Advertisement
Advertisement

Breaking News

দূষণ

বাতাসে মিশেছে প্রচুর বিষাক্ত গ্যাস, তীব্র বিস্ফোরণে প্রবল দূষণের আশঙ্কা

বিস্ফোরণের তীব্রতা ডিনামাইট ফাটার সঙ্গে তুলনীয়, মত বিজ্ঞানী মহলের একাংশের।

The blast is not ordinary, pollution errupts, say scientists
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:January 9, 2020 7:16 pm
  • Updated:January 10, 2020 11:03 am

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অবিকল যেন হিরোশিমার পুনরাবৃত্তি! নৈহাটির রামঘাটে বাজি নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে আচমকা বিস্ফোরণে দাউদাউ করে জ্বলে ওঠার ছবিটা মনে করিয়ে দিচ্ছে অভিশপ্ত হিরোশিমা, নাগাসাকির পরমাণু বোমা ফাটানোর কথা। ধোঁয়ার বড়সড় কুণ্ডলী আকাশে মিলিয়ে যাচ্ছে, সেইসঙ্গে বিস্ফোরণের তীব্র শব্দদানব কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছে চারপাশের একটা বড় পরিসরে। গঙ্গার এপাড়ের বিস্ফোরণে ছাদের চাল উড়ে, দেওয়ালে ফাটল ধরে ওপাড়ের অনেক বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত। যে প্রভাব ভূমিকম্পের চেয়ে বিশেষ কম নয় বলে টের পেয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে বিশেষজ্ঞ দল বলছেন, এ ধরনের বিস্ফোরণে বাতাসে প্রচুর ক্ষতিকারক রাসায়নিক গ্যাস মিশেছে। ফলে পরিবেশ দূষণের প্রবল আশঙ্কা।

ছোটখাটো বাজি পোড়ানো হোক কিংবা বড় ধরনের কোনও বিস্ফোরণ মানেই পরিবেশের অনেকটা ক্ষতি। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের দাবি, দেবক গ্রাম থেকে প্রচুর পরিমাণ বাজি বাজেয়াপ্ত করার পর সেগুলি নিষ্ক্রিয়করণের কাজ চলছিল। সেসময়ই এই দুর্ঘটনা ঘটে। তবে বিস্ফোরণের ধরন দেখে একটা বিষয় স্পষ্ট যে তা নিছকই বাজি ছিল না। তাতে ভরা ছিল মারাত্মক কিছু বিস্ফোরক। যা নিষ্ক্রিয় করতে প্রয়োজন বাড়তি সতর্কতা। কিন্তু স্থানীয়দের অভিযোগ, যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন না করেই নিষ্ক্রিয়করণের কাজ চলে, তাই এমন বড় দুর্ঘটনা। এই অভিযোগ উড়িয়ে দেননি পুলিশের বড় কর্তারাও। এমনকী তাঁরা নিজেরাই এই অবৈজ্ঞানিকভাবে বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয়করণের কাজের জন্য যথেষ্ট ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

Advertisement

[আরও পড়ুন: বাজির আড়ালে বিস্ফোরক! নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে শক্তিশালী বিস্ফোরণে কাঁপল নৈহাটি]

বৃহস্পতিবার দুপুরে বিস্ফোরণের সময়ে রাস্তায় ছিলেন চুঁচুড়ার বাসিন্দা, পরিবেশবিজ্ঞানী অর্ক চৌধুরী। তাই প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলছেন, ”আমার ধারণা, বিশাল বড় গর্ত খুঁড়ে সেখানেই বিস্ফোরকগুলিকে নিষ্ক্রিয় করার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু তার আগেই এই দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে। পরপর দুটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছি। TNT অর্থাৎ ট্রাই নাইট্রো টলুইন বা ডিনামাইট ফাটালে যে প্রভাব পড়ে, এই বিস্ফোরণের তীব্রতাও ততটাই। এর যা ঘাত-প্রতিঘাত ছিল, তা ভূমিকম্পের সমান।” যা ফেটে এমন বড় দুর্ঘটনা, তা নিছক বাজি নয় বলে তিনি নিশ্চিতভাবেই জানিয়েছেন। অর্কবাবুর  আরও বক্তব্য, সাধারণত এধরনের কোনও বস্তুর বিস্ফোরণ ঘটলে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, সোডিয়াম নাইট্রেট, ম্যাগনেসিয়াম, সালফার বাতাসে মিশে যায়। যা বেশ ক্ষতিকারক। পরে তিনি বিস্ফোরণ সংক্রান্ত বিশ্লেষণ করে জানিয়েছেন, এর জেরে উৎপাদিত শক্তির পরিমাণ কয়েক মেগাটন।

Advertisement

[আরও পড়ুন: হিমবাহ গলে ভয়ানক প্লাবন এই দশকেই, ‘ডেঞ্জার জোন’-এ কলকাতাও!]

এসব রাসায়নিক গ্যাসের প্রত্যক্ষ প্রভাব কীভাবে জীবজগতের উপর পড়ে, তাও ব্যাখ্যা করে দিয়েছেন পরিবেশবিজ্ঞানী অর্ক চৌধুরী। তাঁর কথায়, ”বাতাসে ধাতব অক্সাইড মেশার ফলে মানুষের শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে কষ্ট হবে। যে জায়গায় বিস্ফোরণ হয়েছে, সেই জমিতে বাড়তি রাসায়নিক মিশে যাবে। ফলে ফসলের বিরাট ক্ষতি হবে। এছাড়া নদীর পাড়ে বিস্ফোরণটি ঘটায় নদীর জলেও রাসায়নিক মিশেছে, যাতে ক্ষতি হবে মাছেদেরও। এছাড়া গঙ্গা থেকে জল পরিশোধনের মাধ্যমে কোথাও পানীয় হিসেবেও সরবরাহ করা হয়। সেই পানীয় জলেও প্রভাব পড়বে।” বাড়িঘর ভেঙে যাওয়া, ফাটল ধরা এবং একজনের আহত হওয়ার খবর ছাড়া এখনও পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতি বিশদে জানা না গেলেও, বিশেষজ্ঞদের ধারণা, বেশ বড়সড় প্রভাব পড়েছে গঙ্গার দু’পাড়ের দুই জায়গায়। 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ