব জানিয়েছে, মৃত ব্যক্তি তাদের দলের কর্মী ছিলেন। ঘটনা নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খোলেনি বিজেপি।  তবে সূত্রের খবর, গেরুয়া শিবিরের নেতাদের দাবি, বেলডিতে রাম নবমীর শোভাযাত্রায় বাঁধা দিয়েছিলেন শাসকদলের কর্মী-সমর্থকরাই।  তাঁরাই গণ্ডগোল পাকিয়েছেন।  তাতেই প্রাণ গিয়েছে ওই ব্যক্তির।

Advertisement

[রামের নামে অস্ত্র মিছিল, কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে রাজ্য প্রশাসন]

তবে মৃত্যু তো দূর অস্ত, আরষার বেলডি গ্রামে রাম নবমী শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে কথাও মানতে নারাজ পুরুলিয়া জেলা পুলিশ। গোটা ঘটনার দায় বজরং দলের উপর চাপিয়েছেন পুলিশ সুপার জয় বিশ্বাস। তিনি জানিয়েছেন,  মিছিলে বাধা দিতে গেলেই পুলিশের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বজরং দলের সদস্যরা। শাহজাহান-সহ আরও বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী পুলিশ ও বজরং সদস্যদের মাঝখানে পড়ে যায়। তাঁর মাথায় গুরুতর চোট লাগে। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রবিবার দুপুরে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। বেলডিতে মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী।

Advertisement

বস্তত,  রবিবার রামনবমী মিছিলে বজরং দলের সদস্যরা নাবালকদের হাতেও অস্ত্র তুলে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। এই অভিযোগের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিয়েছেন রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান অনন্যা চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, ‘নাবালকদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়ার চেয়ে ঘৃণ্য কাজ আর কিছু হতে পারে না। আমরা ইতিমধ্যেই জেলাশাসক ও পুলিশ আধিকারিকদের জানিয়েছি, অবিলম্বে দোষীদের চিহ্নিত করে কড়া শাস্তি দিতে হবে।’ রাজ্য সরকারও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বেশ কিছু সংবেদনশীল এলাকায় মিছিলের ভিডিও তুলে রেখেছে পুলিশ। সেই ভিডিও দেখে দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়া হবে।

[প্রশাসনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে পুরুলিয়ায় রাম নবমীর মিছিলে অস্ত্র হাতে নাবালকরা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ