Advertisement
Advertisement
ডাক্তার

কোলিয়ারি অঞ্চলের ‘সরকার ডাক্তার’-ই গরিবদের ‘অগ্নিশ্বর’

চিকিৎসকের ফি মাত্র ১০ থেকে ১৫ টাকা, সামর্থ্য না থাকলেও তাও দিতে হয় না।

These Doctors provide treatment on nominal fee in Asansol
Published by: Tanumoy Ghosal
  • Posted:June 17, 2019 9:02 am
  • Updated:June 17, 2019 2:10 pm

চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: রাতবিরেতে খুকখুকে কাশি, বুকে ব্যথা, গভীর রাতে ডাক্তার বাবুর বাড়িতে হাজির পাড়ার ছেলেরা। ডাক্তার বাবুও সময়ের তোয়াক্কা না করে স্টেথো আর ব্যাগ ঝুলিয়ে চললেন রোগীর বাড়ি। আপদকালীন চিকিৎসায় স্থিতিশীল হলেন রোগী। এমনকী,  রোগীর পরিবারের যদি সামর্থ্য না থাকে, তাহলে ডাক্তারবাবু ফি-ও নেন না। উলটে বিনা পয়সা ওষুধও দিয়ে দেন। শুনতে অবাক মনে হলেও, এমন ডাক্তার বাবুরা আজও আছেন।  তবে এঁরা সকলেই যে এমবিবিএস বা এফআরসিএস এমনটা কিন্তু নয়। কেউ হয়তো  ফার্মাসিস্ট, কেউ আরএমপি (অল্টারনেটিভ মেডিসিন), কেউ আবার কম্পাউন্ডার। এঁরাই খনি এলাকার আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষের চোখে ডাক্তার ‘অগ্নিশ্বর’।

[আরও পড়ুন: শেষবেলায়ও কর্তব্যে অনড়, চুরি যাওয়া ৩১টি মোবাইল ফেরালেন বনগাঁর আইসি]

ইসিএলের ডাক্তার বাসুদেব সরকার, ফার্মাসিস্ট মৃদুল সরকার, অল্টারনেটিভ মেডিসিন কাঞ্চন সরকার – গরীবের চিকিৎসা পরিষেবাতে এই তিনজন এখন অন্যতম ভরসা কোলিয়ারি অঞ্চলে। ইসিএলের সোদপুর এরিয়ার বেজডি, পাটমোহনা, ভরতচক, পাটমোহনা, চাইরাইদ, মিঠানি, আলডি, নাকরাসোতার মতো খনি অধ্যুষিত এলাকায় নেই কোনও সরকারি হেলথ সেন্টার। দশ কিলোমিটার দূরে জেলা হাসপাতালই ভরসা। এই এলাকায় রয়েছে কোলিয়ারির নিজস্ব হেলথ সেন্টার। যেখানে বসেন  ‘চিকিৎসক’রা। তাঁরাই স্থানীয় গ্রামবাসীদের চিকিৎসা পরিষেবা দিয়ে থাকেন বিনামূল্যে।

Advertisement

মিঠানি কোলিয়ারিতে আগে ছিলেন ডাক্তার বাসুদেব সরকার। বছর সাতেক আগে ঝাড়খন্ডের মুগমা অঞ্চলে বদলি হয়ে গিয়েছেন তিনি।কিন্তু এখনও কোলিয়ারি অঞ্চলে রোজই আসেন, দুঃস্থদের চিকিৎসা পরিষেবা দিয়ে আবার বাড়ি ফিরে যান। তাঁর জায়গায় বিএমপি গ্রুপে পোস্টিং পেয়েছেন ডাক্তার বিশ্বজিৎ দাস। স্রেফ খনি শ্রমিকদেরই নন, গ্রামবাসীদেরও বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা দিচ্ছেন তিনি। এমনকি গরীবদের ওষুধ পর্যন্ত বিনামূল্যে দেন। খরমবাইদ অঞ্চলে থাকেন সমীর সিং মহাপাত্র। তিনি একজন কম্পাউন্ডার। বস্তির মানুষের চিকিৎসা এখন তাঁরই হাতে।

Advertisement

ডাক্তার বিশ্বজিৎ দাস বলেন, এই অঞ্চলে ডাক্তার না থাকাতে নন ইসিএলদেরও দেখে দিতে হয়। কেউই শহরমুখো হতে চান না। তাই এই পরিষেবা দিতেই হয়। কয়লার গুড়ো থেকে ফুসফুসের সংক্রমণ, জ্বর, কিডনি, সুগার ও প্রেসারে আক্রান্ত রোগীরা এখানেই চিকিৎসার জন্য ছুটে আসেন। কাঞ্চন সরকার, মৃদুল সরকার বা সমীর মহাপাত্র বলেন, ‘আমরা দশ টাকা পনেরো টাকা ভিসিট নিয়ে চিকিৎসা পরিষেবা দিই। যাঁদের সামর্থ্য নেই তাঁদের কাছে তাও নিই না। স্যাম্পেল ওষুধগুলোও দিয়ে দিই। রাতবিরেতে ঘুমচোখে সাইকেল বা মোটরবাইক নিয়ে রোগীর বাড়িতে আমরাই ছুটে যায়। তবে কখনও রোগী পরিবারের হাতে আমরা হেনস্তার শিকার হই না।’

[ আরও পড়ুন: ‘অশরীরী’ ছেলেধরা সন্দেহে কবিরাজকে গণপিটুনি, উদ্ধারে গিয়ে আক্রান্ত পুলিশ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ